Advertisement
E-Paper

স্পেশাল ট্রেনে বিপুল ভাড়া, নিশানায় রেল

গত কালই ৩০ জুন পর্যন্ত সমস্ত ট্রেনের টিকিট বাতিল করার কথা জানিয়েছে রেল।

অনমিত্র সেনগুপ্ত

শেষ আপডেট: ১৬ মে ২০২০ ০৪:৪৩
ছবি পিটিআই।

ছবি পিটিআই।

টিকিটের চাহিদা প্রবল। তাই প্রথম দফায় না নিলেও যাত্রী চাহিদার কথা মাথায় রেখে দেশের ১৫টি স্থানের উদ্দেশে দৌড়নো স্পেশাল ট্রেনগুলিতে ‘ডায়নামিক ফেয়ার’-এর নামে বাড়তি ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ উঠল রেলের বিরুদ্ধে। এর ফলে নয়াদিল্লি থেকে হাওড়াগামী এসি স্পেশাল ট্রেনের ভাড়া শুরুর দিনের তুলনায় এক ধাক্কায় ৬৮৮ টাকা বেড়ে গিয়েছে। লকডাউনের সময়ে যখন রুটি-রুজি নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে, তখন ঘরে ফিরতে মরিয়া যাত্রীদের কাছ থেকে বাড়তি টাকা নেওয়ায় প্রশ্নের মুখে রেলের ভূমিকা।

গত কালই ৩০ জুন পর্যন্ত সমস্ত ট্রেনের টিকিট বাতিল করার কথা জানিয়েছে রেল। বলা হয়েছে আপাতত কেবল শ্রমিক ও সাধারণ যাত্রীদের কথা ভেবে যাত্রী স্পেশাল ট্রেন চালানো হবে। যে পরিষেবা শুরু হয়েছে ১২ মে থেকে। আপাতত সাত দিন করে টিকিট বিক্রি করছে রেল। কিন্তু তাতেই দেখা যাচ্ছে, ১৩ মে নয়াদিল্লি থেকে হাওড়াগামী ট্রেনের বাতানুকূল তৃতীয় শ্রেণির যে ভাড়া ছিল ১৯০০ টাকার কাছাকাছি, আজ তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২,৬২০ টাকা! আইআরসিটিসি-র ওয়েবসাইট অনুযায়ী ভাড়ার যে বিভাজন দেওয়া হয়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে ৬৮৮ টাকা নেওয়া হয়েছে কেবল ‘ডায়নামিক ফেয়ার’ হিসেবে। সে ক্ষেত্রে ভাড়া হয় ২৬১৮। কিন্তু সেই ভাড়াকে পাঁচের গুণিতকে ‘রাউন্ড অফ’ করে সব মিলিয়ে নেওয়া হচ্ছে ২৬২০ টাকা। শুধু হাওড়ামুখী গাড়ি নয়, ডিব্রুগড়গামী যে বিশেষ এসি ট্রেন চলছে, দিল্লি থেকে পটনা পর্যন্ত তার বাতানুকূল তৃতীয় শ্রেণিতে গত ১৫ মে ভাড়া ছিল ১৫২০ টাকা। যা বেড়ে এখন দাঁড়িয়েছে ২০৯০ টাকা। যার মধ্যে ডায়নামিক ভাড়ার জন্য বেড়েছে ৫৪৪ টাকা।

সরাসরি ভাড়া বাড়াতে না পেরে ২০১৫ সালেই ঘুরপথে টিকিটের উপরে ‘ডায়নামিক ফেয়ার’ চালু করার সিদ্ধান্ত নেয় নরেন্দ্র মোদী সরকার। এই পদ্ধতিতে কিছু বাছাই ট্রেনে প্রথম দশ শতাংশ টিকিট বিক্রি হওয়ার পরেই স্বয়ংক্রিয় ভাবে টিকিটির দাম বেড়ে যেতে থাকে। এর ফলে গত পাঁচ বছরে টিকিটের দাম সরাসরি না বাড়লেও ঘুরপথে অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। এতে রেলের ঘরে বাড়তি অর্থ এলেও বাতানুকূল দ্বিতীয় শ্রেণি তো বটেই, কোনও কোনও ক্ষেত্রে বাতানুকূল তৃতীয় শ্রেণির টিকিটের দামও বিমানের দামের সঙ্গে তুল্যমূল্য হওয়ায় বাতানুকূল শ্রেণিতে যাত্রী হারাতে শুরু করেছিল রেল। বিষয়টি নিয়ে চিন্তায় পড়ে যান রেলকর্তারা। এখন প্রায় দু’মাস ধরে বন্ধ রয়েছে রেলের যাত্রী পরিবহণ। ফলে ওই খাত থেকে আয়ের লক্ষ্যে বাড়ি ফিরতে মরিয়া যাত্রীদের কাছ থেকে বাড়তি টাকা আদায় করতে রেল পিছপা হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠছে।

আরও পড়ুন: বাঁকেই বিপদ, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে কলকাতা-সহ ৭ জেলা ভাসবে বৃষ্টিতে​

আরও পড়ুন: কেউ রাস্তায় হাঁটলে আদালত থামাবে কী করে? পরিযায়ী শ্রমিক নিয়ে মামলায় বলল শীর্ষ আদালত​

পাল্টা যুক্তিতে রেলের দাবি, শুরু থেকেই বলা হয়েছে ওই ট্রেনগুলিতে রাজধানী ধাঁচের ভাড়া লাগবে। রাজধানী ধাঁচের ভাড়ার মধ্যে ডায়নামিক ফেয়ার-ও অন্তর্ভুক্ত থাকে। সেই কারণে ওই বাড়তি অর্থ নেওয়া হচ্ছে। যদিও শুরুর দিন থেকে কেন ডায়নামিক ফেয়ার নেওয়া হল না, তা নিয়ে মুখ খোলেনি রেল। তবে রেলের একটি সূত্রের দাবি, করোনা-সঙ্কটে বিশেষ পরিষেবা দিচ্ছে রেল। চালানো হচ্ছে বিশেষ ট্রেন। যাঁদের জরুরি প্রয়োজন রয়েছে, একেবারে না গেলেই নয়, তাঁদের কথা ভেবেই ওই পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে। আমজনতার কথা ভেবে ওই পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে না। এমনকি আমজনতা যাতে প্রয়োজন ছাড়া ট্রেনে না চড়েন, তাই তাঁদের নিরুৎসাহিত করতেই রাজধানীর ধাঁচে ভাড়া ধার্য করা হয়েছে।

Coronavirus Lockdown Indian Railways
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy