ভোটে ছক্কা হাঁকাবেন কী, বাইশ গজের লড়াইয়ে নিজের মাঠেই হেরে বসে আছেন নরেন্দ্র মোদী!
তিনি যে এখন ব্যাকফুটে ব্যাট করছেন, দিল্লির রামলীলা ময়দানেই বুঝিয়ে দিয়েছেন। সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁর একার দমে আর ভোটে জেতা যাবে না। ‘সামগ্রিক নেতৃত্ব’ই ভরসা। আর ঘাম ছুটিয়ে কাজ করতে হবে দলের কর্মীদের। বিশেষ করে বিরোধীরা যখন মোদীকে হারাতে পণ করেছে। আর উত্তরপ্রদেশের মতো গো-বলয়ের সব থেকে বড় রাজ্যে যে বিরোধী জোটের খেসারত সব থেকে বেশি দিতে হতে পারে বিজেপিকে। সে কারণে রামলীলা ময়দানেই মোদীর সেনাপতি অমিত শাহ দলের হাতে ধরিয়ে দিয়েছেন কর্মীদের চাঙ্গা করতে একগুচ্ছ প্রকল্প। যার মধ্যে অন্যতম ছিল ‘কমল কাপ ক্রিকেট টুর্নামেন্ট’।
গত দু’দিন ধরে উত্তরপ্রদেশের রাজধানী লখনউয়ে হয়ে গেল সেই টুর্নামেন্ট। দলের যুব মোর্চার আয়োজনে বিভিন্ন বিধানসভা থেকে এসেছিল আটটি টিম। এই আট টিমের নাম রাখা হয়েছিল, অটল একাদশ, নমো একাদশ, দীনদয়াল উপাধ্যায় একাদশ, সর্দার পটেল একাদশ, শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় একাদশ, ভীমরাও অম্বেডকর একাদশ, এ পি জে আব্দুল কালাম একাদশ, শহিদ ভগৎ সিংহ একাদশ। আর সেখানে ‘নমো একাদশ’ সেমিফাইনাল পর্যন্ত উঠেও চার উইকেটে হেরে গেল ‘দীনদয়াল একাদশ’-এর কাছে। আজ ফাইনালে শ্যামাপ্রসাদের সঙ্গে মোকাবিলাতে ১১ রানে জয় হয়েছে দীনদয়াল একাদশের।
আরও পড়ুন: মনমোহনের ১০০ দিনের কাজেই এখন মোদীর মুখরক্ষা!
এমন নামকরণ নিয়ে দলের মধ্যেই প্রশ্ন উঠেছে। আটটি নাম নাকি স্থির হয়েছে আট ‘মহাপুরুষ’-এর নামে! কিন্তু সাতজনই প্রয়াত। ‘নমো’-কে দল এখন থেকেই ‘মহাপুরুষ’ ভাবছে? উত্তরপ্রদেশের এক নেতার কথায়, ‘‘উত্তরপ্রদেশে জাতপাতের সমীকরণ মাথায় রেখে এক একজনের নাম দিয়ে টুর্নামেন্ট করার নির্দেশ এসেছে দিল্লি থেকে। কিন্তু খেলায় হারজিত থাকবেই। সে ক্ষেত্রে যাঁর নামাঙ্কিত টিম হারবে, তাতে সেই ব্যক্তিরই অপমান।’’ ভোটে আসল লড়াইয়ের আগে নরেন্দ্র মোদীর টিম হেরে যাওয়ার পরেও এই প্রশ্নটি আরও বড় করে উঠে এসেছে। যুব মোর্চার সদস্য অমন সিংহ চৌহান বলেন, ‘‘আমরা তো চেয়েছিলাম ‘নমো একাদশ’ জিতুক। কিন্তু দীনদয়াল, শ্যামাপ্রসাদের মধ্যে ফাইনাল হয়েছে, তাঁরাও আমাদের দলের প্রতিষ্ঠাতা। ফলে আফশোসের কিছু নেই। নরেন্দ্র মোদী তো ২০১৯ সালে আমাদের বিজয়ের মুখ।’’
কিন্তু দিল্লিতে বিজেপি নেতারা বলছেন, তাতে কী? খেলাকে খেলার মতোই নিতে হয়। আসল খেলা তো হবে ভোটের ময়দানে। সে কারণে শুধু ক্রিকেট ম্যাচ নয়, মেগা-বাইক র্যালি হবে। প্রয়াগরাজে যেমন কুম্ভ হচ্ছে, তেমনই গ্রামে-গ্রামে কৃষক-কুম্ভও হবে। কৃষক সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীও তাতে সামিল হবেন। ঘরে ঘরে মোদীর ছবি দিয়ে চিঠি বিলি হবে। যাঁরা মোদীর প্রকল্পের সুফল পেয়েছেন, তাঁদের নিয়ে ‘কমল-জ্যোতি’ উৎসব হবে। গোটা উত্তরপ্রদেশে এমন হাওয়া তোলা হবে, যাতে সব আসনে পঞ্চাশ শতাংশের বেশি ভোট পেয়ে সপা-বসপা জোটকে বাজিমাত করা যায়।
আরও পড়ুন: মন্দির গড়বেন না মোদী, ক্ষুব্ধ সঙ্ঘ
কিন্তু দশ ওভারের ম্যাচে সেমিফাইনালের গণ্ডি না পেরোনো মোদী কী আসল ফাইনাল জিততে পারবেন?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy