Advertisement
E-Paper

ভিডিয়োর নগ্ন মহিলা তিনি নন, আড়াই বছর লড়ে প্রমাণ দিলেন সন্তানদের

শোভার বক্তব্য, এখানেই শেষ নয়। যে ব্যক্তি তাঁর এত বড় সর্বনাশ করেছিলেন, সে শাস্তি না পাওয়া পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাবেন তিনি। বলেছেন, ‘‘ওই সময়ের কথা মনে করলে এখনও শিউরে উঠি। আমি জানি না কীভাবে লড়তে লড়তে এত দূর পৌঁছে গেলাম। কিন্তু এর শেষ না দেখে ছাড়ব না।’’

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২৯ নভেম্বর ২০১৮ ১৬:৩৩
শোভা সাজু। ছবি: সংগৃহীত

শোভা সাজু। ছবি: সংগৃহীত

হঠাৎ একটা ঝড়ে লণ্ডভণ্ড হয়ে গিয়েছিল সব কিছু। বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়েছিলেন স্বামী। দেখা করতে দেননি তিন সন্তানের সঙ্গেও। কারণ, তাঁর নগ্ন ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়েছিল সোশ্যাল মিডিয়ায়। সমাজের চোখরাঙানি, সাজানো সংসার ছন্নছাড়া হওয়ার যন্ত্রণা, সন্তানদের কাছে মায়ের চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন ওঠা— সব কিছু মিলিয়ে সামনের জগৎটা তখন শুধুই অন্ধকারে ভরা ছিল। কিন্তু হাল ছাড়েননি কেরলের থোড়ুপুঝার শোভা সাজু। আড়াই বছর পর প্রমাণ করতে সক্ষম হলেন, তিনি নির্দোষ। ওই ভিডিয়োতে তিনি ছিলেন না।

তবে শোভার বক্তব্য, এখানেই শেষ নয়। যে ব্যক্তি তাঁর এত বড় সর্বনাশ করেছিলেন, সে শাস্তি না পাওয়া পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাবেন তিনি। বলেছেন, ‘‘ওই সময়ের কথা মনে করলে এখনও শিউরে উঠি। আমি জানি না কীভাবে লড়তে লড়তে এত দূর পৌঁছে গেলাম। কিন্তু এর শেষ না দেখে ছাড়ব না।’’

ঘটনা ২০১৬ সালের মাঝামাঝি। লিট্টো নামে শোভার স্বামীর অফিসের এক সহকর্মী তাঁর অফিসের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে একটি ভিডিয়ো ছড়িয়ে দেন। তাতে দেখা যায় এক মহিলা ইচ্ছাকৃতভাবে ক্যামেরার সামনে এসে পোশাক পাল্টাচ্ছেন। একটা সময় পুরো নগ্ন হয়ে যান তিনি। ওই ভিডিয়োতে শোভার স্বামী এবং তাঁর কয়েক জন সহকর্মীও রয়েছেন। কিন্তু আশ্চর্যজনক ভাবে ওই ভিডিয়োতে যে মহিলা ছিলেন, তিনি অবিকল শোভার মতো দেখতে।

আরও পড়ুন: সেক্স সাইটে ফেক প্রোফাইল, যাদবপুরে দুই মহিলার দরজায় হাজির ‘কাস্টমার’!

বিষয়টি নিয়ে শোভার স্বামীর অফিসে তুমুল গুঞ্জন শুরু হয়। অন্যান্য গ্রুপেও ভিডিয়োটি ছড়িয়ে পড়ে। তাতেই ক্ষেপে গিয়ে শোভাকে বাড়ি থেকে জোর করে বের করে দেন। এমনকি, শোভার তিন সন্তানের কারও সঙ্গে দেখাও করতে দেওয়া হয়নি তাঁকে। পাশাপাশি বিবাহ বিচ্ছেদের মামলাও দায়ের করেন তিনি।

অকুল পাথারে পড়েন শোভা। প্রাথমিক ধাক্কা কাটিয়ে সিদ্ধান্ত নেন, লড়াই করবেন তিনি। তাই আদালতে মামলা দায়ের করেন। বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া, স্বামীর ডিভোর্সের মামলার চেয়েও তাঁর লড়াই ছিল নিজের ছেলেমেয়ের জন্য, বলছেন শোভা।

আরও পুড়ুন: ইগো বুস্ট করতে কেউ তেল চায়, কেউ সেক্স, বলছেন শ্রীলেখা

তবে মামলায় প্রথম দিকে কিছুটা হতাশই হতে হয়েছিল তাঁকে। কারণ, দু’বার ফরেনসিক পরীক্ষা হলেও কোনও সিদ্ধান্তে আসতে পারেননি বিশেষজ্ঞরা। এর পর তদন্তে গাফিলতির অভিযোগ তুললে কেরল পুলিশের ডিজির দ্বারস্থ হন শোভা। বদল হয় তদন্তকারী অফিসার। তার পর সেই ভিডিয়ো ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয় কেন্দ্রের সেন্টার ফর ডেভেলপমেন্ট অব অ্যাডভান্সড কম্পিউটিং-এ(সিডিএসি)। তিরুঅনন্তপুরমে সিডিএসি-র বিশেষজ্ঞরাই শেষ পর্যন্ত জানান, ওই ভিডিয়োতে থাকা মহিলা শোভা নন। তাতেই স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছেন শোভা।

এই রিপোর্ট পাওয়ার পরই নতুন করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। কে বা কারা ওই ভিডিয়ো প্রথম ছড়িয়েছিল, তা নিয়ে তথ্য জোগাড় শুরু হয়েছে।

আড়াই বছরের যুদ্ধজয়ের পর সংবাদ মাধ্যমে নিজে আর মুখ ঢাকতে চাননি শোভা। তিনি বলেন, ‘‘আমি মুখ ঢাকলে সবাই ভাববে আমি দোষী। এবার অন্তত আমার সন্তানরা বুঝবে, আমি অর্থাৎ ওদের মা খারাপ নয়।’’

(দেশজোড়া ঘটনার বাছাই করা সেরা বাংলা খবর পেতে পড়ুন আমাদের দেশ বিভাগ।)

Kerala Nude Video Fake Fight
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy