Advertisement
E-Paper

নানা প্রকল্পে কাজ শুরু, ধুলোয় জেরবার পিজি

হাসপাতালে ঢুকলে ধুলো-বালিতে চোখমুখ ভরে যাচ্ছে। কাশির দমকে বুজে আসছে গলা। কয়েক হাত অন্তর ডাঁই করা বালি, স্টোন চিপ্‌স। ধুলো ঢুকছে ওয়ার্ডের ভিতরে, ইমার্জেন্সিতেও। হাসপাতাল চত্বর জুড়ে অজস্র খোঁড়াখুঁড়ি। মুমূর্ষু রোগী নিয়ে আসা অ্যাম্বুল্যান্সও এগোতে পারছে না। চতুর্দিকে এমনই জল-কাদা যে হাঁটাচলা করতেও অসুবিধা হচ্ছে।

সোমা মুখোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৪ মার্চ ২০১৪ ০৩:২২
হাসপাতাল চত্বরে ডাঁই করে রাখা ইমারতি দ্রব্য। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক।

হাসপাতাল চত্বরে ডাঁই করে রাখা ইমারতি দ্রব্য। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক।

হাসপাতালে ঢুকলে ধুলো-বালিতে চোখমুখ ভরে যাচ্ছে। কাশির দমকে বুজে আসছে গলা। কয়েক হাত অন্তর ডাঁই করা বালি, স্টোন চিপ্‌স। ধুলো ঢুকছে ওয়ার্ডের ভিতরে, ইমার্জেন্সিতেও। হাসপাতাল চত্বর জুড়ে অজস্র খোঁড়াখুঁড়ি। মুমূর্ষু রোগী নিয়ে আসা অ্যাম্বুল্যান্সও এগোতে পারছে না। চতুর্দিকে এমনই জল-কাদা যে হাঁটাচলা করতেও অসুবিধা হচ্ছে। এই মুহূর্তে রাজ্যের সেরা সরকারি হাসপাতাল এসএসকেএম-এর ছবি এটাই। চিকিত্‌সা করাতে হাসপাতালে এসে আরও বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ার উপক্রম ঘটছে অনেকেরই।

গত ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে এসএসকেএমকে নতুন চেহারায় দেখানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন হাসপাতালের রোগীকল্যাণ সমিতির কো-চেয়ারম্যান, মন্ত্রী মদন মিত্র। নতুন চেহারা এসএসকেএম পেয়েছে ঠিকই, কিন্তু আপাতত তা শুধুই অস্বস্তিতে ভরা। হাসপাতাল-কর্তৃপক্ষ অবশ্য দাবি করছেন, বৃহত্তর স্বার্থে এই অস্বস্তিটুকু সহ্য করা ছাড়া উপায় নেই। কারণ রোগীদের স্বার্থেই হাসপাতালে এই কর্মযজ্ঞ চলছে।

কী হচ্ছে সেখানে? হাসপাতাল সূত্রে খবর, চওড়া করা হচ্ছে মূল গেট ও হাসপাতালের ভিতরের রাস্তা। চলছে রোগী প্রতীক্ষালয় গড়ার শেষ ধাপ। একই সঙ্গে চলছে ইনস্টিটিউট অব নিওনেটোলজি ভবন, ইউরো-নেফ্রো বিল্ডিং, উডবার্ন ওয়ার্ডের সামনে অ্যাকাডেমিক বিল্ডিং তৈরি। চলছে পুকুর পাড়ের সৌন্দর্যায়নের প্রকল্পও। শুরু হয়েছে ট্রমা সেন্টার তৈরির কাজও। এরই মধ্যে গোদের উপর বিষফোঁড়ার মতো বিদ্যুত্‌ প্রকল্পের জন্যও খোঁড়াখুঁড়ি শুরু হয়েছে। কারণ গোটা হাসপাতালে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুত্‌ সরবরাহের জন্য প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে তাদের।

বৃহস্পতিবার আউটডোরের সময়ে হাসপাতাল চত্বরে গিয়ে দেখা গিয়েছে, পুরোদমে কাজ চলছে। আউটডোরে আসা রোগীরা কাশছেন। হাসপাতাল চত্বরে অপেক্ষায় থাকা রোগীর আত্মীয়েরা অনেকেই মুখে কাপড় চাপা দিয়ে বসে। গর্তে পড়ে গিয়ে চোট লাগছে অনেকেরই। হাসপাতালের অধিকর্তা প্রদীপ মিত্র বলেন, “৩১ মার্চের মধ্যে সব কাজ শেষ হয়ে যাবে বলে আশা। দিনের বেলা আউটডোরের সময়ে বেশি কাজ না করে রাতে কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাতে রোগীদের অসুূবিধা কম হবে।”

প্রশ্ন হল, হাসপাতালের উন্নয়ন অবশ্যই জরুরি। কিন্তু একই সঙ্গে সমস্ত কাজ শুরু হল কেন? ধাপে ধাপে কাজ হলে রোগীদের ভোগান্তি কম হত। প্রদীপবাবুর জবাব, “আর্থিক বছর শেষ হওয়ার আগে বিভিন্ন প্রকল্পের টাকা শেষ করতে হবে। না হলে টাকা ফেরত যাবে। সাংসদ তহবিলের টাকা কখন, কী ভাবে খরচ হচ্ছে, তারও হিসেবও পেশ করতে হয়। সব মিলিয়ে তাড়াতাড়ি কাজটা শেষ করা জরুরি।” কিন্তু শেষ মুহূর্তের জন্য সব কাজ ফেলে না রেখে আগেই কেন কাজে গতি আনা হল না? কেন কর্তৃপক্ষের পরিকল্পনার অভাবের খেসারত রোগীরা দেবেন? সেই প্রশ্নের অবশ্য জবাব মেলেনি।

কী বলছে রোগীকল্যাণ সমিতি? মদন মিত্রের বক্তব্য, অসুবিধার খবর এসেছে। ইমার্জেন্সিতে সমস্যা সবচেয়ে বেশি হচ্ছিল, তাই সেখানে ভারী পর্দার ব্যবস্থা হয়েছে। আজ, শুক্রবার থেকে ইমার্জেন্সি ওয়ার্ডের সামনে বাক্স রাখা হবে। কাজের ফলে রোগীরা নিজেদের কোনও অসুবিধার কথা লিখে সেই বাক্সে ফেললে তিন দিনের মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি বলেন, “ওয়ার্ডে ধুলো যাতে না ঢোকে সে জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। সকালে কাজ বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। ধুলোর উপর জল ছিটিয়ে রাখতে বলা হয়েছে, যাতে তা না ওড়ে। যে সব জায়গায় কাজ হচ্ছে সেখানে ত্রিপল চাপা দিতেও বলেছি। আশা, দিন সাতেকের মধ্যে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসবে।”

soma mukhopadhyay pg hospital kolkata sskm hospital dust problems
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy