আসানসোল রেল হাসপাতালে অবস্থান। নিজস্ব চিত্র।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের গাফিলতিতে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছেন রোগী, এই অভিযোগে আসানসোল রেল হাসপাতালের মূল দরজায় অবস্থান-বিক্ষোভ শুরু করেছেন তাঁর আত্মীয়েরা। নিখোঁজের সন্ধান না মেলা পর্যন্ত অবস্থান-বিক্ষোভ চালিয়ে যাবেন বলে দাবি তাঁদের। হাসপাতালের কোনও গাফিলতির কথা অবশ্য রেল মানতে চায়নি।
রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, শ্রীহরি মণ্ডল নামে ওই রোগী গত ২৪ নভেম্বর শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। হঠাৎই ২৮ নভেম্বর বিকেল থেকে তাঁকে হাসপাতালের বিছানায় দেখা যায়নি। এ দিক-সে দিক খোঁজাখুঁজি করেও তাঁর সন্ধান না মেলায় হাসপাতালের তরফে নিয়মমাফিক আসানসোল দক্ষিণ থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়। কিন্তু ১৫ দিন কেটে যাওয়ার পরেও ওই নিখোঁজ রোগীর কোনও হদিস পাওয়া যায়নি। সালানপুর থানার মহিষামুড়া গ্রামের বাসিন্দা ওই ব্যক্তির বড় ছেলে অমর মণ্ডল জানান, তাঁর বাবা প্রাক্তন রেলকর্মী। বছর চারেক আগে পূর্ব রেলের আসানসোল ডিভিশনের সীতারামপুর ক্যারেজ বিভাগে কাজ করার সময়ে তিনি চাকরি থেকে অবসর নেন। সোমবার বিক্ষোভ-অবস্থান চলার সময়েই তিনি বলেন, “২৮ নভেম্বর বাবাকে দুপুরের খাবার খাইয়ে আমি বাড়ি গিয়েছি। বিকেলে পরিবারের অন্যেরা বাবার সঙ্গে দেখা করতে আসেন। কিন্তু তখন তিনি হাসপাতালের শয্যায় ছিলেন না। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হয়।”
খোঁজাখুঁজির পরেও শ্রীহরিবাবুর সন্ধান না মেলায় হাসপাতালের তরফে থানায় বিষয়টি জানানো হয়। পরিবারের তরফেও গত ২ ডিসেম্বর একটি অভিযোগ আসানসোল দক্ষিন থানায় জমা দেওয়া হয়েছে। তাতে তাঁরা দাবি করেছেন, রোগীর সন্ধান না পাওয়া পর্যন্ত তাঁরা অবস্থান-বিক্ষোভ চালিয়ে যাবেন।
গোটা ঘটনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলেছেন পরিবারের লোকজনেরা। রবিবার বিকেল থেকে হাসপাতালের মূল দরজায় বিক্ষোভ করেছেন শিশু, মহিলা-সহ পরিবারের সদস্যেরা। নিখোঁজের ছেলে অমরবাবুর প্রশ্ন, “জলজ্যান্ত এক জন রোগী হঠাৎ কী করে নিখোঁজ হয়ে যান? হাসপাতালের নিরাপত্তারক্ষীরা কী করছিলেন?” নিখোঁজের পরিবারের সদস্যদের তোলা এই গাফিলতির অভিযোগ অবশ্য মানতে চাননি রেল কর্তৃপক্ষ। আসানসোল ডিভিসনের জনসংযোগ আধিকারিক বিশ্বনাথ মুর্মু বলেন, “আমাদের কোনও গাফিলতি নেই। ওই ব্যক্তির খোঁজ না মেলায় আমরা থানায় ডায়েরি করেছি। পরিবারের লোকজনকেও জানানো হয়েছে। আমরা তাঁদের বোঝানোর চেষ্টা করেছি। ওরা শুনছেন না।” বিশ্বনাথবাবু আরও দাবি করেন, হাসপাতালের চিকিৎসা বা অন্য কোনও বিষয়ে অভিযোগ থাকলে তাঁরা নিশ্চয়ই তা খতিয়ে দেখতেন। সে রকম কোনও অভিযোগ ওই রোগীর পরিবারের কাছ থেকে মেলেনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy