ছবি: পিটিআই।
করোনার জেরে লকডাউন এবং তার আগে মোদী সরকারের নোট বাতিল ও ত্রুটিপূর্ণ জিএসটি চাপিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত দেশের অর্থনীতির কাঠামো ভেঙে দিয়েছিল বলে অভিযোগ তুললেন রাহুল গাঁধী।
নরেন্দ্র মোদীর ‘রামরাজ্য’-র স্বপ্ন ও রামমন্দির ঘিরে আবেগ থেকে বাস্তব সমস্যার দিকে নজর ঘোরাতে মরিয়া কংগ্রেস নেতৃত্ব রবিবার যুব কংগ্রেসের প্রতিষ্ঠা দিবসে ‘রোজগার দো’ প্রচার অভিযান পালন করেছে। সেই প্রচার অভিযানে রাহুল অভিযোগ তোলেন, মোদীর নীতির কারণে দেশের ১৪ কোটি মানুষ কাজ হারিয়েছেন। রাহুল বলেন, ‘‘যখন নরেন্দ্র মোদী প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন, তখন দেশের তরুণদের জন্য বছরে ২ কোটি চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। অনেক বড় স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন। সত্যটা বেরিয়ে এসেছে। ১৪ কোটি মানুষের কাজ গিয়েছে।’’ গত সপ্তাহে কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রক নিজেই জানিয়েছিল, অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানোর লক্ষণ দেখা গেলেও তা ঠুনকো। কারণ করোনা সংক্রমণ বাড়ার সঙ্গে বিভিন্ন রাজ্যে মাঝেমধ্যেই লকডাউন করতে হচ্ছে। যে সব রাজ্য অর্থনীতির চালিকাশক্তি, সেই সব রাজ্যেই সংক্রমিতের সংখ্যা বেশি।
অধিকাংশ আর্থিক উপদেষ্টা সংস্থাই নিশ্চিত, চলতি অর্থ বছরে অর্থনীতির বহর বা জিডিপি-র সঙ্কোচন হবে বা আর্থিক বৃদ্ধির হার শূন্যের নীচে চলে যাবে। বিতর্ক এখন শুধু সঙ্কোচন কতটা হবে, তা নিয়ে। রবিবার অর্থনীতিবিদ কৌশিক বসু মন্তব্য করেছেন, ‘‘সমস্ত অর্থনীতিরই খারাপ দশা। বিশেষ করে ভারতের। ২০২০-২১-এ আর্থিক বৃদ্ধির হার ১৯৪৭-এর পরে সর্বনিম্ন হওয়ার সম্ভাবনা। ঔপনিবেশিক আমলে একমাত্র এর তুলনা মিলত। বিভাজন ও আস্থার অভাব লগ্নিতে ও কর্মসংস্থান তৈরিতে বাধা দিচ্ছে। বড় মাপের নীতিগত পদক্ষেপ প্রয়োজন।’’
কেরলের অর্থমন্ত্রী টমাস আইজ্যাকও মনে করছেন, দ্রুত বাজারে চাহিদা বাড়ানোর পদক্ষেপ দরকার। করোনার জেরে লকডাউনের পরে মোদী সরকার ২০ লক্ষ কোটি টাকার আর্থিক প্রকল্প ঘোষণা করলেও
তাতে মূলত ঋণের জোগান দিয়ে কারখানার কাজ বা ব্যবসা শুরু করানোর চেষ্টা ছিল। কিন্তু তাতে কিছু লাভ হয়নি বলে আইজ্যাকের যুক্তি, ‘‘উৎপাদন শিল্পের সূচক ৪৬% নেমেছে। ব্যাঙ্কের ঋণ বৃদ্ধির হার জুলাইয়ে ০.৪% নেমেছে। কর বাবদ রাজস্ব আয় বাড়েনি। সবুজ মরুদ্যান দেখা যাচ্ছে বলে কেন্দ্র যে দাবি করছিল, তা শুকিয়ে গিয়েছে।’’
সরকারের সমালোচনা করলেও বিরোধীদের মত, অর্থনীতির সঙ্কট, চিনের আগ্রাসন বা করোনার মোকাবিলায় খামতি— কোনও দিক থেকেই মোদী সরকারের ভাবমূর্তি টোল খায়নি। বরং রামমন্দিরের শিলান্যাস করে মোদী সে দিকে নজর ঘুরিয়ে রামরাজ্যের স্বপ্ন দেখিয়েছেন। এই কারণেই আজ তরুণদের সমস্যা তুলে ধরতে কংগ্রেস বেকারত্ব নিয়ে প্রচার চালিয়েছে। রাহুল আজ মোদী সরকারের খসড়া পরিবেশ আইনে শিল্প-পরিকাঠামো সংক্রান্ত ছাড়পত্র নেওয়ার শর্ত লঘু করারও সমালোচনা করেছেন। তাঁর মতে, তরুণরাই পরিবেশ রক্ষার জন্য আন্দোলন করে এসেছেন। এ বারও এ বিষয়ে তরুণদের সরব হওয়া দরকার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy