Advertisement
E-Paper

রামসাইয়ে বাইরের শুয়োর, ক্ষোভ

পরিত্যক্ত গোয়াল ঘর এখন শুয়োরের খামার। এনসেফ্যালাইটিস রোগের অন্যতম প্রধান বাহক হিসেবে চিহ্নিত প্রাণীদের এখন সেটাই অস্থায়ী ঠিকানা। উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলা থেকে শুয়োর ধরে ময়নাগুড়ির রামসাই কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রের ওই খামারে পাঠানো শুরু হতেই বাসিন্দারা ধন্দে পড়েছেন। নিরাপত্তার প্রশ্নে শুরু হয়েছে বিক্ষোভ। গ্রাম পঞ্চায়েত কর্তারা বাসিন্দাদের প্রশ্নের উত্তর দিতে পারছেন না বলে অভিযোগ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ জুলাই ২০১৪ ০১:৩৪

পরিত্যক্ত গোয়াল ঘর এখন শুয়োরের খামার। এনসেফ্যালাইটিস রোগের অন্যতম প্রধান বাহক হিসেবে চিহ্নিত প্রাণীদের এখন সেটাই অস্থায়ী ঠিকানা। উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলা থেকে শুয়োর ধরে ময়নাগুড়ির রামসাই কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রের ওই খামারে পাঠানো শুরু হতেই বাসিন্দারা ধন্দে পড়েছেন। নিরাপত্তার প্রশ্নে শুরু হয়েছে বিক্ষোভ। গ্রাম পঞ্চায়েত কর্তারা বাসিন্দাদের প্রশ্নের উত্তর দিতে পারছেন না বলে অভিযোগ। তাই কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রের কর্মীরা সতর্কতা হিসেবে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক পাঠানোর দাবি তুলেছেন।

উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শুয়োর বেলগাছিয়ার রাজ্য প্রাণী ও মৎস্য বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকা রামসাই কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রে পাঠানো শুরু হয় গত ২৫ জুলাই। রামসাই গ্রাম পঞ্চায়েত কর্তারা জানান, ওই দিন দুপুরে ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক সভা করে এলাকার সমস্ত শুয়োর বাইরে নিরাপদ দূরত্বে খোঁয়াড়ে রাখার পরামর্শ দেন। সেই মতো প্রস্তুতিও নেন। কিন্তু বাইরের জেলার শুয়োর ধরে এলাকার কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রে পাঠানো হচ্ছে শুনে তাঁরা সংশয়ে পড়ে যান। পঞ্চায়েত প্রধান বিজেপি-র ভূপেন রায় বলেন, “স্বাস্থ্যকর্তারা যে পরামর্শ দিয়েছেন, তাঁর উল্টো ঘটনা ঘটল। বাইরের শুয়োর গ্রামে পাঠানো হচ্ছে। কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্র যে শিবগারা গ্রামে রয়েছে, তার চারপাশে প্রায় তিন হাজার মানুষের বাস। এখানে শুয়োর রাখা হলে, তাঁদের কী হবে জানতে চাইছেন। উত্তর দিতে পারছি না।”

কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্র সূত্রে জানা গিয়েছে, দার্জিলিং, কোচবিহার এবং জলপাইগুড়ি থেকে ৩৪৫টি শুয়োর পৌঁছেছে। খামারে প্রতি রাতে ট্রাক আসছে। সংখ্যাটা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। সেই সঙ্গে চড়ছে ক্ষোভের পারদ। মঙ্গলবার দীপক সরকার, মধু রায়, অনন্ত রায়, ধীরেন রায়ের মতো রামসাই এলাকার বাসিন্দারা জানান, এনসেফ্যালাইটিসের রোগ থেকে বাঁচার জন্য কেন গ্রামে বাইরের জেলার শুয়োর পাঠানো হবে? ওই শুয়োর থেকে গ্রামে মারণ রোগ যে ছড়াবে না, সেই নিরাপত্তা কোথায়?

একই প্রশ্ন তুলে গত সোমবার বাসিন্দাদের একাংশ কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রে বিক্ষোভ দেখায়। প্রাণী সম্পদ বিকাশ দফতরে ডেপুটি ডিরেক্টর স্বরূপ বক্সি বলেন, “খামারে রাখা শুয়োর থেকে এনসেফ্যালাইটিস ছড়াবে কি না, সেই বিষয়ে কিছু বলতে পারব না। যা বলার বিশেষজ্ঞেরা বলবেন। তবে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।”

কী কী ব্যবস্থা আছে ওই খামারে? শুয়োরদের রাখার জন্য ১৫১ একর আয়তনের কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রে উন্নত প্রজাতির গরু পালনের চারটি পরিত্যক্ত শেড বেছে নেওয়া হয়েছে। ছয় জনের পশু চিকিৎসকের দল সেখানে পালা করে চিকিৎসা ও নজরদারির কাজ করছেন। শুয়োর পরিচর্যা এবং দিনে দু’বেলা মশা ও রোগ জীবাণু প্রতিরোধক ওষুধ স্প্রে করার কাজ করছেন ১৭ জন অস্থায়ী কর্মী। মৃত শুয়োর পুঁতে ফেলার জন্য লোহার জাল দিয়ে ঘেরা সংরক্ষিত এলাকা তৈরি করা হয়েছে। ইতিমধ্যে খামারে পৌঁছনোর আগে মৃত ২০টি শুয়োরকে সেখানে পুঁতে দেওয়া হয়েছে।

এলাকার বাসিন্দারা তো বটেই, খোদ কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রের কর্মীরা আশ্বস্ত হতে পারছেন না। কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রের কো-অর্ডিনেটর বিপ্লব দাস বলেন, “এগারো জন কর্মী ক্যাম্পাসে থাকেন। একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকে কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রে রাখার জন্য আমরা স্থানীয় বিধায়ককে অনুরোধ করেছি।”

mainaguri encephalitis pig ramasai ramasai agricultural science center
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy