Advertisement
E-Paper

খামতি পরিষেবায়, নিত্য হয়রানি

হার্টের গুরুতর সমস্যা নিয়ে চড়িয়াল থেকে বজবজের ইএসআই হাসপাতালে এসেছিলেন অনিল ব্রহ্ম। কিন্তু হাসপাতালে কোনও হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ না থাকায় অন্য হাসপাতালে যেতে হল অনিলবাবুকে। শুধু হৃদরোগ বিশেষজ্ঞই নন, বজবজের ইএসআই হাসপাতালের ‘নেই’ তালিকাটি বেশ দীর্ঘ। স্ক্যান-এর ব্যবস্থা নেই। নেই আইসিসিইউ। মেটারনিটি ওয়ার্ড থাকলেও নেই এসএনসিইউ। নেই নিউরোলজিস্টও। অভাব রয়েছে গ্রুপ ডি কর্মীরও। এখন মাত্র ৮০ জন গ্রুপ ডি কর্মী রয়েছেন।

জয়তী রাহা

শেষ আপডেট: ২১ জুন ২০১৪ ০৩:১৭
প্রয়োজনে মেলে না পরিষেবা। ছবি: অরুণ লোধ।

প্রয়োজনে মেলে না পরিষেবা। ছবি: অরুণ লোধ।

হার্টের গুরুতর সমস্যা নিয়ে চড়িয়াল থেকে বজবজের ইএসআই হাসপাতালে এসেছিলেন অনিল ব্রহ্ম। কিন্তু হাসপাতালে কোনও হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ না থাকায় অন্য হাসপাতালে যেতে হল অনিলবাবুকে।

শুধু হৃদরোগ বিশেষজ্ঞই নন, বজবজের ইএসআই হাসপাতালের ‘নেই’ তালিকাটি বেশ দীর্ঘ। স্ক্যান-এর ব্যবস্থা নেই। নেই আইসিসিইউ। মেটারনিটি ওয়ার্ড থাকলেও নেই এসএনসিইউ। নেই নিউরোলজিস্টও। অভাব রয়েছে গ্রুপ ডি কর্মীরও। এখন মাত্র ৮০ জন গ্রুপ ডি কর্মী রয়েছেন। ২০১৬-এ এর মধ্যে বেশ কয়েক জন অবসর নেবেন। নতুন কর্মী নিয়োগ না হলে হাসপাতালের সমস্যা আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা।

বজবজ ট্রাঙ্ক রোডের ধারে ইএসআই হাসপাতালটি গড়ে ওঠে ৭০-এর দশকে। বজবজ, মহেশতলা তো বটেই, নোদাখালি, চড়িয়াল, অছিপুর, বিড়লাপুর, বাটানগর এলাকা থেকে এখানে চিকিৎসার জন্য আসেন ইএসআই তালিকাভুক্ত কর্মীরা। এ ছাড়াও এখানে দুর্ঘটনাগ্রস্তদের চিকিৎসা হয়। ৩০০ শয্যার এই হাসপাতালে চিকিৎসক ও কর্মী সংখ্যা কম থাকায় যথোপযুক্ত পরিষেবা দিতে সমস্যা হচ্ছে বলে অভিযোগ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের।

মেডিসিন, শল্য, অস্থি, স্ত্রীরোগ, চোখ, দাঁত, ইএনটি বিভাগ নিয়ে চলে বহির্বিভাগ। বছর পাঁচেক আগে হাসপাতালে ২৪ ঘণ্টার ওটি শুরু হয়েছিল। এখন সেটি সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টে পর্যন্ত চালু থাকে। অ্যানেস্থেটিস্টের অভাবেই এমন অবস্থা বলে জানাচ্ছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

হাসপাতাল চত্বরে থাকা নার্স ও চিকিৎসকদের আবাসনেরও বেহাল দশা। আবাসনের জানালার কাঁচ ভাঙা। ভেঙে পড়ছে ছাদ, দেওয়াল। দেওয়ালের গা বেয়ে গজিয়ে উঠেছে গাছ। আবাসন ও হাসপাতালের পিছনে পার্থেনিয়ামের জঙ্গল। অভিযোগ, এই গাছের জন্য শ্বাসকষ্টের রোগীদের সমস্যা হচ্ছে। অথচ সাফাই হচ্ছে না চত্বর। হাসপাতালের তরফে জানানো হয়েছে, লোকবল কম। এত বড় চত্বরের জঙ্গল কাটতে তাই সমস্যা। নিয়মিত জঙ্গল সাফাইয়ের চেষ্টা হয়। পার্থেনিয়ামের গাছও তখন কাটা হয়।

প্রায় পাঁচ বছর আগে সরকারি অর্থে হাসপাতালে তৈরি হয়েছে আধুনিক মানের রান্নাঘর। কর্মীদের একাংশের অভিযোগ, সেখানে খাবার মজুত রাখা হয়। মাটির উনুনে রান্না হয় হাসপাতাল ভবনের ঠিক বাইরে অস্থায়ী ছাউনিতে। যদিও কর্তৃপক্ষের দাবি, গ্যাস বাঁচাতে কখনও কখনও উনুন ব্যবহার করা হয়।

বজবজ ইএসআই হাসপাতালের ডেপুটি সুপার তাপস সেন বলেন, “আগে যেখানে ইমার্জেন্সি ওয়ার্ড ছিল এখন সেখানে চার শয্যার অবজারভেশন ওয়ার্ড তৈরি হচ্ছে। আইসিসিইউ, এসএনসিইউ করার অনুমোদন আসে দিল্লি থেকে। সেটি এখনও আসেনি। ২৪ ঘণ্টার ওটি চালু রাখতে হলে তিন শিফটে চিকিৎসক ও নার্স থাকতে হবে। অ্যানেস্থেটিস্ট মাত্র দু’জন। প্রয়োজন ছ’জন। নার্সিং স্টাফ মাত্র চার জন। থাকা উচিত ১০ জন। এখানে গ্রুপ ডি কর্মী রয়েছেন প্রয়োজনের তিন ভাগের এক ভাগ। এই ঘাটতির বিষয়ে ইএসআই ডিরেক্টরেটের মাধ্যমে রাজ্য শ্রম দফতরকে জানানো হয়েছে। এখনও কোনও নির্দেশ আসেনি।” রাজ্য শ্রমমন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসু বলেন, “পিএসসি-র মাধ্যমে ইএসআই হাসপাতালগুলির জন্য চিকিৎসক, নার্স, গ্রুপ ডি কর্মী ইতিমধ্যেই নির্বাচন হয়ে রয়েছে। ভোটের জন্য এত দিন আটকে ছিল। এ বার দ্রুত নিয়োগ পর্ব সম্পূর্ণ হবে।”

jayati raha esi
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy