কখনও ঘুসঘুসে জ্বর, কখনও বা শ্বাসকষ্ট চলছে সপ্তাহখানেক ধরে। কারও কারও আবার কয়েক দিন অন্তরই হচ্ছে পেটের গোলমাল। সবের জন্যই দায়ী বাড়ন্ত তাপমাত্রা।
বরাবরই গরমের দোসর হয়েছে নানা ধরনের অসুখবিসুখ। এ বারও সে সবের প্রকোপে কাহিল শহরবাসী, বিশেষ করে শিশুরা। এর সঙ্গে লড়তে ছোট ছোট কিছু বিষয় খেয়াল রাখতে পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা। তাঁদের মতে, প্রকৃতির উত্তাপ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। তবে কিছু সাবধানতা অবলম্বন করলে ঠেকানো যায় অসুখ।
পরজীবী-বিশেষজ্ঞ, চিকিৎসক অমিতাভ নন্দী জানাচ্ছেন, গরমের প্রাবল্যে জ্বর, পেট খারাপ, টাইফয়েড, মূত্রনালিতে সংক্রমণের মতো রোগের প্রকোপ বাড়ছে। তাঁর কাছে গত তিন-চার দিনে জ্বরের রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। ওই চিকিৎসক জানান, গরম থেকে সোজা শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে ঢুকে পড়া বা বাইরে থেকে ঢুকেই ঠান্ডা জল খাওয়া এ সবের ফলে গলায়, ফুসফুসে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ হচ্ছে। অতিরিক্ত গরমে শরীর শুকিয়ে গিয়ে মূত্রনালিতে সংক্রমণও বাড়ছে। ভাইরাল জ্বরে গা-হাত-পায়ে প্রবল ব্যথা তো আছেই, তা যে যথেষ্ট উদ্বেগজনক হতে পারে, সে কথাও জানাচ্ছেন অমিতাভবাবু। তাঁর কথায়, “আমার কাছে আসা এক জ্বরের রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছিল। হঠাৎ তিনি কোমায় চলে যান। পরে অবশ্য অ্যান্টি ভাইরাল ওষুধে সুস্থ হন তিনি।”
এ সব থেকে বাঁচতে অমিতাভবাবুর দাওয়াই, “গরম থেকে ঘরে ঢুকেই ঠান্ডা পানীয় খাবেন না, এসি চালাবেন না। অন্তত ১৫ মিনিট অপেক্ষা করুন। রাস্তার কাটা ফল, খাবার, বাইরের জল এড়িয়ে চলুন। বাইরে থেকে ঘরে ঢুকেই সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে ফেলুন।”
শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ সুব্রত চক্রবর্তীও জানাচ্ছেন, কলকাতায় আর্দ্রতা বেশি থাকায় ঘাম হয় বেশি। তাই তাপে কাহিল হয়ে পড়ার (হিট একজশান) সমস্যা বেশি। ঘামের সঙ্গে শরীর থেকে প্রচুর লবণ ও জল বেরিয়ে যায়। তাই জল খেতে হবে নুন মিশিয়ে। জলে নুনের মাপ ঠিক রাখতে ওরাল রিহাইড্রেশন সলিউশন কিনে খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন সুব্রতবাবু। তবে বাড়িতে নুন-জল বানাতে হলে এক চিমটির বেশি নুন দেওয়া উচিত নয়।
এই চিকিৎসকেরও বক্তব্য, বাইরের সব রকম খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। বিরিয়ানি জাতীয় খাবার, মাংস প্রবল গরমে না খাওয়াই ভাল। কারণ, এখন ঘরের যে রকম তাপমাত্রা থাকছে, তাতে ঘণ্টা তিনেকের বেশি বিরিয়ানি বা মাংস সেই তাপমাত্রায় থাকলে খারাপ হয়ে যেতে পারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy