১১ এপ্রিল ত্রিপুরা পশ্চিম কেন্দ্রের ধলাইয়ের একটি বুথে ভোটারদের লাইন। —ফাইল চিত্র
দেদার ছাপ্পা, বুথ দখল, রিগিং-সন্ত্রাস থেকে ওয়েব কাস্টিং ক্যামেরা নিয়ে অভিযোগের পাহাড় জমেছিল ত্রিপুরা পশ্চিম লোকসভা কেন্দ্রের ভোটগ্রহণে। সেই সব অভিযোগ খতিয়ে দেখে প্রায় নজিরবিহীন ভাবে ১৬৮টি বুথে পুনর্নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নিল নির্বাচন কমিশন। আগামী ১২ মে ওই বুথগুলিতে পুনর্নির্বাচন হবে বলে বুধবার বিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন ত্রিপুরার মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক।
ত্রিপুরা পশ্চিম লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত ৩০টি বিধানসভা এলাকায় ভোটগ্রহণ হয়েছিল প্রথম দফায়, গত ১১ এপ্রিল। কিন্তু ভোটগ্রহণের সময় শাসক দলের বিরুদ্ধে রিগিং ছাপ্পা, বুথ দখল থেকে নানা অভিযোগে কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছিল রাজ্যের দুই বিরোধী দল সিপিএম এবং কংগ্রেস। কমিশনের বিরুদ্ধেও শাসক দলের হয়ে কাজ করার অভিযোগ তুলেছিল বিরোধীরা। সেই সব অভিযোগ খতিয়ে দেখেই লোকসভা নির্বাচনের ষষ্ঠ দফার সঙ্গে ভোটগ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন।
বুধবার সাংবাদিক সম্মেলন করে কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, গত ১১ এপ্রিল যে ভোট নেওয়া হয়েছিল, তার মধ্যে ২৬টি বিধানসভা এলাকার মোট ১৬৮টি বুথের ভোটগ্রহণ বাতিল করা হয়েছে। ওই বুথগুলিতে পুনর্নির্বাচন হবে আগামী ১২ মে। সেই মতো সংশ্লিষ্ট সব মহলে শুরু হয়েছে জোরকদমে প্রস্তুতিও। কমিশন সূত্রে খবর, ১১ কোম্পানি বিএসএফ এবং ৪ কোম্পানি সিআরপিএফ নিরাপত্তার দ্বায়িত্বে থাকবে। অর্থাৎ প্রায় সব বুথেই থাকবেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা।
আরও পড়ুন: সুপ্রিম কোর্টেও স্বস্তি মোদী-অমিত শাহর, কংগ্রেসের দায়ের করা বিধিভঙ্গের মামলা খারিজ
আরও পডু়ন: ‘গণতন্ত্রের থাপ্পড়’ মন্তব্যের নিন্দায় সুষমা, সব সীমা লঙ্ঘন করেছেন মমতা, হুঁশিয়ারি বিদেশমন্ত্রীর
কিন্তু একসঙ্গে এই বিপুল সংখ্যক বুথে পুনর্নির্বাচন করতে হল কেন? ভোট গ্রহণের পর থেকেই ত্রিপুরার শাসক দল বিজেপির বিরুদ্ধে সন্ত্রাস, রিগিং, ছাপ্পা, বুথ দখলের অভিযোগ তুলে সরব হয়েছিল রাজ্যের বিরোধী দুই রাজনৈতিক দল সিপিএম এবং কংগ্রেস। কমিশনের বিরুদ্ধে পক্ষপাতের অভিযোগও আনা হয়েছিল। কমিশনের বসানো ওয়েব কাস্টিং ক্যামেরা নিয়ে অভিযোগ ছিল, বহু বুথে ওই ক্যামেরায় চিপই লাগানো হয়নি। ফলে ভোটগ্রহণের ভিডিয়ো রেকর্ডই হয়নি। কোথাও আবার ক্যামেরার মুখ এমন ভাবে ঘোরানো ছিল, যে ভিতরের ছবি ঠিকমতো ধরা পড়েনি।
এই সব অভিযোগ পেয়েই প্রায় সব বুথের তথ্যপ্রমাণ খতিয়ে দেখতে শুরু করে নির্বাচন কমিশন। বিশেষ পর্যবেক্ষক হিসেবে নিয়ে আসা হয় বিনোদ জুৎসিকে। তিনি গোটা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে রিপোর্ট দেন। তার পরেই কড়া ব্যবস্থা নেয় নির্বাচন কমিশন। ত্রিপুরা পশ্চিম কেন্দ্রের রিটার্নিং অফিসার তথা জেলাশাসক সন্দীপ মাহাত্মেকে অন্যত্র সরিয়ে দেওয়া হয়। তাঁকে নির্বাচনের কোনও কাজে রাখা যাবে না বলে বিজ্ঞপ্তি জারি করে কমিশন। প্রিসাইডিং অফিসার, মাইক্রো অবজারভার, পোলিং এজেন্ট এবং ওয়েব কাস্টিং-এর কাজে যুক্ত কয়েক জনকে শো-কজ, থানায় মামলা, গ্রেফতার এবং চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত পর্যন্ত করা হয়। সন্দীপ মাহাত্মের জায়গায় ধলাইয়ের জেলাশাসক বিকাশ সিংহকে বদলি করে পশ্চিম ত্রিপুরার জেলাশাসক পদে আনা হয়েছে। তাঁর তত্ত্বাবধানেই পুনর্নর্বাচন হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy