Advertisement
E-Paper

হাসপাতাল থেকে ফিরলেও বিছানায় দিনহাটার মর্জিনা

এখনও কথা বলতে পারে না। উঠে দাঁড়াতেও পারে না। টানা দুই সপ্তাহ লড়াইয়ের পরে জাপানি এনসেফেলাইটিসকে হার মানিয়ে সদ্য উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে বাড়িতে ফিরেছে মর্জিনা খাতুন। বছর আটেকের মেয়েটিকে দেখতে গোটা গ্রাম ভেঙে পড়েছে। মাথাভাঙার কুর্শামারিতে মর্জিনার বাড়িতে গিয়েছেন দিল্লি থেকে যাওয়া কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের জীবাণু বিজ্ঞানীরা।

নমিতেশ ঘোষ

শেষ আপডেট: ২৬ জুলাই ২০১৪ ০৩:০৮
বিছানায় মর্জিনা। —নিজস্ব চিত্র।

বিছানায় মর্জিনা। —নিজস্ব চিত্র।

এখনও কথা বলতে পারে না। উঠে দাঁড়াতেও পারে না। টানা দুই সপ্তাহ লড়াইয়ের পরে জাপানি এনসেফেলাইটিসকে হার মানিয়ে সদ্য উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে বাড়িতে ফিরেছে মর্জিনা খাতুন। বছর আটেকের মেয়েটিকে দেখতে গোটা গ্রাম ভেঙে পড়েছে। মাথাভাঙার কুর্শামারিতে মর্জিনার বাড়িতে গিয়েছেন দিল্লি থেকে যাওয়া কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের জীবাণু বিজ্ঞানীরা। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, ঠিকঠাক ওষুধ পেলে ও ভাল খাওয়াদাওয়া করলেই ধীরে ধীরে সবল হয়ে উঠবে সে। মর্জিনার মা মমতা বিবি বলেন, “এমন রোগে আমার সুস্থ সবল মেয়েটিকে বিছানায় ফেলে দেবে ভাবতে পারিনি। আমরা গরিব মানুষ। দিন আনি দিন খাই।” তাঁর কথায়, ১৬ দিন ধরে মেয়েটার চিকিৎসা হয়েছে। এখন ভাল খাবারের টাকা কোথায় পাবেন তিনি? মেয়েটা আমার এখনও বিছানা থেকে উঠতে পারছে না।

কোচবিহারের ডেপুটি স্বাস্থ্য আধিকারিক অমল সোরেন বলেন, “মর্জিনার শরীরে জাপানি এনসেফ্যালাইটিসের জীবাণু এখন আর নেই। ধীরে ধীরে সে সবল হয়ে উঠবে।” মর্জিনার মা জানান, তাঁর শ্বশুরবাড়ি পাশের গ্রাম শিবপুরে। তিনি ছেলেমেয়েদের নিয়ে তাঁর বাবার বাড়ি কুর্শামারিতেই স্থায়ী ভাবে থাকেন। মাঝে মধ্যে শিবপুরে যান। তিন সপ্তাহ আগে তিনি ছেলে এবং একমাত্র মেয়ে মর্জিনাকে নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে গিয়েছিলেন। সেখানেই গত ৭ জুলাই জ্বরে আক্রান্ত হয় মর্জিনা। প্রথমটায় বিষয়টিকে গুরুত্ব দেননি তাঁরা। স্থানীয় হাতুড়ে চিকিসকের কাছ থেকে জ্বরের ওষুধ নিয়ে গিয়ে খাওয়ান।

এ ভাবেই কেটে যায় চার দিন। কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসার পাশাপাশি বমিও শুরু হয় তার। সেদিনই মাথাভাঙা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। শনিবার কোচবিহার সদর হাসপাতালে রেফার করে দেওয়া হয় মর্জিনাকে। সেখান থেকে ওই দিনই তাঁকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। রক্ত পরীক্ষার পরে চিকিৎসকেরা তাঁদের জানান, মর্জিনার জাপানি এনসেফেলাইটিস হয়েছে। মর্জিনা তখন প্রায় কথা বলা বন্ধ করে দিয়েছিল। সেখানেই চিকিৎসা শুরু হয়। ৯ দিন পরে ডাক্তারেরা জানান, ওই রোগের জীবাণু আর নেই মর্জিনার শরীরে। মঙ্গলবার সে ছুটি পায়।

এদিন ওই বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় ভিড় করে আছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। কিন্তু হাসপাতাল থেকে ছুটির পরেও কেন বিছানা থেকে উঠতে পারছে না মর্জিনা? সে প্রশ্ন তুলছেন বুধবার কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের দল। ওই বাড়িতে গিয়ে চারপাশ ঘুরে দেখেন। সেখানে জমে থাকা জল থেকে মশার লার্ভা সংগ্রহ করেন তাঁরা। সেখানেই তা পরীক্ষার পরে তাঁরা সন্দেহ প্রকাশ করেন, ওই লার্ভাগুলিতে ডেঙ্গির জীবাণু রয়েছে। মর্জিনার দাদু কপিল মিয়াঁ বলেন, “চঞ্চল মেয়েটা কয়েকদিনের মধ্যে যে এমন হয়ে যাবে, ভাবতে পারছি না। সে আবার কখন আগের মতো হয়ে উঠবে সে অপেক্ষায় দিন কাটাচ্ছি।”

encephalitis dinhata namitesh ghosh mathabhanga
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy