বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে ও চিকিত্সা পরিষেবা সুষ্ঠ ভাবে চালাতে এ বার হাসপাতালে বসতে চলেছে সিসিটিভি। সম্প্রতি হাসপাতালের রোগীকল্যাণ সমিতির বৈঠকে ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। হাসপাতাল সূত্রের খবর, বনগাঁ উত্তর কেন্দ্রের বিধায়ক তথা মহকুমা হাসপাতালের রোগীকল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান বিশ্বজিত্ দাসের বিধায়ক তহবিলের আর্থিক সাহায্যে ক্যামেরা কেনা হবে।
বিশ্বজিত্বাবু বলেন, “প্রথম পর্যায়ে ২৬টি সিসি ক্যামেরা বসানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। হাসপাতালের পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য ইতিমধ্যেই ১০ লক্ষ টাকা দিয়েছি। ওই টাকা থেকেই ক্যামেরা কেনা হবে। ইতিমধ্যে টেন্ডারের কাজও শেষ হয়ে গিয়েছে।” ওই সভায় ছিলেন হাসপাতাল সুপার গয়ারাম নস্কর, মহকুমাশাসক সুদীপ মুখোপাধ্যায়-সহ অনেকে। চিকিত্সকদের তরফে গোপাল পোদ্দার বলেন, “এর ফলে হাসপাতালের নিরাপত্তা ঢেলে সাজানো যাবে। কর্মীদের গতিবিধির উপরে নজর রাখা যাবে। পাশাপাশি ওয়ার্ডের মধ্যে অবাঞ্ছিত লোক ঢোকাও করা যাবে।”
কয়েক মাস আগে হাসপাতালে মূল ভবনে ঢোকার মুখে রোগীকল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যানের তরফে অভিযোগ জমা দেওয়ার বাক্স বসানো হয়েছিল। হাসপাতালের পরিষেবা নিয়ে অভিযোগ থাকলে সেখানে লিখে জমা দিতে বলা হয়। এ বার সিসি ক্যামেরা বসানো হলে হাসপাতালের আভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা আরও বাড়বে বলে মনে করেন মহকুমাশাসক। তিনি বলেন, “বিধায়ক ওই প্রস্তাব দিয়েছেন। সভা তা মেনে নিয়েছে। নিরাপত্তা বাড়ার পাশাপাশি এর ফলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পরিষেবার বিষয়ে আরও সজাগ হতে পারবেন।”
দূরদূরান্ত থেকে আসা রোগী ও তাঁদের আত্মীয়েরা প্রায়ই নার্স-আয়াদের কাছ থেকে খারাপ ব্যবহার পান বলে অভিযোগ। চিকিত্সকদের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ ওঠে। অতীতে চিকিত্সায় গাফিলতিতে রোগী মৃত্যুর অভিযোগও উঠেছে বহু বার। চিকিত্সককে মারধর, ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। রাতে হাসপাতার চত্বরে নেশাসক্তদের দৌরাত্ম্য বাড়ে বলে অভিযোগ। আগে হাসপাতালে একটি পুলিশ চৌকি থাকলেও বহুকাল হল তা তুলে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু নানা সময়ে অভিযোগ উঠলেও প্রমাণের অভাবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে ব্যবস্থা নেওয়া যায় না বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের মত। বিশ্বজিত্বাবু বলেন, “এ বার থেকে সেই সমস্যা আর থাকবে না। ক্যামেরার ফুটেজ থেকে আমরা ব্যবস্থা নিতে পারব।” হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, হাসপাতাল চত্বরের প্রতিটি ওয়ার্ড গেট, জরুরি বিভাগে ক্যামেরা বসানো হচ্ছে। জরুরি বিভাগ ও ওয়ার্ডের মধ্যে চিকিত্সকদের পিছনে পিছনে কিছু যুবক ঢুকে পড়ে বলে দীর্ঘ কালের অভিযোগ। এ বার তাদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া সহজ হবে বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের আশা। রোগীর আত্মীয়েরাও এই ব্যবস্থায় খুশি। তাঁদের অনেকেরই বক্তব্য, “এর পরে যদি নার্স-আয়াদের ব্যবহার একটু ভাল হয়, সেই আশায় থাকব!”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy