মহকুমা থেকে জেলা হাসপাতালে উন্নীত হওয়ার দুই দশকেরও বেশি সময় গড়ালেও রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালে সংক্রমণ রোগীদের জন্য আইসোলেশন ওয়ার্ড তৈরি হয়নি। এই পরিস্থিতিতে গত প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে চিকেনপক্সে (জলবসন্ত) আক্রান্ত রোগীদের হাসপাতালে ভর্তি রেখে চিকিৎসা পরিষেবা দিতে পারছেন না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
হাসপাতাল সূত্রের খবর, আইসোলেশন ওয়ার্ড না থাকায় গত দু’সপ্তাহে চিকেন পক্সে আক্রান্ত ১২ জন রোগীকে সরকারিভাবে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে রেফার করে দিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তাঁদের মধ্যে কয়েকজন রোগী নানা কারণে সেখানে গিয়ে চিকিৎসা করাতে রাজি না হওয়ায় চিকিৎসকেরা তাঁদের পরিবারের লোকজনদের থেকে দূরত্ব বজায় রেখে বাড়িতে থেকে ওষুধ খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন। ঘটনাচক্রে চিকেনপক্স আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে রয়েছেন খোদ উত্তর দিনাজপুর জেলার জেলাশাসক স্মিতা পান্ডে।
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, গত ৮ ফেব্রুয়ারি তিনি চিকেন পক্সে আক্রান্ত হন। তবে তিনি অবশ্য রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালে ভর্তি হননি। প্রশাসনিক নির্দেশে হাসপাতালের চিকিৎসকেরা তাঁর সরকারি বাংলোতে গিয়েই জেলাশাসকের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে প্রয়োজনীয় ওষুধ খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। হাসপাতালে চিকেনপক্সের চিকিৎসা পরিকাঠামো না থাকায় চিকিৎসকেরা জেলাশাসককে কয়েকদিন পরিবারের লোকজনদের থেকে দূরত্ব বজায় রেখে নির্দিষ্ট কিছু ওষুধ খাওয়া ও বিশ্রামে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। গত মঙ্গলবার থেকে জেলাশাসক ছুটি নিয়ে অন্যত্র চলে গিয়েছেন। আগামী সোমবার তাঁর কাজে যোগ দেওয়ার কথা। বুধবার জেলাশাসককে বার বার ফোন করা হলেও তা বেজে গিয়েছে। অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) প্রভুদত্ত ডেভিড প্রধান বর্তমানে জেলাশাসকের দায়িত্বে রয়েছেন। তিনি বলেন, “জেলাশাসক অসুস্থতার কারণে ছুটিতে রয়েছেন। এর চাইতে আমাদের বেশি কিছু জানা নেই।”
রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সুপার সোমনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “জেলাশাসক চিকেনপক্সে আক্রান্ত হয়েছেন। তবে হাসপাতালে আইসোলেশন ওয়ার্ড না থাকায় আমরা জেলাশাসককে অন্যত্র বিশ্রামে থাকার পরামর্শ দিয়েছি।”
হাসপাতাল সূত্রের খবর, চিকিৎসকদের পরামর্শে নির্দিষ্ট কিছু ওষুধ খাওয়ার প্রায় দু’সপ্তাহ পর এই রোগ সারে। চিকেন পক্সে আক্রান্ত রোগীরা সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত দুর্বল অনুভব করেন। তাঁদের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ছোট বড় কালো ও লালচে দাগ তৈরি হয়। নিয়মিত ওষুধ খেলে সেই দাগ অবশ্য একমাসের মধ্যে মিলিয়ে যায়। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রাসবিহারী দত্ত জানান, রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের কাছে দীর্ঘদিন আগে রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালে আইসোলেশন ওয়ার্ড তৈরির প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান অমল আচার্যের দাবি, রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের একটি প্রতিনিধি দল খুব শীঘ্রই রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতাল পরিদর্শন করে আইসোলেশন ওয়ার্ড তৈরির ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy