Advertisement
E-Paper

রাজস্থানের গ্রামে কাশ্মীরের ‘আমিরি’ শিক্ষা

শুধু কাশ্মীরের অনন্তনাগের যুবকের সাফল্যই নয়, অতহরের সঙ্গে সে বার আইএএস-এ শীর্ষ স্থানে থাকা টিনা ডাবি-র ঘনিষ্ঠতা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়া তখন তোলপাড়।

অন্বেষা দত্ত

শেষ আপডেট: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৩:১৬
পড়ুয়াদের সঙ্গে অতহর আমির খান। ছবি ফেসবুক থেকে।

পড়ুয়াদের সঙ্গে অতহর আমির খান। ছবি ফেসবুক থেকে।

অতহর আমির খান। বছর চারেক আগে শিরোনামে এসেছিল নামটা। ২০১৫ সালের আইএএস পরীক্ষায় তিনি ছিলেন দ্বিতীয় স্থানে। শুধু কাশ্মীরের অনন্তনাগের যুবকের সাফল্যই নয়, অতহরের সঙ্গে সে বার আইএএস-এ শীর্ষ স্থানে থাকা টিনা ডাবি-র ঘনিষ্ঠতা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়া তখন তোলপাড়। গত বছর বিয়ে করেছেন অতহর-টিনা। দু’জনেই রাজস্থান ক্যাডারের অফিসার। সাব ডিভিশনাল ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে তাঁরা কাজ করেন ভিলওয়ারা জেলায়।

২৬ বছরের এই কাশ্মীরি যুবক এখন রাজস্থানের বদনোর মহকুমার দায়িত্বে। অনেক দিন ধরেই গ্রামের প্রাথমিক স্কুলগুলোর সমস্যা তাঁকে ভাবিয়েছে। এলাকায় ঘুরে তিনি দেখেছিলেন, স্কুলগুলোয় পড়ুয়ারা মাটিতে বসে কোলে বইখাতা রেখে পড়াশোনা করে। বেঞ্চ বা ডেস্ক নেই। সম্প্রতি স্থানীয় প্রশাসনের সাহায্যে এই মহকুমার সব প্রাথমিক স্কুলে বাচ্চাদের জন্য বড় বড় ডেস্কের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন তিনি। সঙ্গে বসার জন্য কার্পেট। অন্তত ডেস্কে খাতা রেখে লিখতে পারছে পড়ুয়ারা। তাদের সঙ্গে বসে ছবি তুলে অতহর তা শেয়ার করেছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। ইনস্টাগ্রামে যে ছবির লাইক কুড়ি হাজার ছাড়িয়েছে। কমেন্টেও এসেছে সাধুবাদ।

পড়ুয়ারা কী ভাবে পড়াশোনা করছে, গ্রামের বাসিন্দাদের তা দেখাতেও নিয়ে এসেছিলেন অতহর। ভেবেছিলেন, বাসিন্দাদের বলবেন, সকলে উদ্যোগী হলে এই কাজ ছড়িয়ে দেওয়া যেতে পারে। অতহরকে সে সুযোগই দেননি বাসিন্দারা। অনেকেই নিজে থেকে সাব ডিভিশনাল ম্যাজিস্ট্রেটকে বলেছেন, আরও শিশু এই সুবিধা পেলে বড় ভাল হয়। তাঁরা সব রকম সাহায্য করতে চান। কাশ্মীরের ছেলেকে ধন্য ধন্য করছেন তাঁরা। শনিবার ফোনে অতহর বললেন, ‘‘আমার পিওনও এগিয়ে এসেছেন। যে যাঁর সাধ্যমতো টাকা দিয়েছেন। এত টাকা উঠবে আমরা ভাবিনি। এ বার অনেক স্কুলেই এই ব্যবস্থা করা যাবে।’’ গ্রামবাসীদের সহায়তায় আগামী ১৫ দিনে সাড়ে চার হাজার শিশুর ক্লাসঘরে পৌঁছে যাবে এই ডেস্ক, জানাচ্ছেন অতহর। তৃপ্ত অফিসার সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন, একজোট হয়ে কিছু করতে পারলে সব সমস্যাই তুচ্ছ! গ্রামে গ্রামে মেয়েদের শিক্ষার প্রসার এবং বাল্যবিবাহ প্রতিরোধও তাঁর লক্ষ্য।

জম্মু-কাশ্মীরের পুলওয়ামায় ৪৯ জন সিআরপিএফ জওয়ান নিহত হওয়ার পর থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে কাশ্মীরিদের উপরে নিগ্রহের খবর এসেছে। এই পরিস্থিতিতে কাজ করা কতটা কঠিন? অতহর বললেন, ‘‘দেখুন, অনেক রকম অবস্থা তৈরি হয়। অনেক কিছুর মুখোমুখি হতে হয়। কিন্তু দিনের শেষে কাজটাই সব। আপনিও তো আমার কাজের কথা শুনেই ফোন করেছেন।’’

টিনার সঙ্গে সম্পর্কের কথা সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘোষণা করার পরও উস্কানিমূলক মন্তব্য এবং হুমকির মুখে পড়েছিলেন এই দম্পতি। তবে পিছু হটেননি। তার পরে রাজস্থানে কাজ করতে গিয়ে কোনও অসুবিধা? অতহর বলেন, ‘‘আমার অন্তত তেমন অভিজ্ঞতা হয়নি। সোশ্যাল মিডিয়াও কাজের জায়গা হোক। তা হলে অনেক সমস্যা উবে যাবে।’’

Athar Aamir Khan Rajasthan Desk Carpet Primary School IAS
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy