Advertisement
E-Paper

‘মার মার করে ওরা ছুটে আসছিল, প্রাণ বাঁচাতে স্যরকে ছেড়েই পালাই’

ঠিক তখনই পিছনের আখ গাছের আড়াল থেকে ছুটে আসতে শুরু করল একটার পর একটা পাথর, ইট। ঘায়েল হলেন সাব-ইনস্পেক্টর সুবোধ কুমার সিংহ। তারপর?

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ০৪ ডিসেম্বর ২০১৮ ১২:৫৮
আগুন জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে পুলিশের গাড়িতে। ইনসেটে সাব-ইনস্পেক্টরের গাড়ির চালক রাম আশরে। ছবি: সংগৃহীত।

আগুন জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে পুলিশের গাড়িতে। ইনসেটে সাব-ইনস্পেক্টরের গাড়ির চালক রাম আশরে। ছবি: সংগৃহীত।

বুলন্দশহরের স্যানা মহকুমা এলাকায় মাহু গ্রামের বাইরে জঙ্গল লাগোয়া মাঠটিও তখন জঙ্গল। মানুষের জঙ্গল। প্রতিটা মানুষের চোখ-মুখে আগুন ছুটছে। ক্ষিপ্ত-উন্মত্ত জনরোষের সামনে নিতান্ত অসহায় গুটিকয়েক পুলিশ অবরোধকারীদের শান্ত করার চেষ্টা করছে। আর ঠিক তখনই পিছনের আখ গাছের আড়াল থেকে ছুটে আসতে শুরু করল একটার পর একটা পাথর, ইট। ঘায়েল হলেন ইনস্পেক্টর সুবোধ কুমার সিংহ। তারপর?

তারপরের ঘটনাটা আরও ভয়ানক। বলতে গিয়েও শিউরে উঠলেন পুলিশের গাড়ির চালক রাম আশরে। ওই সময় রামও ঘটনাস্থলেই ছিলেন। নিহত ইনস্পেক্টর সুবোধ কুমারকে গাড়ি চালিয়ে তিনিই ওই এলাকায় নিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু ফিরতি পথে আর ইনস্পেক্টরকে বাঁচিয়ে ফেরাতে পারেননি। প্রাণে বাঁচতে ঘায়েল ইনস্পেক্টরকে গাড়িতে ফেলেই পালিয়ে গিয়েছিলেন বাধ্য হয়ে।

পরে অবশ্য স্থানীয় কিছু লোকের সাহায্যে তিনিই গাড়ি চালিয়ে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যান। তবে মাথা ফুঁড়ে যাওয়া বুলেট থেকে আর রক্ষা পাননি। হাসপাতালেই মৃত্যু হয় তাঁর।

আরও পড়ুন: গো-হত্যার গুজবে উত্তপ্ত বুলন্দশহর, বিক্ষোভের বলি ইনস্পেক্টর-সহ ২

নিহত সাব ইনস্পেক্টর সুবোধ কুমার সিংহ। ছবি: পিটিআই।

প্রত্যক্ষদর্শী রাম পরে সাংবাদিকদের ঘটনাটা বিশদে বলেন। রাম বলেন, ‘পাথরের আঘাতে ইনস্পেক্টর সুবোধ কুমার অচৈতন্য হয়ে যান। বাউন্ডারি দেওয়ালে গা ঘেঁষে পড়েছিলেন। আমি একটু দূরে ছিলাম তাঁর থেকে। সঙ্গে ছিলেন আর দুই পুলিশ সহকর্মী। তাঁকে পড়ে থাকতে দেখে আমি ছুটে যাই। সাড়হীন শরীরটাকে কোনওরকমে ধরে গাড়িতে তুলি। কিন্তু ইঞ্জিন চালু করার সুযোগই পেলাম না। কোত্থেকে কারা যেন মার মার করে ছুটে এল গাড়ির চারপাশে। পাথর ছুড়তে শুরু করল। গাড়িতে আগুন ধরানোর চেষ্টা হল। আমাদের লক্ষ্য করে আখ বন থেকে গুলিও ছুটে আসছিল। তখন নিজের জীবনটাই সবচেয়ে বড় হয়ে উঠেছিল আমার কাছে। প্রচণ্ড ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। গাড়ি থেকে লাফিয়ে নেমে ছুটে পালাই। গাড়ির ভিতরে তখনও অচৈতন্য হয়ে পড়ে রয়েছেন স্যর।’

আরও পড়ুন: দানবটা এ বার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে

সে সময়টা ইনস্পেক্টরের সঙ্গে কী হয়েছিল রাম জানেন না। পরে স্থানীয় কিছু মানুষ তাঁকে গাড়িতে ফিরে আসতে সাহায্য করেন। কাঁপতে কাঁপতেই গাড়ি নিয়ে রওনা দেন। কিন্তু তখন অনেকটাই দেরি হয়ে গিয়েছে। হাসপাতালে চিকিৎসা চলাকালীনই তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। এক্স-রে রিপোর্টে ধরা পড়ে, তাঁর মাথা ফুঁড়ে গিয়েছে একটি বুলেট।

Cow Slaughter Bulandshahr Uttar Pradesh
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy