Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

সঙ্কট মেটাতে রক্ত দিলেন ডাক্তার-নার্সরা

সপ্তাহ দু’য়েক ধরেই সঙ্কট চলছিল। কিন্তু গত দু’দিনে ঝাড়গ্রাম জেলা হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্ক কার্যত রক্তশূন্য হয়ে পড়ে। সঙ্কট মেটাতে জরুরি ভিত্তিতে হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স ও কর্মীরা রক্তদান করলেন শুক্রবার। তা দেখে উৎসাহী আরও কয়েকজন রক্তদানে এগিয়ে এলেন। সকাল এগারোটা থেকে বিকেল চারটে পর্যন্ত মোট ৩০ জন রক্তদান করেছেন। হাসপাতালের সুপার মলয় আদক বলেন, “সঙ্কট মেটাতে নিজেরাই রক্ত দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিই। এ ছাড়া উপায়ও ছিল না। অন্যদেরও রক্তদানে উৎসাহিত করা গিয়েছে, এটাই আমাদের বড় প্রাপ্তি।”

ঝাড়গ্রাম জেলা হাসপাতালে রক্তদান শিবির। শুক্রবার।  ছবি: দেবরাজ ঘোষ।

ঝাড়গ্রাম জেলা হাসপাতালে রক্তদান শিবির। শুক্রবার। ছবি: দেবরাজ ঘোষ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ২৪ মে ২০১৪ ০২:১৫
Share: Save:

সপ্তাহ দু’য়েক ধরেই সঙ্কট চলছিল। কিন্তু গত দু’দিনে ঝাড়গ্রাম জেলা হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্ক কার্যত রক্তশূন্য হয়ে পড়ে। সঙ্কট মেটাতে জরুরি ভিত্তিতে হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স ও কর্মীরা রক্তদান করলেন শুক্রবার। তা দেখে উৎসাহী আরও কয়েকজন রক্তদানে এগিয়ে এলেন। সকাল এগারোটা থেকে বিকেল চারটে পর্যন্ত মোট ৩০ জন রক্তদান করেছেন। হাসপাতালের সুপার মলয় আদক বলেন, “সঙ্কট মেটাতে নিজেরাই রক্ত দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিই। এ ছাড়া উপায়ও ছিল না। অন্যদেরও রক্তদানে উৎসাহিত করা গিয়েছে, এটাই আমাদের বড় প্রাপ্তি।”

এ দিন সকাল এগারোটা নাগাদ হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কে রক্তদান শিবিরটি শুরু হয়। হাসপাতালের স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ হিমাংশু রায়, শল্য চিকিৎসক গৌরিক মাজি, চিকিৎসক প্রসূণ ঘোষ রক্তদান করেন। হাসপাতালের নার্স রিনা অট্ট ও কর্মী চন্দন সৎপথী, মানস বাগ, বাজিনাথ টুডু-দের রক্তদান করতে দেখে এগিয়ে আসেন চিকিৎসাধীন রোগীর পরিজনেরা। চিকিৎসাধীন রোগীদের পরিজন স্বপন সিংহ, তাপস মল্লিক, দেবাশিস রাউত-রা বলেন, “চিকিৎসক-নার্সদের রক্তদান করতে দেখে নিজেরাই এগিয়ে এসে রক্তদান করলাম।”

ঝাড়গ্রাম জেলা হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কের ভারপ্রাপ্ত চিকিৎসক আলো হাঁসদা জানান, গ্রীষ্মে এমনিতেই রক্তের আকাল দেখা দেয়। এ বার নির্বাচন ঘোষণা হয়ে যাওয়ায়, সে ভাবে রক্তদান শিবির হয়নি। ফলে মজুত রক্ত শেষ হয়ে যায়। প্রচণ্ড গরমে বেশ কিছু সংস্থা রক্তদান শিবির-কর্মসূচি বাতিল করেছে। গত দু’দিন রক্ত-সঙ্কট চরমে পৌঁছয়।” স্বাস্থ্য দফতরের পরিসংখ্যান বলছে, ঝাড়গ্রাম মহকুমায় রক্ত সংগ্রহের পরিমাণ এমনিতেই কম। ঝাড়গ্রাম জেলা হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কে বছরে সংগৃহীত রক্তের পরিমাণ তিন হাজার ইউনিট। এর মধ্যে মাত্র মাত্র ৪৫০-৫০০ ইউনিট রক্ত ঝাড়গ্রাম মহকুমা এলাকা থেকে সংগ্রহ করা হয়। বাকিটা ঘাটাল ও খড়্গপুর এলাকা থেকে সংগ্রহ করা হয়। ব্লাড ব্যাঙ্কের সহায়তায় বিভিন্ন ক্লাব ও স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠানগুলি রক্তদান শিবিরের আয়োজন করে থাকে। কিন্তু এ বার ভোটের নির্ঘন্ট ঘোষণা হয়ে যাওয়ায় ক্লাবগুলি নির্বাচনী প্রচার নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছিল। এই পরিস্থিতিতে মাস খানেক রক্তদান শিবির হয় নি। হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কের রক্ত সংকট মেটাতে কয়েকদিন আগে জরুরি বৈঠক ডাকেন সুপার মলয় আদক। সিদ্ধান্ত হয়, হাসপাতালেই শিবির করে চিকিৎসক, নার্স ও কর্মীরা রক্তদান করবেন। শুক্রবার শিবির শুরু হতেই রোগীর পরিজন, রোগী নিয়ে আসা গাড়ির চালকেরাও রক্তদান করেন। দিনের শেষে কিছুটা আশ্বস্ত আলোদেবী বলেন, “যে পরিমাণ রক্ত সংগ্রহ হয়েছে, তাতে আগামী এক-দু’দিন সামাল দেওয়া যাবে।” কিন্তু তারপর? আলোদেবীর জবাব, “যে সব সংগঠন নিয়মিত রক্তদান করে থাকে, তাদের কাছে আমরা অনুরোধ করছি যাতে জনস্বার্থে রক্তদান শিবির করতে তাঁরা এগিয়ে আসেন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

jhargram blood crisis blood donation
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE