নীতীশ কুমার। ছবি: পিটিআই।
বিহারের ভোটে এ বার অদৃশ্য প্রতিদ্বন্দ্বী লালু প্রসাদকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করে বসলেন মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার! পাল্টা জবাব এল লালুর তরফ থেকেও। তবে তা পুরোপুরি রাজনৈতিক।
বুধবার সারণের পারসায় নীতীশের সভামঞ্চে হাজির ছিলেন লালুর বেয়াই তথা ওই কেন্দ্রের জেডিইউ প্রার্থী চন্দ্রিকা রাই এবং তাঁর কন্যা ঐশ্বর্যা। লালু-পুত্র তেজপ্রতাপ যাদবের স্ত্রী ঐশ্বর্যাকে নিয়ে লালুর পরিবারে অশান্তির খবর নতুন নয়। কিন্তু এ নিয়ে প্রকাশ্যে কেউই মন্তব্য করেননি। বুধবার নীতীশ বক্তৃতা শুরু করতেই জনতার একাংশ আচমকা ‘লালু জিন্দাবাদ’ ধ্বনি দিতে শুরু করেন। এতেই ধৈর্যচ্যুতি হয় নীতীশের। তিনি ঐশ্বর্যার প্রসঙ্গ টেনে জনতার উদ্দেশে বলেন, ‘‘উনি একজন শিক্ষিতা মহিলা। ওঁর সঙ্গে যা হয়েছে, তা কেউ ভাল ভাবে নেননি। আমি ওঁদের বিয়েতে গেছি, কিন্তু তার পরে যা হয়েছে তাতে লজ্জাবোধ হয়েছে।’’
পশুখাদ্য কেলেঙ্কারির মামলায় লালু এখনও জেলে। তবু তাঁরই দল আরজেডি-র নেতৃত্বাধীন জোটকে নিয়ে রীতিমতো উদ্বেগে নীতীশ-বিজেপি। লালু-পুত্র তেজস্বীর প্রতিটি সভায় জনস্রোত চাপ বাড়াচ্ছে নীতীশদের। এই অবস্থায় জেডিইউ-প্রধানের এমন মন্তব্যে বিস্মিত অনেকেই। তাঁদের বক্তব্য, প্রাথমিক ভাবে কয়েকটি সমীক্ষায় তাঁরই ফের মুখ্যমন্ত্রীর গদিতে বসা নিশ্চিত দেখালেও নীতীশ কুমার বোধহয় খুব নিশ্চিন্তে থাকতে পারছেন না। টানা ১৫ বছরের প্রতিষ্ঠানবিরোধিতার সঙ্গেই রয়েছে, পরিযায়ী শ্রমিক, বেকারি-শিক্ষা-স্বাস্থ্য-সহ একাধিক বিষয় নিয়ে বিহারবাসীর ক্ষোভ। এই বিষয়গুলি নিয়ে নিত্য দিন সরব হয়ে জনস্রোতে ভাসছেন লালু-পুত্র। তাতেই কি চাপে পড়ে গেছেন নীতীশ, উঠছে প্রশ্ন। এর মধ্যেই তেজস্বী নীতীশকে বিঁধতে গিয়ে তাঁকে ‘মানসিক ভাবে ক্লান্ত’ বলেছেন। বৃহস্পতিবার এক সভায় সেই প্রসঙ্গ টেনে গত লোকসভা ভোটে হারের পরে তেজস্বীর দিল্লি-যাত্রীকে কটাক্ষ করেছেন নীতীশ। তার মধ্যেই এ দিন মুখ খুলে নীতীশকে বিঁধেছেন লালু। ২০১৫-র বিধানসভা ভোটের আগে বিজেপির সঙ্গ ছেড়ে লালুর দলের সঙ্গেই হাত মিলিয়ে মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন নীতীশ। আরজেডি-র আসনসংখ্যা বেশি হলেও লালু মুখ্যমন্ত্রী পদ ছেড়ে দেন জেডিইউ-প্রধানকে। তাঁর ছেলে তেজস্বী উপ-মুখ্যমন্ত্রী হন। কিন্তু দু’বছরের মধ্যেই লালুকে ছেড়ে পুরনো জোটসঙ্গী বিজেপির হাত ধরে নীতীশ বিহারে সরকার গড়েন। উপ মুখ্যমন্ত্রী হন বিজেপির সুশীল মোদী। নীতীশের সেই আচরণের প্রসঙ্গ সরাসরি না টেনেও তাঁকে এবং সুশীল মোদীকে খোঁচা দিয়ে টুইটারে লালু লিখেছেন, ‘‘মুখ্য-মৌকা (সুযোগ) মন্ত্রীজি ও উপ মুখ্য-ধোঁকা (প্রতারণা) মন্ত্রীজি, জনগণ আপনাদের অনেক সুযোগ দিয়েছে। আপনারা ধোঁকা দিয়েছেন!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy