Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

গেরুয়া শিবিরে শবরী-দ্বন্দ্ব, যাচ্ছেন অমিত

শবরীমালা-বিতর্কে এ বার মাথাচাড়া দিল সঙ্ঘ পরিবারের সঙ্গে বিজেপির রাজ্য নেতৃত্বের দ্বন্দ্ব। মতবিরোধের জেরেই আরএসএস পরিচালিত বিক্ষোভ কর্মসূচি থেকে সরে দাঁড়াতে চাইছে রাজ্য-বিজেপি।

বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ।— ফাইল চিত্র।

বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ।— ফাইল চিত্র।

সন্দীপন চক্রবর্তী
শেষ আপডেট: ১৫ জানুয়ারি ২০১৯ ০৩:১২
Share: Save:

শবরীমালা-বিতর্কে এ বার মাথাচাড়া দিল সঙ্ঘ পরিবারের সঙ্গে বিজেপির রাজ্য নেতৃত্বের দ্বন্দ্ব। মতবিরোধের জেরেই আরএসএস পরিচালিত বিক্ষোভ কর্মসূচি থেকে সরে দাঁড়াতে চাইছে সে রাজ্যের বিজেপি। বিরোধের রিপোর্ট গিয়েছে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের কাছেও। আপাতত দলের রাজ্য নেতৃত্বের প্রতি শাহের পরামর্শ, প্রকাশ্যে এমন কোনও কাজ করা উচিত হবে না যাতে ঘরের বিরোধ বাইরে বেরিয়ে আসে। তিনি কেরলে গিয়ে আলোচনা করেই যা চূড়ান্ত করার, করবেন।

আয়াপ্পা দর্শনে মহিলাদের প্রবেশের প্রতিবাদে লাগাতার ধর্না-বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছে শবরীমালা কর্মসমিতি। সঙ্ঘ-প্রভাবিত এই সংগঠনের বিক্ষোভেই সামিল হচ্ছিলেন বিজেপির নেতা-কর্মীরা। কিন্তু ক্রমেই যাবতীয় কর্মসূচির নিয়ন্ত্রণ সঙ্ঘের হাতে চলে যাওয়ায় ক্ষোভ জমতে শুরু করে বিজেপির অন্দরে। ধর্না-অবস্থান প্রথমে শবরীমালা মন্দিরের কাছে শুরু হলেও পরে তা তিরুঅনন্তপুরমে রাজ্য সচিবালয় চত্বরে নিয়ে গিয়েছে কর্মসমিতি। বিজেপির রাজ্য নেতৃত্বের বড় অংশের প্রশ্ন, মন্দিরকে ঘিরে কর্মসমিতি তাদের প্রতিবাদ চালাতেই পারে। কিন্তু সচিবালয়ের সামনে ধর্না বা বিক্ষোভ পুরোদস্তুর রাজনৈতিক কর্মসূচি। বিজেপির সঙ্গে আলোচনা ছাড়াই রাজনৈতিক কর্মসূচি কেন নেবে সঙ্ঘের সংগঠন? এই ক্ষোভ থেকেই অনির্দিষ্ট কাল ধর্না থেকে সরে দাঁড়ানোর পক্ষে দলের অন্দরে সওয়াল করছেন কেরল বিজেপির অধিকাংশ নেতা।

দিল্লিতে দলের জাতীয় পরিষদের বৈঠকে যোগ দিতে গিয়েছিলেন কেরল বিজেপির নানা স্তরের নেতারা। দলীয় সূত্রের খবর, সেই বৈঠকের অবসরেই শাহের সঙ্গে আলাদা করে কথা হয়েছে কেরল বিজেপি নেতৃত্বের। ঠিক হয়েছে, আগামী ২১ জানুয়ারি শাহ নিজেই কেরলে যাবেন। তখন সঙ্ঘ ও বিজেপি দু’পক্ষকেই ডেকে তাদের যুক্তি, পাল্টা যুক্তি শুনবেন তিনি। লোকসভা ভোটের আগে কেরলের মতো রাজ্য থেকে রাজনৈতিক ফায়দা পেতে মরিয়া বিজেপি শবরী-অস্ত্রকে কাজে লাগানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল আগেই। রাজ্য নেতাদের কাছ থেকে সমস্যার কথা শুনে শাহ তাঁদের পরামর্শ দিয়েছেন ‘হঠকারী’ কোনও পদক্ষেপ এখনই না নিতে।

আরও পড়ুন: মোদীর হেলিপ্যাডের জন্য গাছ কাটার নালিশ

বিজেপি সূত্রের ইঙ্গিত, শাহের পরবর্তী নির্দেশ না পাওয়া পর্যন্ত তারা কর্মসমিতির ধর্নায় নাম-কা-ওয়াস্তে যোগদান চালিয়ে যেতে পারে। তবে দলের প্রথম সারির রাজ্য নেতারা তাতে থাকবেন না। কেরল বিজেপির রাজ্য সভাপতি পি এস শ্রীধরন পিল্লাইয়ের বক্তব্য, ‘‘শবরীমালা নিয়ে গোটা পরিস্থিতি সম্পর্কে সর্বভারতীয় সভাপতিকে জানানো হয়েছে। তাঁর নির্দেশ মতোই পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক হবে। তিনি নিজেও রাজ্যে আসবেন।’’

কর্মসমিতির সাধারণ সম্পাদক এস জে আর কুমার অবশ্য জানিয়েছেন, তাঁদের অবস্থান-বিক্ষোভ চলবে। মাতা অমৃতানন্দময়ী, শ্রীশ্রী রবিশঙ্করের মতো ধর্মীয় ব্যক্তিত্বদের এনে সমাবেশেরও পরিকল্পনাও রয়েছে তাঁদের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

BJP -RSS
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE