Advertisement
E-Paper

রোজ ৩৫০ কিলোমিটার পাড়ি দেন এই মন্ত্রী, কেন জানেন?

খবর, তাই কর্নাটকের পূর্তমন্ত্রী এইচ ডি রেভান্না রোজ বেঙ্গালুরুর বিধানসভা ভবন (বিধান সৌধ) থেকে মাঝরাতে ফিরে যান তাঁর জেলার বাড়িতে। আর সাতসকালে জেলার বাড়ি থেকে রওনা হন বিধানসভার উদ্দেশে।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ০৫ জুলাই ২০১৮ ১৬:৫২
এইচ ডি রেভান্না।- ফাইল চিত্র।

এইচ ডি রেভান্না।- ফাইল চিত্র।

জ্যোতিষীই ছোটাচ্ছেন কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রীর বড় দাদা, পূর্তমন্ত্রী এইচি ডি রেভান্নাকে?

বেঙ্গালুরুর বাড়িতে এখন রাতে ঘুমোলেই তাঁর ‘ঘোর অমঙ্গল’! এমন কথাই নাকি বলেছেন তাঁর প্রিয় জ্যোতিষী! এও বলেছেন, ‘ভাগ্য ফেরাতে’ তাঁকে তাঁর জেলার বাড়িতে ফিরে গিয়ে রাতে ঘুমোতে হবে।

খবর, তাই কর্নাটকের পূর্তমন্ত্রী এইচ ডি রেভান্না রোজ বেঙ্গালুরুর বিধানসভা ভবন (বিধান সৌধ) থেকে মাঝরাতে ফিরে যান তাঁর জেলার বাড়িতে। আর সাতসকালে জেলার বাড়ি থেকে রওনা হন বিধানসভার উদ্দেশে।

পথটা ৫/১০ কিলোমিটার দূরত্বের হলে অবাক হওয়ার কিছু ছিল না। কিন্তু রেভান্না রোজ বাড়ি আর বিধানসভা ভবন আসা-যাওয়া করতে পাড়ি দেন কম করে সাড়ে তিনশো কিলোমিটার পথ! বেঙ্গালুরু থেকে হাসান জেলার হোলেনারাসিপুরা, এই ১৬৯ কিলোমিটার পথে রেভান্না ছুটোছুটি করেন দিনে দু’বার। মন্ত্রী বলে সরকারি গাড়িতেই।

আরও পড়ুন- কর্নাটকে ছয় মন্ত্রী নিয়ে জট কংগ্রেসে​

রেভান্নার এক ঘনিষ্ঠ বলেছেন, কর্নাটকের কুমারস্বামী মন্ত্রিসভায় তিনি যবে পূর্তমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন, জ্যোতিষীর পরামর্শ অক্ষরে অক্ষরে মেনে সেই দিনটি থেকেই তাঁর এই ছোটাছুটি শুরু হয়ে গিয়েছে। জ্যোতিষী নাকি রেভান্নাকে পরামর্শ দিয়েছেন, রাতের ঘুমটা এখন তাঁর জেলার বাড়িতে হলেই মন্ত্রিত্ব টিঁকে যাবে। ক্ষমতার সিঁড়ি বেয়ে আরও তরতড়িয়ে উঠতে পারবেন রেভান্না।

ভোর ৫টায় ঘুম ভাঙে রেভান্নার। তার পর স্নান করেই বসে যান পুজোপাঠে। পুজো শেষ হতেই তাঁর জেলার বাড়ি হোলেনারাসিপুরায় বসে ‘আম আদমির দরবার’। অভাব, অভিযোগ, সমস্যা নিয়ে মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে আসেন মানুষ। শুধুই তো মন্ত্রী নন, মুখ্যমন্ত্রী এইচ ডি কুমারস্বামীর বড় দাদাও তিনি!

আরও পড়ুন- ‘কারও দয়ায় চলি না’, কুমারের তোপে কংগ্রেস​

লোকজন চলে যেতেই সকাল ৮টায় সরকারি গাড়িতে বেঙ্গালুরু রওনা হন পূর্তমন্ত্রী রেভান্না। বিধানসভা চললে যান সেখানে, না চললে যান সচিবালয়ে, তাঁর দফতরে। আর বেঙ্গালুরু থেকে মন্ত্রীর গাড়ি হোলেনারাসিপুরা রওনা হয় রাত ৯টায়। মাঝরাতে রেভান্না পৌঁছন তাঁর জেলার বাড়িতে। এটা তাঁর রোজকার রুটিন।

কর্নাটকের পূর্তমন্ত্রী রেভান্না অবশ্য জ্যোতিষীর পরামর্শে এই রুটিন মেনে চলার কথা মানতে চাননি। তাঁর বক্তব্য, ‘‘বেঙ্গালুরু শহরে কর্নাটক সরকার এখনও তাঁর বাসভবনের বন্দোবস্ত করতে পারেননি। তাই রোজ হোলেনারাসিপুরা থেকে বেঙ্গালুরু, আমাকে ছোটাছুটি করতে হচ্ছে।’’

কুমারস্বামী আর তাঁর দাদার জ্যোতিষশাস্ত্রে গভীর বিশ্বাসের কথা কর্নাটকের মানুষের কাছে অবশ্য নতুন কিছু নয়। জেডি (এস)-এর অনেক নেতাই জানেন, কুমারস্বামীর মতো রেভান্নাও সব কাজ করেন জ্যোতিষীর পরামর্শে।

জেডি (এস)-এর অন্দরেই আলোচনা চলছে, বেঙ্গালুরুতে আর কি কোথাও থাকার জায়গা ছিল না রেভান্নার!

এক জেডি (এস) নেতার কথায়, ‘‘বেঙ্গালুরুর কাছেই তো বানসাঙ্কারি সেকেন্ড স্টেজে নিজের বাড়ি রয়েছে রেভান্নার। বিধানসভা ভবন থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে পদ্মনাভনগরের নানা জায়গায় ছড়িয়েছিটিয়ে থাকেন রেভান্নার পরিবারের লোকজন। রেভান্না নিজেও পারতেন বেঙ্গালুরুতে একটা বাড়ি খুঁজে নিতে। মন্ত্রী বলে ভাড়াটা সরকারই দিত।’’

কর্নাটক সরকারের কর্মিবর্গ ও প্রশাসনিক সংস্কার দফতরের এক পদস্থ কর্তা জানিয়েছেন, বেঙ্গালুরু শহরে পূর্তমন্ত্রী রেভান্নার জন্য সরকারি বাসভবনের অভাব নেই। কিন্তু রেভান্নার পছন্দ পূর্বতন পূর্তমন্ত্রী এইচ সি মহাদেবাপ্পার সরকারি বাসভবনটিই। ২০১৩ সাল থেকে ওই বাড়িতে ছিলেন মহাদেবাপ্পা। খুব প্রভাবশালী মন্ত্রী ছিলেন তিনি। তবে ওই বাড়ি ছাড়তে মহাদেবাপ্পার আরও তিন মাস সময় লাগবে। রেভান্না নাকি তা শুনে বলেছেন, ‘‘লাগুক। অপেক্ষা করব। আমি ওই বাড়িতেই উঠব। থাকব।’’

রেভান্নার ঘনিষ্ঠ সূত্রের খবর, রেভান্নার জ্যোতিষী বলেছেন, মহাদেবাপ্পার সরকারি বাসভবনটিই তাঁর পক্ষে ‘লাকি’ হবে।

তবে পূর্তমন্ত্রীর ‘লাক’ ফেরানোর জন্য এখন চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে বেঙ্গালুরু ও কয়েকটি জেলার পুলিশ ও প্রশাসনকে। সাধারণ মানুষকে।

রোজ দিনে মন্ত্রীর কনভয় যায় বলে একটি দীর্ঘ পথে বিশেষ ভাবে ট্রাফিক কন্ট্রোল ও ভিআইপি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হয় পুলিশ ও প্রশাসনকে।

আর মন্ত্রীর কনভয় যে জেলাগুলির মধ্যে দিয়ে বেঙ্গালুরু থেকে রোজ যাওয়া-আসা করে হোলেনারাসিপুরা, সেই পথে জ্যামজটে নাকাল হতে হয় আম আদমিকেও। দিনে দু’বার।

এইচ ডি রেভান্না Karnataka H D Revanna Banashankari
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy