মন্ত্রী হচ্ছেন অমিত? জল্পনা তুঙ্গে।
এ বারেও ‘জাম্বো ক্যাবিনেট’।
পাঁচ বছর আগে নরেন্দ্র মোদী নিজেই কথায় কথায় বলতেন, ‘ন্যূনতম সরকার, সর্বোচ্চ প্রশাসন’। তা সত্ত্বেও নিজের মন্ত্রিসভাকে আড়ে-বহরে ছোট রাখতে পারেননি। প্রথমে কম হলেও পরে ধীরে ধীরে মন্ত্রিসভার বহর বাড়িয়ে সত্তর পার করিয়ে দিয়েছেন। এ বারেও সত্তরের কোঠা পেরোতে পারে বলে খোদ বিজেপি সূত্রেই বলা হচ্ছে। তার ভিত্তিতেই রাষ্ট্রপতি ভবনকে শপথের প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে।
সাত নম্বর লোক কল্যাণ মার্গ। প্রধানমন্ত্রীর নিবাস। সেখানেই পাঁচ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে আজ সন্ধ্যা থেকে একান্ত বৈঠক করলেন মোদী ও অমিত শাহ। বৃহস্পতিবার শপথ গ্রহণের আগে মন্ত্রিসভার সদস্যদের নাম চূড়ান্ত করতে।
আর তার থেকে দশ কিলোমিটার দূরে দীনদয়াল উপাধ্যায় মার্গে বিজেপির সদর দফতরে উৎকণ্ঠায় ভুগলেন দলের নেতারা। কার ভাগ্যে শিকে ছিঁড়বে? অমিত শাহ কি এখনই মন্ত্রী হবেন? তা হলে আসন্ন হরিয়ানা-মহারাষ্ট্রে বিধানসভা নির্বাচন বা বছর দুয়েক পরে পশ্চিমবঙ্গের ভোট কে সামলাবেন? মধ্যপ্রদেশ-কর্নাটকে সরকার পড়ে গেলে আগের মতো সক্রিয়তা কে দেখাবেন? আর অমিত শাহ মন্ত্রিসভায় গেলে দলে তাঁর উত্তরসূরিই বা কে হবেন?
বিজেপির এক নেতার কথায়, ‘‘প্রধানমন্ত্রী ক’দিন আগে সংসদের সেন্ট্রাল হলে বলে দিয়েছেন, মন্ত্রিসভা গঠনের জন্য একটি নির্দিষ্ট নিয়ম আছে, তার ভিত্তিতেই সব হবে। সকলকে জায়গা দেওয়া সম্ভব নয়। জাতপাতের সমীকরণ, বিভিন্ন রাজ্যের প্রতিনিধিত্ব ইত্যাদি মাথায় রেখেই গড়া হবে মন্ত্রিসভা। এর সঙ্গেই শরিকদেরও গুরুত্বপূর্ণ জায়গা দেওয়া হবে। পুরনো অনেক মুখও থাকছে। কিন্তু আসল প্রশ্নটি হল, অমিত শাহকে এখনই মন্ত্রিসভায় নিয়ে যাওয়া হবে না কি আরও বছর কয়েক পরে? কারণ, দলের ভার বিশ্বস্ত নেতার হাতে ছেড়েই এই কাজটি করতে হবে মোদী-শাহকে। বিজেপির নিয়ম অনুসারে, এক ব্যক্তি এক পদই হয়। অর্থাৎ, এক সঙ্গে দুটি পদ ধরে রাখা যায়না।’’
গোটা বিজেপি শিবিরের আলোচনা এখন এটাই। অমিত শাহ এখনই মন্ত্রী হলে দলে তাঁর উত্তরসূরি জগৎ প্রকাশ নাড্ডা না কি ধর্মেন্দ্র প্রধান নাকি ভূপেন্দ্র যাদব? না কি নরেন্দ্র সিংহ তোমরের মতো নতুন কোনও মুখ? নাড্ডার নাম গত বারেও আলোচনায় ছিল। আরএসএসের অপছন্দও নয়। কিন্তু উত্তরপ্রদেশের মতো রাজ্যে যে ভাবে ‘যাদব’ ছাড়া অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির ভোট বিজেপি পেয়েছে, তার পর ভুপেন্দ্র যাদবকে সভাপতি করলে ভুল বার্তা যেতে পারে। অমিত এখন মন্ত্রী হলেও রাজনাথ সিংহের গুরুত্ব কমবে না বলেই জানাচ্ছেন বিজেপি নেতারা। হতে পারে, আপাতত রাজনাথকেই আনুষ্ঠানিক ভাবে ‘নম্বর-টু’ রেখে ধাপে ধাপে অমিত শাহের গুরুত্ব বাড়ানো হবে।
অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠকের আগে অবশ্য মোদী আজ সচিবালয়ের শীর্ষ কর্তাদের সঙ্গেও আলোচনা করেন। ভোটের আগেই তিনি পরবর্তী সরকারের একশো দিনের কাজের রূপরেখা তৈরি করতে বলেছিলেন। প্রধানমন্ত্রী সচিবালয় সূত্রের মতে, আজ সেটি নিয়েও সবিস্তার আলোচনা হয়। যেখানে কৃষি ও রোজগার তৈরির উপরেই বিশেষ জোর দেওয়া হয়। সূত্রের মতে, এই বৈঠক গুরুত্বপূর্ণ, কারণ পরের সরকারে কোন ক্ষেত্রে বেশি জোর দেওয়া হবে, তার ভিত্তিতেই মন্ত্রকের ওজন নির্ধারিত হবে। আগামী পাঁচ বছরে মোদীকেই কৃষকের আয় দ্বিগুণ, সব কৃষকের কাজে সুবিধা পৌঁছে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি পালন করতে হবে। ফলে সরকারের স্বল্পমেয়াদি, দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনাও আজ ছকে ফেলেছেন প্রধানমন্ত্রী। শপথের পরেই ডাকা হবে নতুন মন্ত্রিসভার বৈঠক।
বিজেপি নেতাদের হোয়াটসঅ্যাপে অবশ্য ঘুরছে সম্ভাব্য মন্ত্রীদের নাম। তাতে দেখা যাচ্ছে, কারও নাম আছে, কারও নেই। হোয়াটসঅ্যাপে এমনটিও বলা হচ্ছে, সেগুলি না কি আরএসএসের পছন্দ। তা দেখে কেউ খুশি হচ্ছেন, কারও মুখে হতাশা!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy