Advertisement
E-Paper

নতুন রূপে আমরি, শনিবার থেকে রোগী ভর্তি

সব ক’টা তলাতেই বসেছে নতুন ‘ফায়ার ডোর’। এর ফলে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় আগুন সহজে ছড়াতে পারবে না। অন্তত ঘণ্টা চারেক তো আটকানো যাবেই। সিলিং-এ কিছু দূর অন্তর ‘ফায়ার অ্যালার্ম’। কোথাও আগুনের সঙ্কেত পেলেই তা বাজতে শুরু করবে, সঙ্গে সঙ্গেই বন্ধ হয়ে যাবে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণের যাবতীয় যন্ত্র। স্বয়ংক্রিয় ভাবে সব ঘরের বিশেষ কিছু পাখাও চলতে শুরু করবে। ঘরের ধোঁয়াকে বার করে দেওয়ার জন্য সেগুলি লাগানো হয়েছে। সমস্ত ওয়ার্ডে কাচের জানলার উপরের অংশে লাগানো থাকছে বড় হাতল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ জুলাই ২০১৪ ০২:০১
রোগী ভর্তি নেওয়ার আগে জোরকদমে চলছে প্রস্তুতি। বুধবার, আমরি-তে। —নিজস্ব চিত্র।

রোগী ভর্তি নেওয়ার আগে জোরকদমে চলছে প্রস্তুতি। বুধবার, আমরি-তে। —নিজস্ব চিত্র।

সব ক’টা তলাতেই বসেছে নতুন ‘ফায়ার ডোর’। এর ফলে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় আগুন সহজে ছড়াতে পারবে না। অন্তত ঘণ্টা চারেক তো আটকানো যাবেই। সিলিং-এ কিছু দূর অন্তর ‘ফায়ার অ্যালার্ম’। কোথাও আগুনের সঙ্কেত পেলেই তা বাজতে শুরু করবে, সঙ্গে সঙ্গেই বন্ধ হয়ে যাবে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণের যাবতীয় যন্ত্র। স্বয়ংক্রিয় ভাবে সব ঘরের বিশেষ কিছু পাখাও চলতে শুরু করবে। ঘরের ধোঁয়াকে বার করে দেওয়ার জন্য সেগুলি লাগানো হয়েছে। সমস্ত ওয়ার্ডে কাচের জানলার উপরের অংশে লাগানো থাকছে বড় হাতল। যাতে প্রয়োজনে যে কেউ জানলা খুলতে পারেন। থাকছে বিশেষ ‘ফায়ার প্যানেল’ও, যাতে নিরাপত্তাকর্মীরা তাঁদের ঘরে বসেই হাসপাতালের কোন অংশে আগুন লেগেছে, তা দেখতে পান।

২০১১ সালের ৯ ডিসেম্বরের ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে অগ্নি-নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঢেলে সাজিয়েছে ঢাকুরিয়ার আমরি হাসপাতাল। আড়াই বছর বন্ধ থাকার পরে অনেকটাই নব কলেবরে সেই হাসপাতালে ফের রোগী ভর্তি শুরু হচ্ছে শনিবার থেকে। স্বাস্থ্য দফতরের হেল্থ লাইসেন্স, দমকলের ছাড়পত্র, পুরসভার লাইসেন্স পেয়ে যাওয়ার পরে বাকি ছিল শুধু দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের ছাড়পত্রটুকু। মঙ্গলবার রাতে সেটাও পেয়ে গিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তার পরেই হাসপাতাল খোলার চূড়ান্ত দিনক্ষণ স্থির হয়ে যায়। আমরি-র সিইও রূপক বড়ুয়া জানিয়েছেন, দমকল এবং ক্লিনিক্যাল এস্টাবলিশমেন্ট আইন পুঙ্খানুপুঙ্খ মেনে নতুন ভাবে সাজানো হয়েছে হাসপাতালকে।

বুধবার দুপুরে হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেল, শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি চলছে জোরকদমে। কোথাও বালি-সিমেন্টের কাজের পরে ঝাড়পোঁছ চলছে। কোনও ওয়ার্ডে শয্যা সাজিয়ে কার্ডিয়াক মনিটর, পালস অক্সিমিটারের মতো গুরুত্বপূর্ণ সরঞ্জাম গুছিয়ে রাখছেন নার্সরা। কোথাও আবার লন্ড্রি থেকে আসা কাচা চাদর, গাউন ইত্যাদির হিসেব মেলানো হচ্ছে। কর্মীরা ব্যস্ত পায়ে ছোটাছুটি করছেন এক ওয়ার্ড থেকে অন্য ওয়ার্ডে।

পাঁচ মাস আগে আমরি-র আউটডোর খোলার ছাড়পত্র দিয়েছিল স্বাস্থ্য দফতর। কিন্তু ইনডোরে রোগী ভর্তি কবে শুরু করা যাবে, তা অনিশ্চিতই ছিল। দীর্ঘ চেষ্টার পরে গত মাসের শুরুতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অ্যাপয়েন্টমেন্ট পান আমরি কর্তারা। সেই অনুযায়ী গ্রুপ সিইও রূপকবাবুকে নিয়ে নবান্নে যান ইমামি গ্রুপের যুগ্ম চেয়ারম্যান আর এস অগ্রবাল, আর এস গোয়েনকা এবং তাঁদের ছেলে আদিত্য অগ্রবাল ও মণীশ গোয়েনকা। ওই বৈঠকের পরেই মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, তিনি রিপোর্ট খতিয়ে দেখে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেবেন। ওই সাক্ষাতের সপ্তাহ ঘুরতে না ঘুরতেই দমকলের লাইসেন্স হাতে পান হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এর দশ দিনের মধ্যে হাসপাতালের দু’টি ভবনে পরিষেবা চালুর ব্যাপারে লাইসেন্স দিয়ে দেয় স্বাস্থ্য দফতর।

কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, কিছু চিকিৎসক-নার্স এবং অন্য বিভাগের কর্মী হাসপাতাল ছেড়ে গেলেও ৭০ শতাংশ কর্মী গত আড়াই বছর তাঁদের সঙ্গেই থেকে গিয়েছেন। হাসপাতাল বন্ধের পরেও তাঁদের নিয়মিত বেতন দেওয়া হয়েছে। হাসপাতাল ফের চালু হওয়ার পরে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সেই পুরনো কর্মীরাই থাকছেন।

শনিবার থেকে ঢাকুরিয়ার দু’টি ভবনে রোগী ভর্তি শুরু করে দিতে পারবেন আমরি কর্তৃপক্ষ। ওই দু’টি ভবনে মোট ২০০ জন (মূল ভবনে ১৫০ এবং তার পিছনের বাড়িটিতে ৫০ জন) রোগী ভর্তি করা যাবে। তবে ঢাকুরিয়া আমরি-র যে ভবনটিতে ২০১১ সালের ৯ ডিসেম্বর আগুন লেগে ৯১ জনের মৃত্যু হয়েছিল, সেটি খোলার ব্যাপারে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি।

amri hospital reopen
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy