Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪
National News

ভারতে স্বাভাবিক মৃত্যুর সবচেয়ে বড় কারণ বায়ুদূষণ, বলছে সমীক্ষা

স্টেট অব গ্লোবাল এয়ার রিপোর্ট (‘সোগা’) এই উদ্বেগজনক খবর দিয়েছে।

বায়ুদূষণ মৃত্যুর প্রধান কারণ হয়ে উঠেছে। -ফাইল ছবি।

বায়ুদূষণ মৃত্যুর প্রধান কারণ হয়ে উঠেছে। -ফাইল ছবি।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০২০ ১৫:৫০
Share: Save:

বায়ুদূষণই ভারতে স্বাভাবিক মৃত্যুর সবচেয়ে বড় কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তার ফলে স্ট্রোক, হৃদরোগ, ডায়াবিটিস, ফুসফুসের ক্যানসার ও ফুসফুসের নানা ধরনের রোগ যে শুধুই প্রাপ্তবয়স্কদের মৃত্যুর প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে, তা-ই নয়; সদ্যোজাতদের মৃত্যুরও অন্যতম কারণ হয়ে উঠেছে বায়ুদূষণ। শুধু বায়ুদূষণের জন্যই গত বছর ভারতে মৃত্যু হয়েছে ১৬ লক্ষ ৬৭ হাজার মানুষের।

এ বছরের স্টেট অব গ্লোবাল এয়ার রিপোর্ট (‘সোগা’) এই উদ্বেগজনক খবর দিয়েছে। জানিয়েছে, গত বছর এ দেশে ১৬ লক্ষেরও বেশি মানুষের মৃত্যুর প্রধান কারণ হয়েছে ঘরে ও বাইরের বায়ুদূষণ। বুধবার প্রকাশিত ওই রিপোর্ট বলছে ভারতে শিশু ও প্রাপ্তবয়স্কদের মৃত্যুতে সবচেয়ে ব়়ড় কারণ হয়েছে বায়ুদূষণ।

কোভিড-সহ নানা ধরনের সংক্রমণ ছড়াতে বায়ুদূষণের ভূমিকা নিয়ে যখন বিশ্বজুড়ে আলোচনা চলছে তখন এই রিপোর্ট আমাদের উদ্বেগ আরও বাড়িয়ে তুলল।

বায়ুদূষণের জন্য ভারতে গত বছর কোন কোন রোগে মৃত্যুর হার ছিল কতটা রিপোর্টে তা-ও জানানো হয়েছে। তাতে দেখা যাচ্ছে প্রায় ৬০ শতাংশ ভারতীয়ের মৃত্যু হয়েছে ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজঅর্ডার (সিওপিডি)-এ। ৪৩ শতাংশের মৃত্যু হয়েছে লোয়ার রেসপিরেটরি ইনফেকশনে। ৩৫ শতাংশের মৃত্যু হয়েছে ইসকিমিক স্ট্রোকে আর ৩২ শতাংশের মৃত্যুর কারণ হয়েছে ফুসফুসের ক্যানসার ও অন্যান্য হৃদরোগ।

আরও পড়ুন: পুজো-রায় পুনর্বিবেচনার আর্জি নিয়ে হাইকোর্টে উদ্যোক্তারা

আরও পড়ুন: শহরের জঙ্গলে ফিরে আসুক দামা আর বসন্ত বউরি পাখিদের ডাক

যা আরও উদ্বেগের তা হল, বায়ুদূষণ এ দেশে শিশুমৃত্যুরও অন্যতম প্রধান কারণ হয়ে উঠেছে। রিপোর্ট জানাচ্ছে ঘরে ও বাইরের বায়ুদূষণের জন্য গত বছর ২১ শতাংশ সদ্যোজাতের মৃত্যু হয়েছে। সংখ্যাটা ১ লক্ষ ১৬ হাজার।

বিষ বাড়ছে বাতাসে। -ফাইল ছবি।

গর্ভাবস্থায় থাকা মহিলারা বায়ুদূষণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। তার খেসারত দিতে হচ্ছে সদ্যোজতদের। জন্মের সময় শিশুদের ওজন নির্ধারিত মানের অনেক কম হচ্ছে। নির্ধারিত সময়ের অনেক আগেই শিশুদের জন্ম হচ্ছে। তার ফলে নানা ধরনের শারীরিক জটিলতা নিয়েই জন্ম হচ্ছে শিশুদের।

হেল্থ এফেক্টস ইনস্টিটিউটের প্রেসিডেন্ট ড্যান গ্রিনবওম বলেছেন, ‘‘শিশুস্বাস্থ্যই সমাজের ভবিষ্যত। কিন্তু সাম্প্রতিক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে বিশেষ করে দক্ষিণ এশিয়া এবং সহরা মরুভূমি সংলগ্ন আফ্রিকার দেশগুলির শিশুরাই বায়ুদূষণের শিকার বেশি হচ্ছে।’’

এর আগে কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন সমীক্ষাতেও দেখা গিয়েছে এ দেশে প্রতি ৮টি স্বাভাবিক মৃত্যুর ১টিরই কারণ বায়ুদূষণ। ২০১৭ সালে ৭০ বছর বয়সের কম যাঁদের মৃত্যু হয়েছিল (১২ লক্ষ ৪০ হাজার জন) ভারতে তাঁদের অর্ধেকেরও বেশি মানুষের মৃত্যুর প্রধান কারণ ছিল বায়ুদূষণ।

রিপোর্ট জানাচ্ছে ২০১০ থেকে ২০১৯, এই ১০ বছরে যখন বিশ্বের অন্যত্র দূষণকণা (পিএম ২.৫)-র সঙ্গে জনসংখ্যার সংস্পর্শ কিছুটা হলেও কমার ইঙ্গিত মিলেছে তখন দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, পূর্ব এশিয়া, দক্ষিণ এশিয়া, ওশিয়ানিয়া ও আফ্রিকার দেশগুলিতে তা প্রতি ঘন মিটার বাতাসে সাড়ে ৬ গ্রাম মাইক্রোগ্রাম করে বেড়ে গিয়েছে গত এক দশকে। প্রায় একই অবস্থা বাংলাদেশ ও নাইজিরিয়ার। তবে চিন, তুরস্ক, ব্রাজিল, মেক্সিকো ও ইরানে পরিস্থিতি আগের চেয়ে কিছুটা ভাল হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE