Advertisement
E-Paper

অ্যাম্বুল্যান্স ধর্মঘটের জেরে হাসপাতালে কিশোরীর মৃত্যু

লাঠি চালিয়ে হাসপাতালে সামনে অবৈধ গাড়ি আর অ্যাম্বুল্যান্স সরিয়ে দিয়েছিল পুলিশ। প্রতিবাদে অ্যাম্বুল্যান্সের মতো জরুরি পরিষেবা বন্ধ করে দিয়ে ধর্মঘট করছিল সিটু নিয়ন্ত্রিত চালক সংগঠন। সেই জন্য মুর্শিদাবাদ জেলা হাসপাতালে ‘রেফার’ হয়েও গাড়ি পায়নি জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এক কিশোরী।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ অগস্ট ২০১৪ ০১:৩৪

লাঠি চালিয়ে হাসপাতালে সামনে অবৈধ গাড়ি আর অ্যাম্বুল্যান্স সরিয়ে দিয়েছিল পুলিশ। প্রতিবাদে অ্যাম্বুল্যান্সের মতো জরুরি পরিষেবা বন্ধ করে দিয়ে ধর্মঘট করছিল সিটু নিয়ন্ত্রিত চালক সংগঠন। সেই জন্য মুর্শিদাবাদ জেলা হাসপাতালে ‘রেফার’ হয়েও গাড়ি পায়নি জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এক কিশোরী। সময়ে চিকিৎসা না হওয়ায় শনিবার রাতে ছটফট করতে-করতে হাসপাতালেই মৃত্যু হল তার। মৃত সাহিনা খাতুন (১৬) মুর্শিদাবাদের ফরাক্কার মহেশপুরের বাসিন্দা।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার দুপুরবেলা হাসপাতালের সামনে রোগী নামানো নিয়ে এক অ্যাম্বুল্যান্স চালকের সঙ্গে বচসা বাধে স্থানীয় পুলিশকর্মীর। রঘুনাথগঞ্জের সিটু-র আহ্বায়ক শুভাশিস মুখোপাধ্যায় বলেন, “হঠাৎই স্থানীয় থানার পুলিশ এসে এক চালককে বেধড়ক মারধর করে। এর প্রতিবাদ করলে হাসপাতাল চত্বর থেকে সমস্ত অ্যাম্বুল্যান্স বের করে দেয় পুলিশ। তখন ধর্মঘট শুরু করেন চালকেরা।” পুলিশ অবশ্য জানায়, অহেতুক জরুরি বিভাগের সামনে গাড়ি রেখে অসুবিধা করছিল বলেই হাসপাতাল চত্বর থেকে সমস্ত গাড়ি সরিয়ে দেওয়া হয় এদিন। কোনও মারধরের ঘটনা ঘটেনি।

এ দিকে, শুক্রবার সকালে জ্বর ও অসহ্য পেটের যন্ত্রণা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল দশম শ্রেণির ছাত্রী সাহিনা। শনিবার বিকেলে অবস্থার অবনতি হলে তাকে বহরমপুর জেলা হাসপাতালে ‘রেফার’ করা হয়। হাসপাতালের চিকিৎসক নিরূপ বিশ্বাস জানান, গলব্লাডারে ‘ইনফেকশন’ হয়েছিল ওই কিশোরীর। সেই সঙ্গে ‘সেপ্টিসেমিয়া’। অস্ত্রোপচার করা জরুরি ছিল বলেই রেফার করা হয়েছিল। কিন্তু জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য বহু চেষ্টা করেও অ্যাম্বুল্যান্স জোগাড় করতে পারেননি তার পরিবারের লোকজন। রাত সওয়া ৮টা নাগাদ জঙ্গিপুর হাসপাতালেই মৃত্যু হয় সাহিনার। মৃতার কাকা সাবির আলির অভিযোগ, “কোনও অ্যাম্বুল্যান্সই এদিন বহরমপুরে রোগী নিয়ে যেতে রাজি হয়নি। ইউনিয়ন অফিসে গিয়ে রোগীর আশঙ্কাজনক অবস্থার কথা জানিয়ে চালকদের কাছে বারবার অনুরোধ করলেও ফল হয়নি। কাতরাতে-কাতরাতে ভাইঝির মৃত্যু হল চোখের সামনে।”

ঘটনার পরেই হাসপাতালে ক্ষোভে ফেটে পড়েন মৃতার আত্মীয় পরিজনরা। মৃতার বাবা সেন্টু শেখ বলেন, “হাসপাতালে অ্যাম্বুলেন্স হল জরুরি পরিষেবা। সেখানে ধর্মঘট কেন হবে?”

হাসপাতালের সুপার শাশ্বত মণ্ডল জানান, মাতৃযান ছাড়া হাসপাতালে সরকারি কোনও অ্যাম্বুল্যান্স নেই। তাই এই সমস্যা। তিনি বলেন, “ওই রোগীর বাড়ির লোক আমাকে ফোন করেছিল। আমি বলেছিলাম বাইরে থেকেই অ্যাম্বুল্যান্স ভাড়া করতে হবে। পরে এসডিওকে ফোন করে মাতৃযানে নিয়ে যাওয়ার বন্দোবস্ত করেছিলাম। তার আগেই কিশোরীর মৃত্যু হয়।”

সিটু-র জেলা সম্পাদক তুষার দে-র সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ধর্মঘটের কথা জানেন না বলে দাবি করেন। রাত ৯টা নাগাদ পরিস্থিতি বুঝে চাপে পড়ে ধর্মঘট প্রত্যাহারের কথা ঘোষণা করতে বাধ্য হন সিটুর আহ্বায়ক শুভাশিসবাবু।

সম্প্রতি বীরভূমের রামপুরহাট হাসপাতালে বেসরকারি অ্যাম্বুল্যান্স চালকদের ধর্মঘটের জেরে প্রায় এই ভাবেই মৃত্যু হয়েছিল এক রোগীর। সেখানেও অবৈধ পার্কিংয়ের অভিযোগে অ্যাম্বুল্যান্সগুলিকে হাসপাতাল থেকে বার করে দিয়েছিল প্রশাসন। প্রতিবাদে চালকরা ধর্মঘটে নামেন। আত্মীয়রা গাড়ি জোটাতে না পারায় মারা যান রোগী।

ambulance raghunathganj gir death
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy