বিকেল হলেই শুরু হয় মশার উপদ্রব। শহর জুড়ে ইতিউতি আবর্জনার স্তূপ। শুধু তাই নয়, কয়েক পশলা বৃষ্টিতে নিকাশি নালা উপচে রাস্তায় জল চলে আসে। কোনও গ্রামীণ এলাকা নয়, এ চিত্র জলপাইগুড়ি শহরের। বাসিন্দাদের আশঙ্কা যে কোনও মুহূর্তে ছড়াতে পারে মশা, জল-বাহিত রোগ।
সমস্যার কথা স্বীকার করে নিয়ে পুর চেয়ারম্যান মোহন বসু জানান, জঞ্জাল অপসারণে নিযুক্ত পুরসভার পাঁচটি গাড়ির মধ্যে দু’টি বিকল থাকায় কিছুদিন পরিষেবা দেওয়া সম্ভব হয়নি। বৃহস্পতিবার একটি গাড়ি মেরামত করা ও একটি গাড়ি ভাড়া করা হয়। তিনি এ দিন বলেন, “শুক্রবার সকাল থেকে জঞ্জাল সাফাইয়ের কাজ শুরু হবে। এই এলাকার নিকাশি নালাগুলি সাফাই করার নির্দেশও দিয়েছি।”
পুর-কর্তার আশ্বাসে মানুষ ভরসা রাখতে পারছেন না। যুবক প্রদীপ দে বলেন, “মাসের পর মাস ‘হচ্ছে-হবে’ বলে শুনেছি। কাজ হচ্ছেটা কোথায়?” শহরে রবীন্দ্রভবনের সামনের এলাকা ডাম্পিং গ্রাউন্ডে পরিণত। আবর্জনার দুর্গন্ধে সামনের রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাওয়া দায়। একই দশা সদর বালিকা বিদ্যালয়ের সামনে। বৌবাজার সংলগ্ন এলাকা, চার নম্বর গুমটি, সেন পাড়া, রায়কতপাড়ার দিনবাজারের বিস্তীর্ণ এলাকা পচা কাদা ও আবর্জনায় ভরা। রেসকোর্স পাড়া ও মহামায়া পাড়াতে ময়লার স্তূপ। স্থানীয় বাসিন্দা পেশায় আইনজীবী রাজীব ভৌমিক বলেছেন, “মনে হয় না জেলা শহরে আছি। চার দিক অপরিচ্ছন্ন। দুর্গন্ধে রাস্তায় হাঁটা দায়। সামান্য বৃষ্টিতেই জল জমছে।”
প্রতি বছরই বর্ষার আগে পুরভার ২৫টি ওয়ার্ডের প্রতিটি নিকাশি নালা সাফাই করা হত। এ বার সেটা হয়নি। প্রতিটি নিকাশি নালা পচা জলকাদায় টইটম্বুর হয়ে মশার আঁতুড়ঘর। ১০ নম্বর ওয়ার্ডে বাসিন্দা নাট্যকর্মী অনিতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এত মশা আগে দেখিনি। ডেঙ্গি বা ম্যালেরিয়ার মতো রোগ শহরে ছড়িয়ে পড়তে পারে।”