Advertisement
E-Paper

দশ হাজার ছুঁতে পারে ইবোলা আক্রান্তের সংখ্যা

কোনও দাওয়াই নেই। প্রতিষেধক তৈরি হতেও নিদেনপক্ষে বছর দুয়েক। ইবোলা নিয়ে তাই অথৈ জলে পশ্চিম আফ্রিকার তিন দেশ গিনি, লাইবেরিয়া ও সিয়েরা লিওন। তারই মধ্যে বুধবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) জানাল, ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে ওই তিন দেশ মিলিয়ে ইবোলা-আক্রান্তের সংখ্যা দশ হাজার ছুঁয়ে ফেলতে পারে। কী ভাবে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যায়, সে জন্য গত কাল থেকে জেনিভাতে দু’দিনের সম্মেলন শুরু করেছে হু।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২৪ অক্টোবর ২০১৪ ০২:০৫

কোনও দাওয়াই নেই। প্রতিষেধক তৈরি হতেও নিদেনপক্ষে বছর দুয়েক। ইবোলা নিয়ে তাই অথৈ জলে পশ্চিম আফ্রিকার তিন দেশ গিনি, লাইবেরিয়া ও সিয়েরা লিওন। তারই মধ্যে বুধবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) জানাল, ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে ওই তিন দেশ মিলিয়ে ইবোলা-আক্রান্তের সংখ্যা দশ হাজার ছুঁয়ে ফেলতে পারে। কী ভাবে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যায়, সে জন্য গত কাল থেকে জেনিভাতে দু’দিনের সম্মেলন শুরু করেছে হু।

তা থেকে আরও জানা গিয়েছে, ইবোলার জন্য তৈরি প্রতিষেধক কানাডা থেকে ইতিমধ্যেই এসে পৌঁছেছে ‘জেনিভা ইউনিভার্সিটি হসপিটাল’-এ। তা বাদে জার্মানি, গ্যাবন ও কেনিয়ায়ও প্রতিষেধক নিয়ে গবেষণা চলছে। এই আলাদা আলাদা গবেষণার ফলাফলের মধ্যে সমন্বয় করবে হু। সংস্থাটি আরও জানিয়েছে, এই প্রতিষেধকগুলির মধ্যে অন্তত দু’টি বাঁদরের দেহে কাজ দিয়েছে। তাদের আশা, মানুষের দেহেও কাজ করবে সেগুলি। আপাতত একটাই লক্ষ্য হু-র। তা হল ২০১৫ সালের শুরুর দিকে অন্তত কিছু প্রতিষেধক আফ্রিকার ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলগুলিতে পাঠিয়ে দেওয়া। তবে গণ-প্রতিষেধকের কথা এখনও ভাবছেন না তাঁরা।

আর সে কারণেই চিন্তা আরও বেড়েছে গিনি, সিয়েরা লিওন ও লাইবেরিয়ার বাসিন্দাদের। আসলে গত কয়েক মাসে ইবোলা-সংক্রমণ ও সে কারণে মৃতের সংখ্যা যে হারে বেড়েছে, তাতে উদ্বেগের যথেষ্ট কারণ থাকছে! তার উপর বিশেষজ্ঞদের দাবি, যে সব দেশে স্বাস্থ্য পরিষেবার হাল খারাপ, সেখানে সংক্রমণের আশঙ্কা বহু গুণ বেশি। এমনিতেই ইবোলা ভাইরাস তার জিনগত বৈশিষ্ট্যের কারণে দ্রুত মানবদেহে ছড়িয়ে পড়ে। তার উপর স্বাস্থ্য পরিকাঠামো যথাযথ মানের না হলে সমস্যা যে আরও বাড়বে, সে কথা বলাই বাহুল্য।

ঠিক কী ভাবে মানবদেহে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ে?

বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, রোগটা জটিল হলেও ইবোলা ভাইরাসটি দেখতে নেহাতই সাদাসিধে। এর জিনোমটি (জেনেটিক মেটিরিয়াল) থাকে দু’টি স্তরের প্রোটিনের মধ্যে। এর সঙ্গেই আর একটি বড় প্রোটিন থাকে বৈজ্ঞানিক পরিভাষায় যার নাম ‘পলিমারেজ’। আর এর চারধারে থাকে একটি মেমব্রেন বা পর্দা। তার গায়ে সাজানো থাকে কিছু গ্লাইকোপ্রোটিন (প্রোটিন আর সুগারের মিশেল)। যত নষ্টের গোড়া এই পলিমারেজ। ভাইরাসটি একটি কোষকে আক্রমণ করার পর এই পলিমারেজের সাহায্যেই মানব শরীরে বেড়ে ওঠে। অন্য দিকে, ভাইরাসের গায়ে থাকা ওই গ্লাইকোপ্রোটিনগুলির জন্য মানুষের দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভাইরাসটির কোনও ক্ষতি করতে পারে না। এক দিন, দু’দিন এমনকী কয়েক সপ্তাহ পরেও রোগটির উপসর্গ দেখা যেতে পারে মানুষের দেহে। রক্ত নালির দেওয়াল পাতলা হয়ে যায়। রক্ত চাপ কমে যায় এবং দেহের বিভিন্ন অঙ্গ তাদের কর্মক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। বিশেষজ্ঞদের হিসেব, ইবোলা আক্রান্ত প্রায় ৭০ শতাংশ রোগীর মৃত্যু হয়।

সে কারণেই নজরদারি ব্যবস্থা আরও জোরদার করেছে আমেরিকা। সম্প্রতি মার্কিন প্রশাসন ঘোষণা করেছে, আফ্রিকার ওই তিন ইবোলা-আক্রান্ত দেশ থেকে যাঁরা আমেরিকায় আসবেন, তাঁদের প্রত্যেকের উপরই ২১ দিন নজরদারি চালানো হবে। তাঁদের প্রত্যেককে সপ্তাহে দু’বার স্থানীয় প্রশাসনের কাছে হাজিরা দিতে হবে। সেখানে তাঁদের দেহের তাপমাত্রা পরীক্ষা করা হবে। যদি কোনও যাত্রী এই নির্দেশ না মানেন, সে ক্ষেত্রে তাঁদের কাছে তখনই পৌঁছে যাবেন সরকারি কর্মীরা। আপাতত আমেরিকার ছ’টি রাজ্যে এই ব্যবস্থা চালু হচ্ছে। লক্ষ্য একটাই। কোনও মতে ইবোলা মার্কিন মুলুকে থাবা না বসাতে পারে।

দাওয়াই যখন নেই, তখন নজরদারি চালিয়ে সংক্রমণ ঠেকানোর দিকেই বেশি জোর দিচ্ছে ওবামা প্রশাসন।

WHO ebola washington crisis
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy