Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

অমিতকেই উত্তরসূরি করতে প্রস্তুতি মোদীর, মিলতে পারে স্বরাষ্ট্র বা অর্থ মন্ত্রকের দায়িত্বও

তবে মন্ত্রিসভায় অমিত শাহ গেলে দল কে সামলাবেন? এই প্রশ্নটির উত্তরই এখন খুঁজে বেড়াচ্ছেন বিজেপি নেতারা। আরএসএসের একাংশ অবশ্য চাইছে, অমিতই সংগঠনের দায়িত্বে থাকুন। তিনি যেমন নিজেও পরিশ্রম করতে পারেন, তেমনই অন্যদেরও চাঙ্গা করতে পারেন।

শিবসাধনা: কাশীর বিশ্বনাথ মন্দিরে নরেন্দ্র মোদী। সোমবার। ছবি: পিটিআই।

শিবসাধনা: কাশীর বিশ্বনাথ মন্দিরে নরেন্দ্র মোদী। সোমবার। ছবি: পিটিআই।

দিগন্ত বন্দ্যোপাধ্যায়
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৮ মে ২০১৯ ০২:৫৭
Share: Save:

নিজে তো দ্বিতীয় বার প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেনই, পাশাপাশি অমিত শাহকেও উত্তরসূরি হিসেবে পাকাপাকি ভাবে গড়ে নিতে চাইছেন নরেন্দ্র মোদী।

নতুন মন্ত্রিসভার সদস্য কে কে হবেন, তা নিয়ে বিজেপির অন্দরেও কৌতূহল বাড়ছে। এক বিজেপি নেতার কথায়, ‘‘মন্ত্রী কারা হবেন, তা কেবল নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহ জানেন। কিন্তু মোদী তাঁর নতুন সরকারে অমিতকে উত্তরসূরি হিসেবে প্রতিষ্ঠা করে দেবেন। এখনই হোক বা অদূর ভবিষ্যতে। অনেকে বলছেন মন্ত্রী হলে অমিতকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক দেওয়া হতে পারে। কিন্তু অর্থ মন্ত্রকের দায়িত্বও তাঁকে দিতে পারেন মোদী।’’

তবে মন্ত্রিসভায় অমিত শাহ গেলে দল কে সামলাবেন? এই প্রশ্নটির উত্তরই এখন খুঁজে বেড়াচ্ছেন বিজেপি নেতারা। আরএসএসের একাংশ অবশ্য চাইছে, অমিতই সংগঠনের দায়িত্বে থাকুন। তিনি যেমন নিজেও পরিশ্রম করতে পারেন, তেমনই অন্যদেরও চাঙ্গা করতে পারেন। তাঁকে মন্ত্রিসভায় নিয়ে গেলে নিত্যদিন সেই কাজটি অন্য কারও পক্ষে করা সম্ভব নয়। ফলে এই বিষয়টি নিয়ে দল ও সঙ্ঘে এখনও দ্বিধা কাটেনি।

দলের এক সূত্রের মতে, রাজনাথ সিংহের পরে যখন নতুন সভাপতি বাছাই করা হচ্ছিল তখন অমিতের পাশাপাশি সঙ্ঘের তালিকায় জগৎপ্রকাশ নড্ডার নামও ছিল। প্রধানমন্ত্রী যদি এ বারে শেষ পর্যন্ত অমিতকে মন্ত্রিসভায় নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন, সে ক্ষেত্রে নড্ডাকেও দলের সভাপতি করা হতে পারে। উত্তরপ্রদেশের ভোট পরিচালনার দায়িত্বও এ বারে তাঁকে দেওয়া হয়েছিল। নড্ডা নিজে প্রচারের আলো বাঁচিয়ে কাজ করার পক্ষপাতী। সভাপতি হওয়ার দৌড়ে নিতিন গডকড়ীকেও রাখতে পারে আরএসএস। কিন্তু সঙ্ঘের সঙ্গে ‘অতি-ঘনিষ্ঠতা’র কারণে মোদী-শাহ তা মেনে নেবেন কি না, সে বিষয়ে প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে।

বিজেপির এক নেতা বলেন, ‘‘পরিস্থিতি যা-ই হোক, অমিতই যে মোদীর উত্তরসূরি হতে চলেছেন, তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। চলতি বছরেই মোদী ৬৯ বছরে পা দেবেন। ৫ বছর পরে ৭৫ ছুঁয়ে ফেলবেন। অমিত এখন ৫৫, পাঁচ বছরে তাঁর বয়স ৬০ বছর হবে। ফলে এখনই দল গুছিয়ে তাঁকে মন্ত্রিসভায় নিয়ে আসা হবে। আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে যে কোনও সময়ে, সরকারের চারটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রকের মধ্যে একটির দায়িত্ব তাঁকে দেওয়া হবেই।’’ লোকসভা ভোটে প্রথম বার লড়বার সময়ে অমিতকে অবশ্য প্রশ্ন করা হয়েছিল, তিনি কি মন্ত্রী হতেই প্রার্থী হলেন? জবাবে বিজেপি সভাপতি বলেছিলেন, ‘‘মন্ত্রী হতে চাইলে রাজ্যসভার সাংসদ হিসেবেও হতে পারতাম।’’ অমিতের টিমের কিছু সদস্যের মতে, ব্যক্তিগত ভাবে সরকারে যাওয়ার থেকে এখন সভাপতি থাকতেই পছন্দ করবেন তিনি।

অধিকাংশ নেতার দাবি, আগের বার দিল্লি নতুন ছিল মোদী-শাহের কাছে। অরুণ জেটলিদের পরামর্শ নিতে হয়েছিল মন্ত্রী তালিকা চূড়ান্ত করতে। পাঁচ বছর পরে আর তা প্রয়োজন নেই। তার উপরে জেটলি অসুস্থ। সুষমা স্বরাজও ভোটে লড়েননি। সে ক্ষেত্রে এই দুই নেতা মন্ত্রী না হলে, গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রকের দায়িত্বে রাজনাথ সিংহের পাশাপাশি পীযূষ গয়ালের মতো নেতাও আসতে পারেন। অনেকের মতে, অর্থ না পেলে বিদেশ মন্ত্রকের ভারও দেওয়া হতে পারে পীযূষকে। ওই মন্ত্রকগুলির দায়িত্বে থাকার অর্থ নিরাপত্তা বিষয়ক কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হওয়া। সেখানে গডকড়ীকে সামিল করা নিয়েও প্রশ্ন আছে।

তবে সুষমাকে যদি মন্ত্রী করতে হয় তাহলে তাঁকে রাজ্যসভায় জিতিয়ে আনা হবে। কারণ, অমিত শাহ, রবিশঙ্কর প্রসাদ, স্মৃতি ইরানির মতো রাজ্যসভার সাংসদেরা এ বারে লোকসভায় জিতে এসেছেন। রাহুল গাঁধীকে অমেঠীতে হারানোর পরে স্মৃতিকেও গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রক দেওয়া হবে। মন্ত্রিসভায় থাকছেন প্রকাশ জাভড়েকর, ধর্মেন্দ্র প্রধানরাও। আর আঞ্চলিক ভারসাম্য বজায় রেখে পশ্চিমবঙ্গ, কর্নাটক, দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ-সহ রাজ্যগুলিতে বাড়তি জোর তো থাকবেই। ভাবতে হবে শরিকদের কথাও। বিজেপির বিপুল ভোটে জয়ের পরে শরিকদের দর কষাকষির জায়গা অনেকটা দুর্বল হলেও তাদেরও গুরুত্ব দেবেন বিজেপি নেতৃত্ব।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE