মুখের কথা নয়। এবার ফর্সা হতে চাইলে হ্যাপা পোহাতে হবে অনেক। শ্যামবর্ণ গায়ের রং আমূল বদলে ফেলে নিমেষে ঝকঝকে হতে চাইলে এ বার শুধু দোকানে গিয়ে ক্রিম কিনলেই চলবে না। ছুটতে হবে চিকিৎসকের কাছেও। কারণ চিকিৎসক অনুমতি না দিলে অর্থাৎ তিনি প্রেসক্রাইব না করলে গ্যাঁটের কড়ি খরচা করেও মিলবে না ফর্সা হওয়ার কোনও প্রসাধনী সামগ্রী।
সম্প্রতি ইন্ডিয়ান অ্যাসোশিয়ান অব ডার্মাটোলজিস্ট, ভেনেরিওলজিস্ট অ্যান্ড লেপ্রোলজিস্ট, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রককে একটি পিটিশন দিয়ে ভারতে সমস্ত রকম কর্টিকো-স্টেরয়েড নিষিদ্ধ করার কথা বলেছে। এই ধরনের স্টেরয়েড কিনতে গেলে ক্রেতাকে অবশ্যই চিকিৎসকের অনুমতি নিতে হবে।
দ্য সেন্ট্রাল ড্রাগ স্ট্যান্ডর্ড কন্ট্রোল অর্গানাইজেশন জানাচ্ছে, ভারতে কর্টিকো-স্টেরয়েডের অনিয়ন্ত্রিত বিক্রি রুখতেই এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কারণ এই ধরণের ড্রাগ অতিরিক্ত ব্যবহার শরীরের পক্ষে মারাত্মক ক্ষতিকর। এর ফলে নানারকম শারীরিক সমস্যাও দেখা দিতে পারে।
এইমসের ফার্মাকোলজি বিভাগের প্রধান ডঃ গুপ্ত জানাচ্ছেন, অনিয়ন্ত্রিতভাবে ফেয়ারনেস দ্রব্যের রমরমা বেড়েছে। অজ্ঞতার কারণে সাধারণ মানুষ না বুঝেই এই সমস্ত দ্রব্য ব্যবহার করেন। অথচ তা স্বাস্থ্যের পক্ষে চরম ক্ষতিকর।’’
ডার্মাটোলজিস্ট দীপালি ভরদ্বাজের মতে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় বিশেষত ভারতীয়রা বেশিরভাগই ফর্সা রং পছন্দ করেন। আর তাই এখানে ফেয়ারনেস ক্রিমের চাহিদাও বেশি। কিন্তু এই ধরণের ক্রিম ব্যবহার করলে ‘রোসাসিয়া’ বা লাল বর্ণ ত্বক হয়ে যেতে পারে। অনেক সময় স্থায়ীভাবে ত্বক খুব পাতলা হয়ে যায়। হাইপো-পিগমেন্টেশন, অবাঞ্ছিত লোমের আধিক্যের মতো একাধিক লক্ষণ দেখা যায়। ত্বক পাতলা হয়ে যাওয়ায় ত্বকের নীচের রক্ত নালীগুলোও স্পষ্টভাবে দেখা যায়।
ড্রাগ কন্ট্রোলার জিএন সিংহ জানাচ্ছেন, এই প্রবণতা ঠেকাতে ইতিমধ্যেই ড্রাগ অ্যান্ড কসমেটিক আইনে বেশকিছু পরিবর্তন আনা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: কেউ আপনাকে ছোট করছে? পরিস্থিতি সামলান এ ভাবে