প্রতীকী চিত্র।
সন্ধেয় আপন মনেই খেলতে বেরিয়েছিল সাত বছরের গুড্ডি (নাম পরিবর্তিত)। যেমন হামেশাই বেরোয়। আবার ফিরেও আসে। কিন্তু সেদিন আর ফিরল না। দু’দিন পর অবশ্য ফিরে এসেছে গুড্ডি। সারাক্ষণ বাড়ি মাতিয়ে রাখা বছর সাতের মেয়েটি নিথর, নিশ্চুপ হয়ে। সাদা কাপড়ে মুড়ে। লাশকাটা ঘর থেকে। গলায়, মুখে, শরীরে অত্যাচার-নির্যাতনের ক্ষতচিহ্ন নিয়ে।
ছোট্ট গুড্ডিকে ধর্ষণের পর গলা টিপে হত্যা করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট বলছে সেটাই। রাজস্থানের ঝালওয়ার জেলার এই ঘটনায় ফের শিউরে উঠেছে দেশবাসী। পুলিশ একটি স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টিম (সিট) গঠন করে তদন্ত শুরু করেছে। প্রশিক্ষিত কুকুর, ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ ও সাইবার সেলের বিষেশজ্ঞদেরও তদন্তে যুক্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঝালওয়ারের পদস্থ পুলিশ কর্তা আনন্দ শর্মা।
কী হয়েছিল সেদিন?
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার সন্ধেয় বাড়ির পাশেই খেলতে বেরিয়েছিল গুড্ডি। রাতেও না ফেরায় তার দিদি খুঁজতে বেরোয়। না পেয়ে বাড়িতে জানায় সে। পরিবার-পরিজনরা আশপাশের গোটা এলাকায় খুঁজেও রাতে আর গুড্ডিকে পাননি। সকালে পুলিশের দ্বারস্থ হন। শনিবার বিকেলে পুলিশ গোটা এলাকায় তল্লাশি করে অবশেষে বাড়ি থেকে ২০০ মিটার দূরেই উদ্ধার করে গুড্ডিকে। অ্যাম্বুল্যান্সে হাসপাতালে নিয়ে গেলেও চিকিৎসকরা জানিয়ে দেন, অনেক আগেই মৃত্যু হয়েছে গুড্ডির।
আরও পড়ুন: রায়গড়ে খাদে পড়ল বাস, মৃত্যু ৩৩ যাত্রীর
ময়নাতদন্তে জানা যায়, গুড্ডিকে ধর্ষণ করা হয়েছে। তার পর নৃশংস ভাবে হত্যা করা হয়েছে গলা টিপে। গুড্ডির বাবা বলেন, ‘‘সন্ধে ছ’টা নাগাদ রুটি খেয়ে বাড়ির পাশেই খেলতে বেরিয়েছিল। বেশ কিছুক্ষণ পরেও ফিরে না আসায় বড় মেয়ে খুঁজতে বেরোয়। কিন্তু সে খুঁজে পায়নি।’’ শোকে পাথর হয়ে গিয়েছেন গুড্ডির মা। মাঝেমধ্যে শুধু অস্ফুটে প্রশ্ন করে যাচ্ছেন, ‘‘কী দোষ করেছিল ছোট্ট মেয়েটা।’’
আরও পড়ুন: ‘নিন্দুকদের ধন্যবাদ’ ট্রোলড হয়ে পাল্টা জবাব কেরলের সেই ছাত্রীর
পুলিশ কর্তা আনন্দ শর্মা বলেন, ‘‘সিট গঠন করে তদন্ত শুরু হয়েছে। আমরা খুব শীঘ্রই ঘটনার কিনারা করার চেষ্টা করছি। আশা করছি, খুব শীঘ্রই অপরাধী ধরা পড়বে।’’ এদিকে ঘটনার পর থেকেই বসুন্ধরা রাজে সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছে কংগ্রেস। রাজস্থান প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি সচিন পায়লট বলেন, ‘‘সরকারের অপদার্থতার জন্যই রাজ্যে ধর্ষণের মতো ঘটনা বাড়ছে। আইন-শৃঙ্খলার বালাই নেই। তাই দুষ্কৃতীরাও আরামে ঘুরে বেড়াচ্ছে, আর দুষ্কর্ম করে বেড়াচ্ছে।’’
এ বছরের ফেব্রুয়ারিতেও প্রায় একই ধরনের ঘটনা ঘটেছিল এই ঝালওয়ারে। ছ’বছরের শিশুকে বাড়ির পাশেই চাষের জমিতে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছিল। তার পর সামনে এসেছে কাঠুয়া, উন্নাওয়ের মতো ঘটনা। দেশ জুড়ে প্রতিবাদ-বিক্ষোভের মুখে সংশোধন করে কঠোরতম হয়েছে শিশু ধর্ষণ আইন। সাজা হয়েছে ফাঁসি। কিন্তু তার পরেও থামেনি শিশু ধর্ষণ বা মৃত্যু।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy