Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
India-China

রাশিয়া থেকে ৩৩টি নতুন যুদ্ধবিমান কেনার সিদ্ধান্ত নিল দিল্লি

পিনাক রকেট লঞ্চারের জন্য গোলাবারুদ, বিএমপি সাঁজোয়া গাড়ির আধুনিকীকরণ, সফটওয়্যার নির্ভর রেডিয়ো কেনাতেও সায় দিয়েছে কমিটি।

মিগ-২৯ বিমান।—ছবি পিটিআই।

মিগ-২৯ বিমান।—ছবি পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৩ জুলাই ২০২০ ০৪:২৬
Share: Save:

আপাতত লাদাখ যাওয়া পিছিয়ে দিলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। আগামিকাল সেনা প্রস্তুতি দেখতে পূর্ব লাদাখ সীমান্তে যাওয়ার কথা ছিল রাজনাথের। কিন্তু আজ সেনা সূত্রে জানানো হয়েছে, প্রতিরক্ষামন্ত্রীর লাদাখ সফরসূচি পরিবর্তন করা হয়েছে। কী কারণে ওই পরিবর্তন, কবে যাবেন তা নিয়ে নীরব প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। তবে সূত্রের মতে, গত মঙ্গলবার উত্তেজনা প্রশমনের লক্ষ্যে দু’দেশের সেনা কমান্ডার স্তরে বৈঠক হয়েছিল। সেই বৈঠকের পরে সেনা প্রত্যাহারের ব্যাপারে চিন কোনও ইতিবাচক পদক্ষেপ করে কি না, তা আগে দেখে নিতে চাইছে দিল্লি। সেই কারণে আপাতত পিছিয়ে দেওয়া হল রাজনাথের সফর।

বেজিংকে পাল্টা বার্তা দিতেই প্রতিরক্ষামন্ত্রীকে লাদাখে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কেন্দ্র। তিনি গেলে, সীমান্তে উত্তেজনা শুরুর পরে এটিই হত রাজনাথের প্রথম লাদাখ সফর। তাঁকে পাঠানোর সিদ্ধান্তের পিছনে অন্যতম কারণ ছিল— চিন সেনার অনুপ্রবেশ যে দিল্লি ভাল ভাবে নিচ্ছে না এবং সীমান্ত প্রশ্নে মোদী সরকার যে কোনও আপসের পথে যাবে না, সেই বার্তা দেওয়া। একই সঙ্গে দেশের মানুষকেও বোঝানো যে, জাতীয় নিরাপত্তার প্রশ্নে কোনও সমঝোতায় রাজি নয় সরকার।

কিন্তু সিদ্ধান্ত নিয়েও শেষে পিছিয়ে এল কেন্দ্র। প্রতিশ্রুতি মতো চিন কোনও আস্থাবর্ধক পদক্ষেপ করে কি না, সেটা আগে দেখে নেওয়াই ভাল মনে করছে তারা। কারণ উত্তেজনাময় এই সময়ে রাজনাথ লাদাখ গেলে সেনার মনোবল যেমন বাড়ত, তেমনই ফরওয়ার্ড পোস্টে রাজনাথের উপস্থিতি চিনকে কড়া প্রত্যাঘাতের বার্তাও দিত। এই মুহূর্তে কেন্দ্র সেটা চাইছে না। শুরু থেকেই ভারত আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা মেটানোর পক্ষপাতী। আপসহীনতার বার্তা দিতে গিয়ে আলোচনার সুর কাটুক, সেটা কাম্য নয় কেন্দ্রের। সেনা পিছনোর প্রশ্নে চিন উদ্যোগী হয় কি না, দেখে নিয়েই রাজনাথকে পাঠাতে চান মোদী।

আরও পড়ুন: ৬৫ বছরের উপরেই পোস্টাল ব্যালট, অবাধ ভোট নিয়ে আশঙ্কা

সাউথ ব্লক সূত্র বলছে, মঙ্গলবারের বৈঠকে গালওয়ান উপত্যকা, হটস্প্রিং ও প্যাংগং লেক এলাকা থেকে নীতিগত ভাবে সেনা কমাতে রাজি হয়েছে চিন। ভারতকেও সেনা কমানোর জন্য বলেছে তারা। এখন লাদাখ সীমান্তের একাধিক স্থানে দু’দেশের সেনা চোখে চোখ রেখে দাঁড়িয়ে আছে। দু’পক্ষই সেই অবস্থান থেকে পিছিয়ে গিয়ে বাফার জ়োন তৈরিতে রাজি হয়েছে। তবে ২২ জুন দ্বিতীয় সেনা কমান্ডার স্তরে বৈঠকের পরেও কার্যত একই রফাসূত্রে রাজি হয়েছিল চিন। কার্যক্ষেত্রে পিছনোর পরিবর্তে তারা সংঘর্ষস্থল অর্থাৎ পেট্রোলিং পয়েন্ট ১৪-তে অস্থায়ী কাঠামো গড়ে তোলে। এ নিয়ে ৩০ জুনের বৈঠকে ক্ষোভ জানায় ভারত। তবে সেনা সূত্রের খবর, এ বারের বৈঠক আগের চেয়ে ইতিবাচক ভাবে শেষ হয়েছে।

আরও পড়ুন: সাংবাদিক শুনে সিট থেকে তুলে নিয়ে গেলেন পুলিশ অফিসার

তাই বলে লাদাখে সেনা ও অস্ত্রশস্ত্র পাঠানোর ব্যাপারে অবশ্য ফাঁক রাখা হচ্ছে না। ইতিমধ্যেই দুই ইউনিট স্পেশাল প্যারা ফোর্স শ্রীনগর থেকে মোতায়েন করা হয়েছে লাদাখে। আজ দিল্লিতে সমরাস্ত্র কেনা সংক্রান্ত কমিটির বৈঠকে রাশিয়া থেকে ৩৩টি নতুন যুদ্ধবিমান কেনার সিদ্ধান্ত হয়েছে। পিনাক রকেট লঞ্চারের জন্য গোলাবারুদ, বিএমপি সাঁজোয়া গাড়ির আধুনিকীকরণ, সফটওয়্যার নির্ভর রেডিয়ো কেনাতেও সায় দিয়েছে কমিটি। বায়ু ও নৌসেনার জন্য ২৪৮টি আকাশ থেকে আকাশ ‘অস্ত্র’ মিসাইল কেনার সিদ্ধান্তও হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE