Advertisement
E-Paper

বেকারত্ব কমিয়ে দেখাতে আসছে ‘নয়া সমীক্ষা’, জানালেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা

প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা অবশ্য জানালেন, নতুন করে সমীক্ষা করবে এনএসএসও, তাতে দেখা যাবে মোদী জমানায় দেশে আসলে বেকারত্বের হার কমেছে।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ১৫:০৯
গ্রাফিক- শৌভিক দেবনাথ।

গ্রাফিক- শৌভিক দেবনাথ।

মোদী জমানায় ভারতবর্ষে বেকারত্বের হার গত ৪৫ বছরে সর্বোচ্চ। গতকালই ন্যাশনাল স্যাম্পেল সার্ভে অফিসের এই রিপোর্ট ফাঁস হওয়ায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছিল সারা দেশে। পরিস্থিতি সামাল দিতে তড়িঘড়ি সাংবাদিক বৈঠক করে নীতি আয়োগের তরফে জানানো হয়েছিল, যে তথ্যের ভিত্তিতে এই রিপোর্ট বানানো হয়েছে, তা যাচাই করা হয়নি।এবার প্রধানমন্ত্রীর অন্যতম অর্থনৈতিক উপদেষ্টা বিবেক দেবরায় জানালেন, মোদী জমানায় কর্মসংস্থান বেড়েছে, তা দেখাতে করা হবে নতুন সমীক্ষা।

বেকারত্বের জন্য রাজ্য সরকারগুলিরও দায় আছে বলে মন্তব্য করেছেন বিবেক দেবরায়। তাঁর কথায়, ‘‘কর্মসংস্থান তৈরিতে মোদী সরকারের ভূমিকা আমাদের বুঝতে হবে। কর্মসংস্থানের জন্য কেন্দ্রের দায় আংশিক। এর জন্য রাজ্য সরকারগুলির পাশাপাশি দেশের শিল্প-ব্যবসার পরিবেশও অনেকাংশ দায়ী।’’

ফাঁস হওয়া ন্যাশনাল স্যাম্পেল সার্ভে অফিসের (এনএসএসও) রিপোর্টের নমুনা সারা দেশ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছিল ২০১৭ সালের জুলাই মাস থেকে ২০১৮ সালের জুন মাস পর্যন্ত। ২০১৬ সালে সারা দেশে ৫০০ টাকা এবং ১০০০ টাকার নোট বাতিল ঘোষণা করার পর এটিই ছিল প্রথম বড় সমীক্ষা। সেই সমীক্ষার ভিত্তিতে তৈরি করা রিপোর্টেই দেখা গিয়েছিল, ২০১৭-১৮ সালে সারা দেশে বেকারত্বের হার সমস্ত রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে। ২০১১-১২ সালে যেখানে বেকারত্বের হার ছিল সারা দেশের জনসংখ্যার ২.২ শতাংশ, সেখানে ২০১৭-১৮ সালে বেকারত্বের হার গিয়ে পৌঁছেছে ৬.১ শতাংশে। দেশের কর্মসংস্থানের তথ্য এবং পরিসংখ্যান সংক্রান্ত এই রিপোর্ট খতিয়ে দেখে তা প্রকাশের অনুমতিও দেয় ন্যাশনাল স্ট্যাটিসটিকাল কমিশন। এই রিপোর্ট ডিসেম্বরে পুরোপুরি তৈরি হয়ে গেলেও তা প্রকাশ না করায় ইস্তফাও দেন জাতীয় পরিসংখ্যান কমিশনের ভারপ্রাপ্ত প্রধান সহ দুই সদস্য।

আরও পড়ুন: ৪৫ বছরে সর্বোচ্চ, মোদী জমানায় রেকর্ড বেকারত্বের মধ্যে ভারত, বলল সেই ‘গোপন’ রিপোর্ট

শেষ পর্যন্ত বৃহস্পতিবার সেই গোপন রিপোর্ট ফাঁস হয়ে যায় বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড পত্রিকায়। এর পরই সরকারের তরফে জানানো হয়েছিল, কখন রিপোর্ট প্রকাশ করা হবে, সেই সিদ্ধান্ত সঠিক সময়েই নেওয়া হবে। যদিও সেই সঠিক সময় কখন, তা নির্দিষ্ট করে কিছু বলা হয়নি। অন্য দিকে নীতি আয়োগ জানায়, যে তথ্যের ভিত্তিতে এই রিপোর্ট বানানো হয়েছিল, তা যাচাই করা নয়। এ বার প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা অবশ্য জানালেন, নতুন করে সমীক্ষা করবে এনএসএসও, তাতে দেখা যাবে মোদী জমানায় দেশে আসলে বেকারত্বের হার কমেছে, উল্লেখযোগ্য ভাবে বেড়েছে কর্মসংস্থান।

বেকারত্ব নিয়ে এই টানাপড়েনের ফাঁকেই গতকাল গড় জাতীয় উত্পাদনের তথ্যে সংশোধন করে কেন্দ্র। কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান দফতর বা সিএসও তাদের প্রথম প্রকাশ করা রিপোর্টে দেখিয়েছিল, নোট বাতিলের বছর, অর্থাৎ ২০১৬-’১৭-য় বৃদ্ধির হার ছিল ৭.১%। গত কালই সেই হিসেব ‘সংশোধন’ করে যে নয়া রিপোর্ট পেশ করে সিএসও, তাতে দেখানো হয় ওই সময়ে বৃদ্ধির হার বেড়ে হয়েছে ৮.২%। এ ছাড়া জিএসটি চালুর বছর, অর্থাৎ ২০১৭-’১৮-তেও বৃদ্ধির হার সংশোধিত ৬.৭% থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭.২%।

আরও পড়ুন: পুরনো রিপোর্ট বদলে গেল ১ শতাংশ বৃদ্ধির হারে, কী ভাবে সম্ভব? উঠছে প্রশ্ন

একের পর এক কেন্দ্রীয় সংস্থাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হচ্ছে, গত পাঁচ বছরে বারবারই এই অভিযোগ তোলা হয়েছে বিরোধীদের তরফে। তাঁদের নতুন হাতিয়ার, উন্নয়ন বাড়িয়ে দেখাতে মোদী সরকারের এই একের পর এক তথ্য ‘সংশোধন’। এই নিয়ে গতকাল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে কটাক্ষ করে হিটলার বলেও সম্বোধন করেছিলেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী। প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা বিবেক দেবরায়ের মন্তব্যে স্পষ্ট, সেই তথ্য সংশোধনের তালিকায় এ বার ঢুকে পড়ল বেকারত্ব রিপোর্টও।

(ভারতের রাজনীতি, ভারতের অর্থনীতি- সব গুরুত্বপূর্ণ খবর জানতে আমাদের দেশ বিভাগে ক্লিক করুন।)

Bibek Debroy Unemployment Report NSSO Narendra Modi
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy