Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

নিকাশির সমস্যায় ভাসছে হাসপাতাল

বৃষ্টির জল জমে কাদা প্যাচপ্যাচে হয়ে গিয়েছে হাওড়ার ঘুসুড়ির ‘টি এল জায়সবাল স্টেট জেনারেল হাসপাতাল’-এর জরুরি বিভাগের মূল প্রবেশ পথ। তাই বন্ধ রাখতে হয়েছে দরজা। ফলে বিকল্প রাস্তায় চলছে যাতায়াত। এক হাঁটু জল দাঁড়ানোয় অন্য কয়েকটি ঘরও বন্ধ রাখতে হচ্ছে।

জলমগ্ন চত্বর।  —নিজস্ব চিত্র

জলমগ্ন চত্বর। —নিজস্ব চিত্র

শান্তনু ঘোষ
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ জুলাই ২০১৪ ০২:৩৮
Share: Save:

বৃষ্টির জল জমে কাদা প্যাচপ্যাচে হয়ে গিয়েছে হাওড়ার ঘুসুড়ির ‘টি এল জায়সবাল স্টেট জেনারেল হাসপাতাল’-এর জরুরি বিভাগের মূল প্রবেশ পথ। তাই বন্ধ রাখতে হয়েছে দরজা। ফলে বিকল্প রাস্তায় চলছে যাতায়াত। এক হাঁটু জল দাঁড়ানোয় অন্য কয়েকটি ঘরও বন্ধ রাখতে হচ্ছে।

ফি-বর্ষায় এটাই চেনা ছবি। এর জন্য নতুন পরিষেবা চালু করতেও ইতস্তত করছেন জেলার স্বাস্থ্য কর্তারা।

হাসপাতালটি বালি ও হাওড়া পুরসভার মাঝে পড়ে। নিকাশির এই অব্যবস্থার দায় নিয়ে চলছে দুই পুরসভার টানাপড়েন। বালি পুর এলাকার নিকাশির জল এই হাসপাতালের ভিতর দিয়ে হাওড়া পুর এলাকার দিকে বেরয়। এখানেই হয়েছে সমস্যা। বালির নিকাশি ব্যবস্থার সমস্যার জন্য জল জমে যায় হাসপাতাল চত্বরে। আর সেই জল হাওড়া পুর এলাকা দিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার পথেও রয়েছে সমস্যা। হাসপাতালের সুপার বিশ্বজিৎ রায় বলেন, “হাসপাতালে ঢোকার সময়ই যদি এত জল ভাঙতে হয় তা হলে কী ভাবে রোগীরা আসবেন? ফলে মানুষের কাছে নতুন পরিষেবা পৌঁছে দিতেও সমস্যা হবে। বিষয়টি বিভিন্ন মহলে জানিয়েছি।”

হাওড়ার মেয়র তৃণমূলের রথীন চক্রবর্তী বলেন, “ওটা বালি পুরসভার মধ্যে পড়ে। তাই কিছু করার নেই। হাওড়া পুরসভার অধীন এলে ঢেলে সাজার পরিকল্পনা রয়েছে।” হাওড়ার মেয়র পারিষদ (নিকাশি) শ্যামল মিত্রের কথায়: “বালির জল ওই হাসপাতাল দিয়ে আমাদের এলাকায় আসে। তাই নিকাশির কাজ বালির করা উচিত।” এই সব বিবাদের মধ্যে যেতে রাজি নন বালির সিপিএম চেয়ারম্যান অরুণাভ লাহিড়ী। তাঁর কথায়: “কার জল কোথা দিয়ে যায়, তা কে দেখবে। বিবাদ করে লাভ নেই। হাসপাতালের উন্নয়নে সবাইকেই একসঙ্গে কাজ করতে হবে।”

জায়সবাল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও পূর্ত দফতরের কর্তারা জানান, জিটি রোড থেকে হাসপাতাল চত্বরটি অনেক নিচু। হাসপাতালের গা ঘেঁষে জিটি রোডে যে বড় নালাটি রয়েছে তার গভীরতা মাত্র দেড় থেকে দুই ফুট। যা কমপক্ষে ছ’ফুট থাকা উচিত। আবার হাসপাতালের আপৎকালীন গেটের সামনে যে কালভার্ট রয়েছে, তার নীচের সরু পাইপ দীর্ঘ দিন সাফাই না হওয়ায় বুজে গিয়েছে। ফলে বর্ষার সময় কিংবা বৃষ্টি হলেই বালির জল ওই পাইপ দিয়ে নর্দমায় পড়তে পারে না। সেই জল উপচে হাসপাতাল চত্বরে ঢুকে যায়। নিচু হওয়ায় ভেসে যায় গোটা এলাকা। সেখান থেকে আপৎকালীন বিভাগের ভিতর দিয়ে জল গিয়ে পড়ে হাওড়া এলাকায়। যেখানে রয়েছে সরু মুখের একটি পাইপ। তাতে আবর্জনা জমে গেলে জল ফিরে চলে আসে ফের হাসপাতালের ভিতর।

২৬০ শয্যার এই স্টেট জেনারেল হাসপাতালের জরুরী বিভাগ, লিফ্ট, বহির্বিভাগ, অফিস ঘর, মেডিসিন ঘর, এক্স-রে ঘর, সুপারের অফিস-সহ পুরো একতলায় এক থেকে দেড় ফুট জল জমে যায়। বর্ষার সময় অগত্যা জরুরী বিভাগ স্থানান্তর করতে হয় অন্য ঘরে। এমনকী জরুরী বিভাগে ঢোকার রাস্তা বন্ধ করে অন্য বিকল্প রাস্তার ব্যবস্থা করতে হয়েছে।

কিন্তু এতেও সমস্যা মেটে না। বাইরেও জল জমে থাকে। অ্যাম্বুলেন্স এবং অন্যান্য গাড়ি ভিতরে ঢুকতে পারে না। মুমূর্ষু রোগীকেও পাঁজাকোলে করে নিয়ে আসতে হয়। জমা জলে ঘুরে বেড়ায় সাপ। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক দেবাশিস রায় বলেন, “নিকাশি দেখার কাজ আমাদের নয়। তবে নিকাশির উন্নয়নের জন্য সংশ্লিষ্ট মহলে আবেদন করাও হয়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE