Advertisement
E-Paper

রক্ত দিয়ে সঙ্কট মেটাচ্ছেন চিকিৎসক ও কর্মীরা

সিউড়ি সদর হাসপাতাল-সহ রামপুরহাট ও বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে বেশ কিছু দিন ধরে রক্তের আকাল দেখা দিয়েছে। ব্লাড ব্যাঙ্কের এই সঙ্কট পরিস্থিতির কারণে সমস্যা পড়েছে রোগীরা। এই অবস্থায় সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষদের কাছে প্রয়োজনীয় নিয়ম নীতি মেনে রক্তদান শিবির আয়োজন করার আর্জি জানিয়েছেন জেলার বিভিন্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসক, হাসপাতাল সুপার এবং রাজনৈতিক দলগুলিও।

মহেন্দ্র জেনা

শেষ আপডেট: ০৮ মে ২০১৪ ০৩:০৭
বোলপুর মহকুমা হাসপাতালের রক্তের তালিকা। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী।

বোলপুর মহকুমা হাসপাতালের রক্তের তালিকা। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী।

সিউড়ি সদর হাসপাতাল-সহ রামপুরহাট ও বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে বেশ কিছু দিন ধরে রক্তের আকাল দেখা দিয়েছে। ব্লাড ব্যাঙ্কের এই সঙ্কট পরিস্থিতির কারণে সমস্যা পড়েছে রোগীরা। এই অবস্থায় সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষদের কাছে প্রয়োজনীয় নিয়ম নীতি মেনে রক্তদান শিবির আয়োজন করার আর্জি জানিয়েছেন জেলার বিভিন্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসক, হাসপাতাল সুপার এবং রাজনৈতিক দলগুলিও।

সোমবার বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেল ব্লাড ব্যাঙ্কের দেখভালের দায়িত্বে থাকা কর্মী দেবব্রত চট্টোপাধ্যায় বোর্ডে রক্তের গ্রুপের পাশে শূন্য শূন্য লিখছেন। কেন এই পরিস্থিতি জিজ্ঞেস করতেই তিনি জানালেন, প্রায় এক সপ্তাহের কিছু বেশি দিন ধরে একাধিক গ্রুপের রক্ত নেই ব্লাড ব্যাঙ্কে। তবে কোনও কোনও দিন এক ইউনিট করে কয়েকটা গ্রুপের রক্ত পাওয়া যায়। তিনি বলেন, “খুবই সমস্যার মধ্যে রয়েছি। তবে যাঁদের রক্তের প্রয়োজন আছে, তাঁদের আত্মীয়-পরিজনেরা রক্তদাতা জোগাড় করে প্রয়োজন মেটানোর চেষ্টা করছেন।” এই পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসতে গত সোমবার সিউড়ি সদর হাসপাতালের ৭৬ জন চিকিৎসক, নার্স এবং অন্য স্বাস্থ্যকর্মীরা রক্তদান শিবিরের মাধ্যমে রক্তদান করেছেন। ওই হাসপাতালের সুপার অসিত বিশ্বাসও রক্তদান করেছেন। তিনি বললেন, “গত সপ্তাহে নিজেরাই রক্তদান শিবির করে কিছুটা প্রয়োজন মেটানোর চেষ্টা করেছি। তবে বর্তমান যা পরিস্থিতি, তাতে প্রয়োজনের তুলনায় যথেষ্ট কম রক্ত রয়েছে ব্লাড ব্যাঙ্কে। গ্রীষ্মকালে এমনিতেই ব্লাড ব্যাঙ্কে রক্তের টান থাকে। যে সমস্ত সংস্থা রক্তদান শিবিরের আয়োজন করে, তাদের কাছে আবেদন জানানো হয়েছিল। কিন্তু ভোটের কারণে কোনও সংস্থাই আমাদের আবেদনে সাড়া দেয়নি। ফলে বাধ্য হয়ে নিজেরাই হাসপাতাল চত্বরে রক্তদান শিবিরের আয়োজন করেছিলাম।”

একই রকম পরিস্থিতি রামপুরহাট হাসপাতালেও। এই হাসপাতালের সুপার হিমাদ্রি হালদার বলেন, “মহকুমার মুরারই এলাকায় সোমবার একটি রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হয়েছিল। পনেরো ইউনিট থেকে কিছু কম রক্ত সংগ্রহ হয়েছিল ওই দিন। তবে আরও বেশি করে রক্তদান শিবির আয়োজন করা প্রয়োজন রয়েছে। এই মাসে ওই মহকুমা এলাকায় আরও তিনটি শিবিরের আয়োজন হয়েছে। আশা করছি এই বার রক্তের আকাল কিছুটা হলেও মেটানো যাবে।” বোলপুর মহকুমা হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার ব্লাড ব্যাঙ্কের সব কয়েকটি গ্রুপের রক্ত শূন্য ছিল। তবে কোনও মতে রক্তদাতা জোগাড় করে চালানো গিয়েছে। শুধু মাত্র রক্তদাতা এনে রোগীরা ওই পরিষেবা পাচ্ছেন। জেলার তিন মহকুমা হাসপাতালে রক্ত সঙ্কট দূর করতে সমস্ত শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষদের কাছে আর্জি জানিয়েছে শাসকদল তৃণমূল-সহ বামফ্রন্ট, কংগ্রেস এবং বিজেপিও। থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত বোলপুর শহরের শুঁড়িপাড়ার লক্ষ্মী মাড্ডি, জামবুনি বাসস্ট্যান্ড এলাকার বাসিন্দা এনামুল হক, মুকুলের বাসিন্দা পায়েল খাতুনদের কথায়, “ব্লাড ব্যাঙ্কে রক্ত সঙ্কটের জন্য আমরা আশঙ্কায় রয়েছি। অবিলম্বে এলাকার স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন-সহ অন্য সংগঠনগুলি এগিয়ে এলে ভাল হয়।”

বোলপুর মহকুমা হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কের আধিকারিক চিকিৎসক তীর্থঙ্কর চন্দ্র বলেন, “রক্তের সঙ্কট কাটানোর এলাকার স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলি আগামী ২১ ও ২৬ মে দু’টি রক্তদান শিবিরের আয়োজন করেছে বলে জানতে পেরেছি। আমরাও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলি এবং এলাকার স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলির কাছে বারে বারে আর্জি জানিয়েছি। আশা করছি সাড়া পাব।”

রক্তের সঙ্কট জলপাইগুড়িতে

নিজস্ব সংবাদদাতা • জলপাইগুড়ি

রক্ত সঙ্কট শুরু হয়েছে জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কে। বুধবার দুপুরের পরে শুধুমাত্র ‘ও নেগেটিভ’ বিভাগের ৬ ইউনিট রক্ত ছাড়া অন্য কোনও বিভাগের রক্ত ছিল না বলে জানা গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে দিশেহারা হয়ে পড়েন রোগীর আত্মীয়রা। রক্তদাতাদের সঙ্গে আনলেও, বিকল্প বিভাগের রক্ত না থাকায় কোনও সুরাহা হয়নি বলে অভিযোগ। ব্লাডব্যাঙ্কের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক কৈলাস চন্দ্র রায় বলেন, “ভোটের কারণে রক্তদান শিবিরগিুলি না হওয়াতেই এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। বিভিন্ন ক্লাব ও সংস্থার কাছে রক্তদান শিবির আয়োজন করার আর্জি জানিয়েছি।” এ দিন সকালে ৩১ ইউনিট রক্ত ছিল ব্লাড ব্যাঙ্কে। দুপুর দেড়টার পরেই সেই রক্ত ফুরিয়ে যায় বলে ব্লাড ব্যাঙ্ক সূত্রে জানা গিয়েছে। রক্ত না থাকায় এ দিন অস্ত্রোপচারও ব্যহত হয়েছে বলে অভিযোগ।

mahendra jena bolpur blood bank
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy