Advertisement
E-Paper

রক্ত পরীক্ষা ব্যাহত মেডিক্যালে

এনসেফ্যালাইটিস পরিস্থিতি মোকাবিলায় উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগ ২৪ ঘন্টা খোলা রাখতে অতিরিক্ত তিনজন কর্মী নিয়োগ করা হয়েছিল। কিন্তু বেতন পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তায় তাঁদের এক জন কাজ ছেড়ে দিয়েছেন। অন্য এক জনকে সাময়িকভাবে ওই কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ অগস্ট ২০১৪ ০১:৫৫

এনসেফ্যালাইটিস পরিস্থিতি মোকাবিলায় উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগ ২৪ ঘন্টা খোলা রাখতে অতিরিক্ত তিনজন কর্মী নিয়োগ করা হয়েছিল। কিন্তু বেতন পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তায় তাঁদের এক জন কাজ ছেড়ে দিয়েছেন। অন্য এক জনকে সাময়িকভাবে ওই কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। তিনিও এখন নেই। তাই এক জন কর্মীর উপরেই নির্ভর করে চলছে এনসেফ্যালাইটিসের রক্ত বা সেরিব্রো স্পাইনাল ফ্লুইড (সিএসএফ) পরীক্ষার কাজ। তাতে ২৪ ঘন্টা ওই বিভাগ খোলা রাখা সম্ভব হচ্ছে না বলে অভিযোগ।

বেলা ১০ টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চালু থাকছে পরিষেবা। কনকলতা মজুমদার নামে এক কর্মী জানান, ২২ জুলাই থেকে তিনি কাজ করছিলেন। সংশ্লিষ্ট বিভাগের তরফে ওই মাসে যে ক’দিন কাজ করছেন তার জন্য বিল করে পাঠানো হয়েছিল সুপারের দফতরে। সেখান থেকে জানানো হয় কলেজ কর্তৃপক্ষ বিষয়টি দেখবেন। সেখানে গেলে জানানো হয় তারা দেখবেন না। কবে টাকা পাবেন, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেওয়ায় ১৭ অগস্ট থেকে কাজে যাচ্ছেন না।

ওই বিভাগে পুরোন দু’জন কর্মী রয়েছেন। পড়ুয়াদের প্রশিক্ষণ এবং হাসপাতালের অন্তঃ ও বহির্বিভাগে বিভিন্ন রোগের চিকিত্‌সার জন্য আসা মানুষদের প্রয়োজনীয় পরীক্ষার কাজে তাঁদের ব্যস্ত থাকতে হয়। এনসেফ্যালাইটিসের নমুনা পরীক্ষার বিষয়টি তারা দেখেন না। হাসপাতালের সুপার সব্যসাচী দাস অবশ্য জানান, সমস্যার ব্যাপারটি তাঁর জানা নেই। তিনি বলেন, “রোগীদের নমুনা পরীক্ষার কাজ যথাযথ ভাবেই হচ্ছে। তাছাড়া রোগীর এবং নমুনা সংখ্যা এখন অনেক কম। সে কারণে সমস্যা হওয়ার কথা নয়।”

অন্য দিকে, হাসপাতালে চিকিত্‌সকদের অনিয়মিত হাজিরা নিয়ে সাত দিনের মধ্যে স্টেটাস রিপোর্ট চাওয়া হলেও অধিকাংশ বিভাগীয় প্রধানরা এখনও তা দিতে পারেননি বলে অভিযোগ। গত ১৩ অগস্ট হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে ওই সমস্ত অনিয়মের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলেছিলেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তিন চিকিত্‌সককে শোকজ করার কথা জানালেও, হাজিরা নিয়ে অন্য যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে তাঁদের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না সেই প্রশ্ন উঠেছে। যে তিন চিকিত্‌সককে শোকজ করা হয়েছে তাঁদের দুই জন ইউরোলজি বিভাগের এবং একজন অ্যানাস্থেসিওলজি বিভাগের। তিন জনের কেউ ন’ মাস, কেউ এক বছর ধরে হাসপাতালে আসছেন না। অথচ কয়েক মাস আগে পর্যন্ত তাঁরা বেতন পাচ্ছিলেন বলে অভিযোগ। এঁরা ছাড়াও শল্য বিভাগ, কমিউনিটি মেডিসিন-সহ কয়েকটি বিভাগের চিকিত্‌সকদের অনেকেই অনিয়মিত বলে অভিযোগ। অন্তত ১৫ জন চিকিত্‌সক সপ্তাহে ২/৩ দিন আসেন। বাকি দিন বাইরে চেম্বার করেন বা কলকাতায় থাকেন। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ সমীর ঘোষ রায় বলেন, “রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। কেন রিপোর্ট দিতে দেরি হচ্ছে বিস্তারিত খোঁজ নেব।” শনিবার রাত থেকে রবিবার দুপুর পর্যন্ত অন্তত চার জন রোগীকে খিঁচুনি ও জ্বর নিয়ে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে ভর্তি করানো হয়েছেন। তার মধ্যে মাটিগাড়ার তুম্বাজোতের বাসিন্দা প্রহ্লাদ শাহকে শনিবার রাতে ভর্তি করানো হয়। মাস দুয়েক আগেও একই উপসর্গ নিয়ে তিনি ভর্তি হয়েছিলেন বলে জানা গেছে। ময়নাগুড়ির জোড়পাখরি এলাকার শৈলেশ রায়কে জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালে একদিন চিকিত্‌সার পর শনিবার রাতে রেফার করা হয়। রবিবার সকালে তাঁকে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। ফাঁসিদেওয়া চটহাটের বাসিন্দা মহম্মদ মানিককে শনিবার রাতে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান, অ্যাকিউট এনসেফ্যালাইটিস সিনড্রোমে নিয়ে ১২ জন হাসপাতালে রয়েছেন। তার মধ্যে সাত জন সিসিইউ’তে ভর্তি। বাকিরা মেডিসিন বিভাগে। তাঁদের সাত জন জাপানি এনসেফ্যালাইটিসে আক্রান্ত।

blood examination disruption north bengal medical college
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy