ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের এক চিকিৎসক। হাসপাতাল সূত্রেই জানা গিয়েছে, তাঁর নাম বিদ্যুৎ বিকাশ ঘরামি। তাঁর বাড়ি কলকাতার বারুইপুরে। গত তিন দিন ধরে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালেই ভর্তি রয়েছেন অ্যানাস্থেসিওলজি বিভাগের ওই চিকিৎসক। তাঁর রক্তের এনএসওয়ান পরীক্ষায় ডেঙ্গির জীবাণু মিলেছে। রক্তের নমুনার ম্যাক-এলাইজা পরীক্ষা করা হচ্ছে। হাসপাতালের সুপার সব্যসাচী দাস জানান, প্রাথমিকভাবে ওই চিকিৎসকের রক্ত পরীক্ষায় ডেঙ্গির জীবাণু মিলেছে। তাঁর চিকিৎসা চলছে। বাড়ি কলকাতায় হওয়ায় তাঁর যাতায়াত রয়েছে। সেখান থেকেই জীবাণু নিয়ে এসেছিলেন না শিলিগুড়িতেই তিনি আক্রান্ত হয়েছেন তা স্পষ্ট নয় চিকিৎসকদের কাছে। চাকরীর সুবাদে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের কোয়ার্টারেই তিনি থাকেন।
গত বছর ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে শিলিগুড়িতে ১১ জনের মৃত্যু হয়েছিল। ওই বছর ডেঙ্গির প্রকোপের পর এ বছরও ফের ওই রোগে আক্রান্ত হতে শুরু করেছেন শহরের বাসিন্দারা। গত মঙ্গলবার শিলিগুড়ি পুরসভার তরফে শহরের ৫ নম্বর ওয়ার্ডে সন্তোষীনগর এলাকায় ডেঙ্গিতে আক্রান্ত এক ব্যক্তির বড়ির পাশেপাশের এলাকা সাফসুতরো কাজ করা হয়। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রেই জানা গিয়েছে, ওই ওয়ার্ডে যে ব্যক্তি ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হন তাঁর নাম মহম্মদ আমানত। এলাকারই একটি নার্সিংহোমে তিনি ভর্তি ছিলেন। দিন কয়েক চিকিৎসার পর ৩৫ বছরের ওই ব্যক্তি সোমবার নার্সিংহোম থেকে ছুটি পেয়ে বাড়িতে যান। কিছু দিন আগে ৪ নম্বর ওয়ার্ডের মহারাজ কলোনি এলাকার বাসিন্দা রাজেন প্রসাদ নামে আরও একজন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হন। খালপাড়ার একটি নার্সিংহোমে চিকিৎসার পর সুস্থ হলে তাকে বাড়িতে নেওয়া হয়। গত মাসেও শহরের দুটি নার্সিংহোমে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে দু’জন ভর্তি হন বলে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রেই জানা গিয়েছে। তাদের একজন সেবক রোডের একটি নার্সিংহোমে চিকিৎসার পর সুস্থ হন। অপর জনের চিকিৎসা করানো হয়েছিল শিলিগুড়ি হাসপাতালে।
শহরের একাধিক এলাকায় ডেঙ্গিতে বাসিন্দারা আক্রান্ত হচ্ছেন। অথচ রোগ প্রতিরোধে প্রচার, মশা মারতে স্প্রে করার কাজ ওয়ার্ডগুলিতে যথাযথ ভাবে করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ। পুর কমিশনার সোনম ওয়াংদি ভুটিয়া বলেন, “ডেঙ্গি আক্রান্ত এক ব্যক্তিকে নার্সিংহোমে রেখে চিকিৎসা করা হচ্ছিল। আপাতত তিনি সুস্থ হয়ে বাড়িয়ে গিয়েছেন। তাঁর বাড়ির আশেপাশের এলাকা সাফ করা হয়েছে। পুর এলাকার বাড়িগুলিতে গিয়ে প্রচারও চলছে।”
অন্য দিকে, উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে জাপানি এনসেফ্যালাইটিসে আক্রান্ত এক রোগীর এমআরআই করাতে চিকিৎসক পরামর্শ দেন। অভিযোগ, এমআরআই কেন্দ্রের যন্ত্র খারাপ থাকায় এ দিন তাঁর পরীক্ষা হয়নি। মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল লাগোয়া খাওয়াখালি এলাকার বাসিন্দা ওই রোগী শ্রীবাস কীর্তনীয়াকে গত শুক্রবার খিঁচুনি জ্বর নিয়ে ভর্তি করানো হয়। রক্ত পরীক্ষায় তার শরীরে জাপানি এনসেফ্যালাইটিসের জীবাণু মেলে। চিকিৎসকের পরামর্শে এ দিন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের এমআরআই করাতে যান। এর আগেও গত জুলাই মাসে এনসেফ্যালাইটিসের প্রকোপ দেখা দিলে অনেক রোগীদের এমআরআই করাতে পরামর্শ দিতেন চিকিৎসকেরা। সে সময়ও ৫ দিন ধরে যন্ত্র খারাপ হয়ে পড়ে থাকায় রোগীদের বিপাকে পড়তে হয়। ফের সেই সমস্যা দেখা দেওয়ায় দ্রুত যন্ত্র সারানোর দাবি উঠেছে। এমআরআই কেন্দ্র থেকে জানানো হয় দ্রুত যন্ত্র সারানোর ব্যাপারে তাঁরা চেষ্টা করছেন। মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে বর্তমানে ১০ জন এনসেফ্যালাইটিসে আক্রান্ত রোগী রয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy