গত ১০ দিনে এনসেফ্যালাইটিসে আক্রান্ত হয়ে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে অন্তত ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। জ্বর, বমি নিয়ে এখনও ওই হাসপাতালে ভর্তি প্রায় শতাধিক রোগী। তাঁদের চিকিৎসা চলছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান, কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, অসম, নিম্ন অসমে, উত্তর দিনাজপুর এমনকী পাহাড়ের বিভিন্ন জায়গা থেকে ওই উপসর্গ নিয়ে রোগীরা ভর্তি হয়েছেন। যাঁরা মারা গিয়েছেন তাঁরাও ওই সব এলাকার বাসিন্দা।
স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য মঙ্গলবার উত্তরকন্যায় বন্ধ চা বাগানের স্বাস্থ্য পরিষেবা নিয়ে বৈঠক করেন। তিনি এ দিন বলেন, “এখনও আমার কাছে এ ধরনের কোনও খবর নেই। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে।” এনসেফ্যালাইটিসে মারা যাওয়ার কথা বলা হলেও ঠিক কত জন ওই রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন বা ওই রোগে তাঁদের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গিয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা দরকার বলে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জানিয়েছেন। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী তথা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান গৌতম দেবও এ ব্যাপারে কিছু জানেন না। তিনি বলেন, “বিস্তারিত খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।”
উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপার অমরেন্দ্র সরকার বলেন, “অ্যাকিউট এনসেফ্যালাইটিসে আক্রান্ত হয়ে গত ১০ দিনে হাসপাতালে অন্তত ১৫ জন মারা গিয়েছেন। জ্বরে আক্রান্ত আরও অনেকের মৃত্যু হয়েছে। তাঁরাও এনসেফ্যালাইটিসে আক্রান্ত ছিল কি না, তা দেখা হচ্ছে।” উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ অনুপ রায় জানান, জ্বর বা বমির মতো উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হয়ে গত ১৫ দিনে মারা গিয়েছেন অনেকেই। তবে তাদের সকলেরই এনসেফ্যালাইটিস কি না, তা নিশ্চিত নয়। মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, গত এক মাসে ৩০০ রোগী এনসেফ্যালাইটিসের উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হয়েছেন। বর্তমানে অন্তত ১০০ জন ভর্তি রয়েছেন। তাদের অনেকেই এনসেফ্যালাইটিসে আক্রান্ত। এনসেফ্যালাইটিসের উপসর্গ নিয়ে জলপাইগুড়ি এবং কোচবিহারের বিভিন্ন প্রত্যন্ত এলাকা থেকে আসা রোগীর সংখ্যাই বেশি। বিশেষজ্ঞরা জানান, বর্ষার শুরুতে এই সময় মশা বাহিত এই রোগ ছড়ানোর আশঙ্কা থাকে। কিউলেক্স ভিনসই মশা রোগ সংক্রমণ ঘটায়। গ্রামাঞ্চলে ধান খেত, পাট খেতের জলে এই ধরনের মশা জন্মায়। রোগের উপসর্গ বলতে জ্বর, অচেতন হয়ে যাওয়া, বমি হওয়া। অনেক সময় রোগী ছটফট করতে থাকে। আবার কখনও ডায়েরিয়ার মতো-ও হয়।
দার্জিলিং জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুবীর ভৌমিক জানান, এই জেলায় কারও মৃত্যু হয়েছে কি না, তাঁর কাছে খবর নেই। তবে ওই রোগাক্রমণ প্রতিরোধের জন্য প্রতিষেধক বেরিয়েছে। তাঁরা তা দেওয়ার কাজও শুরু করেছেন। তিনি বলেন, “২০১৩ সালের শেষ থেকে জেলায় ওই রোগের প্রতিষেধক দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। এর মধ্যে শিবির করে অন্তত ৫ লক্ষ বাসিন্দাকে প্রতিষেধক দেওয়া সম্ভব হয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy