Advertisement
E-Paper

মোদীর মতো ভুয়ো নন, পিছড়ে বর্গের আসল নেতা মুলায়ম, ঐতিহাসিক সভায় সার্টিফিকেট মায়ার

প্রায় ২৫ বছর পর মায়াবতীর সঙ্গে এক মঞ্চে উঠলেন মুলায়ম।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০১৯ ১৭:০৫
এক মঞ্চে মায়াবতী ও মুলায়ম সিংহ যাদব। ছবি: এপি।

এক মঞ্চে মায়াবতী ও মুলায়ম সিংহ যাদব। ছবি: এপি।

ঐতিহাসিক শত্রুতা ভুলে শেষ পর্যন্ত ঐতিহাসিক সভায় এক মঞ্চে দাঁড়ালেন উত্তরপ্রদেশ রাজনীতির দুই মহারথী মুলায়ম সিংহ যাদব এবং মায়াবতী। আর শুধু এক মঞ্চে দাঁড়ানোই নয়, মৈনপুরীর সভায় মুলায়মকে প্রশংসাতেও ভরিয়ে দিলেন উত্তরপ্রদেশে সমাজবাদী পার্টি এবং বহুজন সমাজ পার্টি মহাজোটের অন্যতম কাণ্ডারী মায়াবতী। তাঁর নিজের কথাতেই, ‘‘মুলায়ম সিংহ যাদব পিছড়ে বর্গের সত্যিকারের নেতা, মোদীর মতো ভুয়ো নন।’’ অন্য দিকে দলীয় সমর্থকদের মায়াবতীর পা ছুঁয়ে দেখার পরামর্শ দিলেনমুলায়ম। দীর্ঘ ২৫ বছরের শত্রুতা এ ভাবেই একাকার হয়ে গেল মৈনপুরীতে, মুলায়মের নিজের কেন্দ্রে।

বিজেপিকে আটকাতে ঐতিহাসিক দ্বৈরথ দূরে সরিয়ে সমাজবাদী পার্টি এবং বহুজন সমাজ পার্টি একজোট হলেও মায়া-মুলায়মকে এক সঙ্গে দেখা যাবে কিনা, সেই শঙ্কাটা ছিলই। কারণ, শুরু থেকেই এই জোটের মূল উদ্যোক্তা ছিলেন অখিলেশ। যে কারণে এই জোটকে অনেকেই বলছিলেন বুয়া-বাবুয়া (পিসি-ভাইপো) জোট। অন্য দিকে শুরু থেকেই এই জোটের বিরোধী ছিলেন মুলায়ম। এর আগে সমাজবাদী পার্টি এবং বহুজন সমাজ পার্টির তিনটি যৌথ সমাবেশে তাঁকে দেখতে না পাওয়ায় রাজনৈতিক মহলে সেই আশঙ্কাটা আরও জোরদার হচ্ছিল। দেওবন্দ, বদগাঁও, আগ্রা, তিনটি জনসভাই স্বাস্থের কারণ দেখিয়ে শেষমেশ বাতিল করেছিলেন তিনি।শেষ পর্যন্ত সেই শঙ্কা আর দ্বৈরথ দূরে সরিয়ে প্রায় ২৫ বছর পর মায়াবতীর সঙ্গে এক মঞ্চে উঠলেন মুলায়ম।

শুরু থেকেই মায়া-মুলায়মের এই যৌথ সভা ছিল ঐক্যের সুরে বাঁধা। বিজেপিকে হারাতে দলিত-মুসলিম-পিছড়ে বর্গকে এককাট্টা করার রাজনৈতিক প্রয়োজনীয়তার কথা মাথায় রেখে মুলায়মের কেন্দ্রে মায়াবতী বললেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মতো মুলায়ম অনগ্রসর সম্প্রদায়ের ভুয়ো নেতা নন, তিনি হলেন আসল নেতা।’’নিজেদের পুরনো তিক্ততার প্রসঙ্গে টেনে এনে মায়াবতী বলেন, ‘‘সময়ের সঙ্গে অনেক পাল্টে গিয়েছেন মুলায়মজি। সাধারণ মানুষের জন্য তিনি অনেক কিছু করেছেন। সমাজবাদী পার্টির শাসনকালে মহিলাদের উন্নতির জন্য অনেক কিছু করা হয়েছে।’’

আরও পড়ুন: বিএসপির বদলে বিজেপিতে ভোট! ভুলের শাস্তি দিতে নিজেই কেটে ফেললেন আঙুল

১৯৯৫ সালে শুরু হয়েছিল মায়া-মুলায়ম শত্রুতার। তখন উত্তরপ্রদেশের ক্ষমতায় তাঁদেরই জোট সরকার। দু’বছর সরকারে থাকার পর হঠাৎই সেই জোট ভেঙে বেরিয়ে গিয়ে বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়েছিলেন মায়াবতী। প্রতিশোধ নিতে সেই সময় যে গেস্টহাউসে ছিলেন মায়াবতী, সেখানে চড়াও হয়েছিলেন মুলায়ম সমর্থকেরা। শারীরিক ভাবেও নিগ্রহ করা হয়েছিল তাঁকে। এর পর থেকেই রাজনীতিতে তাঁরা বরাবরের প্রতিপক্ষ।

সেই গেস্টহাউস ঘটনার প্রসঙ্গও এ দিনের সভায় তুলেছেন মায়াবতী। তাঁর কথায়, ‘‘সে দিনের কুখ্যাত ঘটনার কথা মাথায় রেখেও আমি সমাজবাদী পার্টির সঙ্গে জোট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কারণ, পরিস্থিতি কখনও কখনও মানুষকে কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করে।’’

আরও পড়ুন: হেমন্ত করকরে দেশবিরোধী, তাঁর অভিশাপেই মৃ্ত্যু হয়েছে, বললেন সাধ্বী প্রজ্ঞা!

মৈনপুরীতে বিএসপি সমর্থকরা, যাঁদের অধিকাংশই দলিত বা পিছড়ে বর্গের, তাঁরা সমাজবাদী পার্টিকে ভোট দেবেন কিনা, তা নিয়ে একটা আশঙ্কা ছিল রাজনৈতিক মহলে। অন্য দিকে রাজ্যের যে সব আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেবিএসপি, সেখানে যাদব-মুসলিম ভোটব্যাঙ্ক বিএসপিকে ভোট দেবে কিনা, প্রশ্ন আছে তা নিয়েই। যদিও এই সমীকরণের উপরই নির্ভর করছে উত্তরপ্রদেশে মহাজোটের ভাগ্য। সেই রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতার বিষয়টি মাথার রেখে মায়াবতীর প্রশস্তি গাইলেন মুলায়মও। দলীয় সমর্থকদের সঙ্গে বিএসপি নেত্রীর পরিচয় করিয়ে দেওয়ার পাশাপাশিতাঁদের মায়াবতীর পা ছোঁয়ার বার্তাও দিলেন তিনি। বললেন, ‘‘দীর্ঘ দিন পর আমরা এক মঞ্চে এক সঙ্গে উঠলাম। আমি ওঁকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’’

আরও পড়ুন: দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

লোকসভা নির্বাচন ২০১৯ Lok Sabha Election 2019 Mayawati Mulayam Singh Yadav
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy