Advertisement
E-Paper

মাস্ক-ই ঠুনকো, ভাইরাস ঠেকায় কে

ওষুধ এবং ভেন্টিলেটরের অভাব তো ছিলই। এ বার সোয়াইন ফ্লু থেকে বাঁচার ‘মাস্ক’ বা মুখোশের মান নিয়েও প্রশ্ন উঠল। এবং প্রশ্নটা তুলছে ওই রোগের সঙ্গে লড়াইয়ে নামা দুই হাসপাতালই। সোয়াইন ফ্লু-র রোগীর চিকিৎসা করতে গিয়ে চিকিৎসক, নার্স বা চিকিৎসাকর্মীরা যাতে আক্রান্ত না-হন, সেই জন্যই বিধানচন্দ্র রায় শিশু হাসপাতাল এবং বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে বিশেষ ধরনের ‘এন-৯৫ মাস্ক’ সরবরাহ করেছে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০৩:১০

ওষুধ এবং ভেন্টিলেটরের অভাব তো ছিলই। এ বার সোয়াইন ফ্লু থেকে বাঁচার ‘মাস্ক’ বা মুখোশের মান নিয়েও প্রশ্ন উঠল। এবং প্রশ্নটা তুলছে ওই রোগের সঙ্গে লড়াইয়ে নামা দুই হাসপাতালই।

সোয়াইন ফ্লু-র রোগীর চিকিৎসা করতে গিয়ে চিকিৎসক, নার্স বা চিকিৎসাকর্মীরা যাতে আক্রান্ত না-হন, সেই জন্যই বিধানচন্দ্র রায় শিশু হাসপাতাল এবং বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে বিশেষ ধরনের ‘এন-৯৫ মাস্ক’ সরবরাহ করেছে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর। কিন্তু অভিযোগ উঠেছে, সেই মাস্কের মান এতটাই খারাপ যে, মুখে লাগানো মাত্র টুকরো টুকরো হয়ে খুলে বেরিয়ে আসছে। ওই দুই হাসপাতালের কোথাও সেই মাস্ক ব্যবহার করা যাচ্ছে না। বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য ভবনে এক বৈঠকে ওই দুই হাসপাতালের কর্তারা এ ব্যাপারে শীর্ষ কর্তাদের কাছে অভিযোগ জানান।

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, ওই সব মাস্কগুলি আদতে পাঠিয়েছিল কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক। ২০০৯ সালে। তবে সেই সময় অত মাস্ক ব্যবহার করার দরকার হয়নি। সেন্ট্রাল মেডিক্যাল স্টোরে পাঁচ বছরেরও বেশি সময় ধরে সেগুলি পড়ে পড়ে নষ্ট হয়ে যেতে বসেছে। এ বার রাজ্যে সোয়াইন ফ্লু-র প্রাদুর্ভাবের পরে মান যাচাই না-করে সেই মাস্কই পাঠিয়ে দেওয়া হয় হাসপাতালগুলিতে।

বিসি রায় হাসপাতালে এই ধরনের ৫০টি মাস্ক পাঠানো হয়েছিল। সেগুলি ব্যবহার করতে গিয়েই চিকিৎসকেরা গোলমাল টের পান। একই অবস্থা বেলেঘাটা আইডি-তে। সেখানে পাঠানো হয়েছিল শ’দুয়েক মাস্ক। তার একটিও ব্যবহার করা যায়নি। এ দিকে চিকিৎসক-নার্স-স্বাস্থ্যকর্মীরা মাস্ক ছাড়া আক্রান্তদের কাছে যেতেই চাইছেন না। ফলে আইডি-কর্তৃপক্ষ নিজেরাই বাজার থেকে বেশ কিছু এন-৯৫ মাস্ক কিনতে বাধ্য হয়েছেন। চিকিৎসকদের অসন্তোষ আঁচ করে বৃহস্পতিবার রাতে স্বাস্থ্য ভবন থেকে বিসি রায় কর্তৃপক্ষকেও বাজার থেকে মাস্ক কিনে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু সমস্যা হল, বাজারেও এখন এন-৯৫ মাস্ক বেশি পাওয়া যাচ্ছে না।

মাস্কের ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব মলয় দে বলেন, “দিল্লি থেকে ৫০০ ‘পার্সোনাল প্রোটেকশন কিট’ এসেছে। তার বেশ কিছুটা পাঠানো হয়েছে ওই দুই হাসপাতালে। ওই কিট ব্যবহার করলে এন-৯৫ মাস্ক ব্যবহারের দরকার নেই।” বিসি রায় এবং আইডি-র চিকিৎসকেরা কিন্তু জানান, যে-কিট পাঠানো হয়েছে, তাতে জামা-প্যান্ট জুতো, টুপি থাকলেও মাস্ক নেই। তা ছাড়া ওই কিট মাত্র এক বার ব্যবহার করা যায়। হাসপাতালে চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মী অনেক। তাঁদের বহু বার সোয়াইন ফ্লু ওয়ার্ডে ঢুকতে হচ্ছে। তাই কিট কম পড়ছে। অগত্যা বাজার থেকে এন-৯৫ মাস্ক কেনা ছাড়া গতি নেই। আইডি-কর্তৃপক্ষ অবশ্য কোনও ঝুঁকি না-নিয়ে বৃহস্পতিবার থেকেই ইচ্ছুক চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের সোয়াইন ফ্লু-র প্রতিষেধক দেওয়ার কাজ শুরু করে দিয়েছেন। বাজার থেকে এই প্রতিষেধক কেনার জন্য রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর বুধবার পাঁচ লক্ষ টাকা পাঠিয়েছে।

বৃহস্পতিবার রাজ্যে আরও পাঁচ জনের সোয়াইন ফ্লু ধরা পড়েছে। এই নিয়ে রাজ্যে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৪৭। নতুন পাঁচ রোগী কলকাতার বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।

মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বাস্থ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন বলেন, “সোয়াইন ফ্লু নিয়ে আতঙ্কের কোনও কারণ নেই। রাজ্য সরকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছে। শয্যার ব্যবস্থা করা হয়েছে।” মুখ্যমন্ত্রীর মতে, এখন মুক্ত পৃথিবী। কোনও ব্যক্তির এক জায়গা থেকে অন্যত্র যাওয়া আটকানো যায় না। এই অবস্থায় কিছু ব্যবস্থা নিতে হবে। সেটাই করা হচ্ছে। সাধারণ মানুষের প্রতি মুখ্যমন্ত্রীর পরামর্শ, “অকারণে আতঙ্কিত হবেন না।”

swine flu mask
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy