Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus India Update

২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত প্রায় ২১ হাজার, সুস্থও সর্বাধিক

এই প্রথম ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্তের সংখ্যা ২০ হাজার টপকে গেল। এক দিনে এত সংখ্যক মানুষ এর আগে সংক্রমিত হননি।

দেশে মোট করোনা আক্রান্ত হলেন ছ’লক্ষ ২৫ হাজার ৫৪৪ জন। গ্রাফিক- শৌভিক দেবনাথ।

দেশে মোট করোনা আক্রান্ত হলেন ছ’লক্ষ ২৫ হাজার ৫৪৪ জন। গ্রাফিক- শৌভিক দেবনাথ।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৩ জুলাই ২০২০ ১০:২৩
Share: Save:

ধারাবাহিক ভাবে বেড়ে চলেছে ভারতে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা। বৃহস্পতিবারই দেশের মোট আক্রান্ত ছয় লক্ষ পেরিয়েছিল। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় ২০ হাজার ৯০৩ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন। এই প্রথম ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্তের সংখ্যা ২০ হাজার টপকে গেল। এক দিনে এত সংখ্যক মানুষ এর আগে সংক্রমিত হননি। এ নিয়ে দেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা হল ছ’লক্ষ ২৫ হাজার ৫৪৪ জন।

আক্রান্ত বৃদ্ধির পাশাপাশি দেশে মোট মৃত্যু ১৮ হাজার পার করল। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তথ্য অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ৩৭৯ জনের প্রাণ কেড়েছে করোনা। এ নিয়ে দেশে মোট মৃত্যু হল ১৮ হাজার ২১৩ জনের। এর মধ্যে মহারাষ্ট্রেই মৃত্যু হয়েছে আট হাজার ১৭৮ জনের। রাজধানী দিল্লিতে মৃত্যু ধারাবাহিক ভাবে বেড়ে হয়েছে দু’হাজার ৮৬৪। তৃতীয় স্থানে থাকা গুজরাতে মারা গিয়েছেন এক হাজার ৮৮৬ জন। গত মাসের শেষ দিক থেকে তামিলনাড়ুতেও ধারাবাহিক ভাবে বাড়ছে করোনার জেরে প্রাণহানি। যার জেরে দক্ষিণের এই রাজ্যে মোট মৃত এক হাজার ৩২১ জন। উত্তরপ্রদেশ (৭৩৫), পশ্চিমবঙ্গ (৬৯৯) ও মধ্যপ্রদেশে (৫৮৯) মৃত্যুর সংখ্যাও উল্লেখযোগ্য। এ ছাড়া শতাধিক মৃত্যুর তালিকায় রয়েছে রাজস্থান (৪৩০), তেলঙ্গানা (২৭৫), কর্নাটক (২৭২), হরিয়ানা (২৫১), অন্ধ্রপ্রদেশ (১৯৮), পঞ্জাব (১৫২) ও জম্মু ও কাশ্মীর (১১৫)।

আক্রান্ত দ্রুত হারে বাড়লেও, ভারতে করোনা রোগীর সুস্থ হয়ে ওঠার পরিসংখ্যানটাও বেশ স্বস্তিদায়ক। এখন দেশে সুস্থ হয়ে ওঠা করোনা রোগীর সংখ্যা সক্রিয় করোনা আক্রান্তের (মোট আক্রান্ত থেকে মৃত ও সুস্থ হয়ে ওঠা বাদ দিয়ে) সংখ্যার চেয়ে বেশি। দেশে মোট আক্রান্তের অর্ধেকেরও বেশি সুস্থ হয়ে উঠেছেন। সুস্থ হওয়ার সংখ্যাটা চার লক্ষের দিকে এগচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ২০ হাজার ৩২ জন সুস্থ হয়েছেন। যা ২৪ ঘণ্টার নিরিখে এখনও অবধি সর্বোচ্চ। এ নিয়ে মোট তিন লক্ষ ৭৯ হাজার ৮৯২ জন করোনার কবল থেকে মুক্ত হলেন।

৩০ জানুয়ারি কেরলে দেশের প্রথম করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ার পর কেটে গিয়েছে পাঁচ মাস। ধীরে ধীরে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়েছে এই ভাইরাস। কোনও কোনও রাজ্যে তা ভয়ঙ্কর আকার ধারণ করেছে। শুরুর ধাক্কা কাটিয়ে করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধি রুখে দিয়েছিল কেরল। কিন্তু মহারাষ্ট্রে তা বল্গাহীন ভাবেই বেড়েছে। গোড়া থেকেই এই রাজ্য কার্যত সংক্রমণের শীর্ষে ছিল। তার পর সময় যত গড়িয়েছে, এই রাজ্য নিয়ে সারা দেশের শঙ্কা বেড়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ছ’হাজার ৩২৮ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন সেখানে। এ নিয়ে সে রাজ্যে মোট আক্রান্ত হলেন এক লক্ষ ৮৬ হাজার ৬২৬ জন। তামিলনাড়ু ও দিল্লিও পাল্লা দিয়ে এক লক্ষের দিকে এগোচ্ছে। তামিলনাড়ুতে মোট আক্রান্ত ৯৮ হাজার ৩৯২ ও দিল্লিতে ৯২ হাজার ১৭৫ জন। দেশের মোট সংক্রমণের মধ্যে ৬০ শতাংশই এই তিনটি রাজ্য থেকে।

(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।

৩৩ হাজার ৯১৩ সংক্রমণ নিয়ে গুজরাত ও ২৪ হাজার ৮২৫ আক্রান্ত নিয়ে উত্তরপ্রদেশ, চতুর্থ ও পঞ্চম স্থানে আছে। সংক্রমণ বাড়তে বাড়তে কুড়ি হাজারের দিকে ছুটছে পশ্চিমবঙ্গ (১৯,৮১৯), রাজস্থান (১৮,৬৬২), তেলঙ্গানা (১৮,৫৭০) ও কর্নাটক (১৮,০১৬)। অন্ধ্রপ্রদেশ (১৬,০৯৭), হরিয়ানা (১৫,৫০৯), মধ্যপ্রদেশ (১৪,১০৬) ও বিহারেও (১০,৪৭১) বেড়ে চলেছে সংক্রমণ। এর পর ক্রমান্বয়ে রয়েছে অসম, জম্মু ও কাশ্মীর, ওড়িশা, পঞ্জাব, কেরল, ছত্তীসগঢ়, উত্তরাখণ্ড, ঝাড়খণ্ডের মতো রাজ্যগুলি।

লকডাউন উঠে যাওয়ার পর পশ্চিমবঙ্গেও সংক্রমণ বৃদ্ধিটা বেড়েছে। শেষ ক’দিনে দৈনিক বৃদ্ধি ৬০০ পার করছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ৬৪৯ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন এ রাজ্যে। এ নিয়ে রাজ্যে মোট আক্রান্ত হলেন ১৯ হাজার ৮১৯ জন। কোভিডে আক্রান্ত হয়ে মোট ৬৯৯ জনের মৃত্যু হয়েছে রাজ্যে।

(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।

(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে— দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৮ মে-র তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ৪৯৫৬। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ৫২৬৯। তার আগের দু’দিন ছিল ৩৯৭০ এবং ৪৯৮৭। পরের দুদিনের সংখ্যা ছিল ৪৯৪৩ এবং ৫৬১১। ১৬ থেকে ২০ মে, এই পাঁচ দিনের গড় হল ৪৯৫৬, যা ১৮ মে-র চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৯ মে-র চলন্ত গড় হল ১৭ থেকে ২১ মে-র আক্রান্তের সংখ্যার গড়। পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE