বাচ্চা হচ্ছে না মানেই সমস্যাটা শুধু মেয়েটির। পুরুষের বন্ধ্যত্ব আবার হয় নাকি! যত্ত সব বাজে কথা।
৪৫ বছর হয়ে গিয়েছে মানে আর বাচ্চা হবে না। হলেও সুস্থ হবে না।
টেস্টটিউব বেবি-র শরীরে বাবা-মায়ের জিন থাকে না। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, এমন হাজারো ভ্রান্ত ধারণা ছড়িয়ে রয়েছে বন্ধ্যত্ব চিকিৎসা নিয়ে। তা সে যতই একের পর এক বন্ধ্যত্ব চিকিৎসা কেন্দ্র গড়ে উঠুক বা বন্ধ্যত্ব চিকিৎসার আধুনিক পদ্ধতি ও ওষুধ আবিষ্কার হোক না কেন। এই ভুল ধারণা দূর করতে দরকার সচেতনতা, প্রচার। শনিবার বিকেলে সায়েন্স সিটি প্রেক্ষাগৃহে কলকাতার অন্যতম বন্ধ্যত্ব চিকিৎসা কেন্দ্র ‘বার্থ’ আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে চিকিৎসকদের কথায় উঠে এল এই প্রসঙ্গই।
এই অনুষ্ঠানেই সংস্থার কর্ণধার চিকিৎসক গৌতম খাস্তগীরের নতুন বই ‘ভরুক কোল’ প্রকাশিত হল। এই বইয়ে বন্ধ্যত্ব সংক্রান্ত অসংখ্য প্রশ্ন এবং ভুল ধারণা শুধরে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন গৌতমবাবু। এ দিন তিনি বললেন, ‘‘বন্ধ্যত্ব বিষয়টা একেবারেই জটিল নয়। আর এটা যত না শরীরের রোগ তার থেকে বেশি মনের।’’ গৌতমবাবু ব্যাখ্যা করছিলেন, অনেক সময় অনেক দম্পতি চিকিৎসার জন্য বন্ধ্যত্ব চিকিৎসা কেন্দ্রে আসার পড়েই মহিলা গর্ভবতী হয়ে পড়েন। এটা কোনও ম্যাজিক নয়। আসলে জীবনধারণের পদ্ধতি, খাওয়াদাওয়া, মানসিক চাপের পরিমাণ, শারীরিক মিলনের সময় ঠিক কী রকম হবে এই ছোট্ট ছোট্ট বিষয় নিয়ে তাঁদের কাউন্সেলিং করলেই কাজ হয়। এর জন্য চিকিৎসা লাগে না।
একই কথা স্বীকার করেছেন অন্য একাধিক বন্ধ্যত্ব বিশেষজ্ঞ। চিকিৎসক সঞ্জীব মুখোপাধ্যায় যেমন বলছিলেন, ‘‘অনেকেরই ধারণা, টেস্ট টিউব বেবির জন্য একবার চেষ্টা করা মাত্র তা সফল হবে। বা টেস্ট টিউব বাচ্চারা সুস্থ হয় না। সম্পূর্ণ ভুল ধারণা এটা।’’ চিকিৎসক রঞ্জিত চক্রবর্তীর মতে, অনেকেই একটু ধৈর্য্য না-ধরে ক্রমাগত ডাক্তার বদল করে যান। এতে অধিকাংশ ক্ষেত্রে চিকিৎসা বিভ্রাট ও অর্থখরচ বাড়ে। চিকিৎসক মল্লিনাথ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অনেক রোগী পিরিয়ড স্বাভাবিক করতে হরমোন পিল খাচ্ছেন। তার মধ্যেই বন্ধ্যত্বের চিকিৎসা করাচ্ছেন! অনেকে আবার মনে করেন, পলিসিস্টিক ওভারির জন্য পিরিয়ড বন্ধ হয়ে গেলে বাচ্চা হয় না। এই সব ভুল ধারণা দূর করতে সচেতনতা দরকার।’’