প্রথম বৈঠক কোয়াড। ছবি রয়টার্স।
তৈরি হওয়ার বছর তিনেক পরে, গত কাল বিদেশমন্ত্রী পর্যায়ে প্রথম বৈঠক করল ভারত, আমেরিকা, জাপান এবং অস্ট্রেলিয়ার চর্তুদেশীয় অক্ষ বা কোয়াড। চিনকে কোণঠাসা করার এই কৌশল নিয়ে বহু গর্জন শোনা গিয়েছে এ যাবত। কিন্তু গত কাল টোকিওতে এই বৈঠকের পরে কূটনীতিকরা বলছেন, ‘গর্জনই সার। কোয়াড-এ বর্ষণ কই?’ বৃহৎ শক্তি বেজিংয়ের কাছে কোয়াড তোপ কেন, সামান্য চিমটিও নয়—মনে করছেন তাঁরা।
কোনও বহুপাক্ষিক বৈঠকের পরে যৌথ বিবৃতি দেওয়াটাই কূটনীতিতে দস্তুর। তাতে সংশ্লিষ্ট দেশগুলির ঐকমত্যের জায়গাটি স্পষ্ট হয়ে ভবিষ্যতের দিগ্নির্দেশ হয়। সেটি ওই আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীর গুরুত্বপূর্ণ নথি হিসাবে সংরক্ষিত থাকে। গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির দায়বদ্ধতা থাকে ওই নথির প্রতি। কিন্তু এ ক্ষেত্রে, চারটি দেশের বিদেশমন্ত্রী তাঁদের মতো করে বিবৃতি দিয়েছেন। কোনও যৌথ বিবৃতিতে পৌঁছনো গেল না।
দ্বিতীয়ত, চিন প্রসঙ্গে আমেরিকার সুর যতটা চড়া, ততটা দেখা গেল না ভারতের, জাপান এবং অস্ট্রেলিয়ার। কোভিড-১৯ ভাইরাসের সংক্রমণ এবং উৎপত্তি নিয়ে চিনের নাম করে ওই বৈঠকে দোষারোপ করেছেন মার্কিন বিদেশসচিব মাইক পম্পেয়ো। বলেছেন, “চিনা কমিউনিস্ট
পার্টি গোটা বিষয়টি ধামাচাপা দিতে গিয়ে পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর করে তুলেছে। এই একনায়কতন্ত্রী জমানায় কোনও নেতা এই নিয়ে মুখ খোলেন না। শুধুমাত্র চিনের সাহসী জনগণ প্রশ্ন তুলছেন।”
এই ঝাঁঝ দূরস্থান, এস জয়শঙ্কর চিনের নামটুকুও করেননি কোয়াড বৈঠকে তাঁর বক্তৃতায়। অতিমারি নিয়ে চিনকে দোষারাপ করেননি জাপান বা অস্ট্রেলিয়ার বিদেশমন্ত্রীরাও। জয়শঙ্কর সতর্ক ভাবে শুধু বলেছেন, “এই বছরের ঘটনাবলী স্পষ্ট বুঝিয়ে দিয়েছে, সমমনস্ক দেশগুলির সহযোগিতার গুরুত্ব কতটা। অতিমারি আমাদের সামনে বহু চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছে।”
প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় চিনের আগ্রাসী ভূমিকা নিয়েও ভারতকে সরব হতে দেখা যায়নি সে ভাবে। কূটনৈতিক সূত্রের বক্তব্য, এই মঞ্চটি তৈরিই হয়েছে একটি মাত্র উদ্দেশ্য নিয়ে, তা হল চিনকে কোণঠাসা করা। কিন্তু ভারতের চিন-নীতি নিয়ে চিরকালীন দ্বিধা কোয়াড-এও স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy