রান্নায় ব্যবহৃত লবনে আয়োডিনের মাত্রা কম বলে নানা সমস্যার শিকার হচ্ছেন বাসিন্দারা। তাই সঠিক গুণের লবন ব্যবহার করা নিয়ে প্রচারাভিযান শুরু হল পুরুলিয়া জেলার ঝাড়খণ্ড সংলগ্ন কয়েকটি ব্লকে।
জেলা স্বাস্থ্য দফতরের সহায়তায় বাঘমুণ্ডির একটি সংস্থা বান্দোয়ান, বলরামপুর, বাঘমুণ্ডি-সহ কয়েকটি ব্লকে এই প্রচার শুরু করেছে। ওই সংস্থা সূত্রে জানানো হয়েছে, বাসিন্দারা সঠিক মানের লবন ব্যবহার করছেন কি না তা জানতে বছর তিনেক আগে তারা জেলার বিভিন্ন ব্লকে সমীক্ষা চালায়। সংস্থার পক্ষে সোমনাথ সিংহ রায় জািনেছেন, তাঁরা বাড়ি-বাড়ি ঘুরে, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র থেকে এবং এলাকার দোকান থেকে নুনের নমুনা সংগ্রহ করেছেন। পরীক্ষার রিপোর্ট থেকে তাঁরা জানতে পেরেছেন, এই জেলার বিশেষত পাঁচটি ব্লকের পরিস্থিতি বেশ খারাপ। ব্লকগুলি হল: বাঘমুণ্ডি, বান্দোয়ান, বলরামপুর, মানবাজার ১ ও মানবাজার ২ ব্লক।
এই ব্লকগুলির বেশির ভাগই ঝাড়খণ্ড লাগোয়া। সোমনাথবাবুর কথায়, “অন্যান্য ব্লকগুলিতে লবনের মান সর্বত্র ঠিক গুণমানের না হলেও মোটামুটি চলে যায়। কিন্তু ওই পাঁচটি ব্লকের বেশির ভাগ জায়গাতেই যে লবন ব্যবহার করছেন সাধারণ মানুষ, তাতে আয়োডিনের মাত্রা বেশ কম।” সংস্থাটির তরফে সন্দীপ পাল বলেন, “আয়োডিন যদি শৈশব থেকেই শরীরে সঠিক মাত্রায় না যায়, তাহলে মানুষ গলগণ্ড, কমবুদ্ধি, চোখের সমস্যার শিকার হন। নার্ভাস সিস্টেম ব্যাহত হবে। এমনকী গর্ভপাত অবধি হতে পারে।”
সমীক্ষায় উঠে আসা তথ্য মোতাবেক যে যে ব্লকগুলির বাসিন্দারা এখনও সঠিক মানের বা কম আয়োডিন যুক্ত লবন ব্যবহার করছেন, তাঁরা মূলত হাট থেকে বস্তাবন্দি লবন কিনছেন। ওই সংস্থার দাবি, ওইসব এলাকায় এখনও হাটে বস্তা বা প্লাস্টিকের উপরে লবন ঢেলে বিক্রি করা হয়। ওইসব এলাকার দীর্ঘদিনের রেওয়াজ। তা ছাড়া মানুষজনও সস্তায় লবন পান। কিন্তু এই ধরনের লবনেই আয়োডিনের মাত্রা কম থাকে। সঠিক মানের লবন ব্যবহারের জন্য সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতার প্রচার দরকার। সেই জন্যই তাঁরা ওই ব্লকগুলিতে প্রচার কর্মসূচি নিয়েছেন।
জেলার উপ মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অনিল দত্ত বলেন, “লবন ভিনরাজ্য থেকে ট্রেনে আসে। জেলায় যখনই লবন ঢোকে আমরা তখনই সেখানে গিয়ে লবনের নমুনা সংগ্রহ করে আয়োডিনের মাত্রা সঠিক রয়েছে কি না তা পরীক্ষা করে দেখি। তবেই সেই মাল সেখান থেকে বাজারে যেতে দেওয়া হয়। কিন্তু ঝাড়খণ্ড সীমান্ত লাগোয়া কয়েকটি ব্লকে সীমানা পার হয়ে যে লবন জেলার খোলা বাজার বা হাটে ঢুকছে, তা পরীক্ষা করা সম্ভব হয় না। তাতেই ওই সমস্যা।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy