Advertisement
E-Paper

কাশ্মীর প্রসঙ্গে মোদীর বিবৃতি চেয়ে জোট বিরোধীদের

বিজেপি নেতারা অবশ্য দিনভর বুঝিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী কাশ্মীর নিয়ে এমন কথা বলতেই পারেন না।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০১৯ ০২:১৯
নরেন্দ্র মোদী ও ডোনাল্ড ট্রাম্প। পিটিআইয়ের ফাইল চিত্র।

নরেন্দ্র মোদী ও ডোনাল্ড ট্রাম্প। পিটিআইয়ের ফাইল চিত্র।

নতুন সরকারের বয়স পঞ্চাশ দিন হয়েছে কালই। বিদেশ নীতিতে নরেন্দ্র মোদীর সাফল্য নিয়ে ঢাক পিটিয়েছে বিজেপি। আর কাল রাতেই পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে পাশে নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করলেন, কাশ্মীর সমস্যা নিয়ে তাঁকে মধ্যস্থতা করতে বলেছেন খোদ মোদী। তার পর আজ সকাল থেকে মোদীকে খুঁজে বেড়াচ্ছেন বিরোধীরা। কিন্তু তিনি ধরা দিলেন না।

বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করকে দিয়ে সংসদের দুই সভায় বিবৃতি অবশ্য দেওয়ানো হয়েছে। লোকসভায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বিদেশমন্ত্রীকে দু’বার পড়তে বলেন বিবৃতিটি। জয়শঙ্কর দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলেন, প্রধানমন্ত্রী এমন কোনও প্রস্তাবই দেননি। কিন্তু একজোট হওয়া বিরোধী নেতাদের বক্তব্য, মন্ত্রীকে অবিশ্বাস কেউ করছেন না। কিন্তু ট্রাম্প তো সরাসরি মোদীর সঙ্গে কথোপকথন উদ্ধৃত করেছেন। তা হলে স্বয়ং মোদী কেন জবাব দিতে আসছেন না?

আজ সকালে ট্রাম্প-ইমরান কথোপকথনের লিখিত বয়ান হাতে নিয়ে সংসদে আসেন সনিয়া গাঁধী। দলের নেতাদের নির্দেশ দেন বিষয়টি নিয়ে সরব হতে। কারণ, সরাসরি প্রধানমন্ত্রীকে চেপে ধরার সুযোগ এসেছে। এর পর দুই সভাতেই ওয়াক আউট করেন বিরোধীরা। এমনকি কাল থেকে প্রধানমন্ত্রী না আসা পর্যন্ত সংসদ পুরোপুরি বয়কট করার কথাও চলছে। রাজ্যসভায় বিরোধী দলনেতা গুলাম নবি আজাদ বলেন, ‘‘সভাকে যেন সরকারের একটি ‘বিভাগ’ বলে না ধরা হয়। আমরা কেউ রাবার-স্ট্যাম্প নই।’’

‘‘দুর্বল বিদেশ মন্ত্রক (ট্রাম্পের বক্তব্য) খারিজ করলে কিছু হবে না। প্রধানমন্ত্রীকেই দেশকে জানাতে হবে, বৈঠকে কী কথা হয়েছিল।’’—রাহুল গাঁধী

জয়শঙ্কর বিবৃতি দেওয়ার পরে টুইট করেন রাহুল গাঁধী। তাতে সরাসরি মোদীকে বিঁধে বলেন, ‘‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলছেন, কাশ্মীর নিয়ে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে মধ্যস্থতা করতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদীই। যদি সত্যি হয়, তা হলে প্রধানমন্ত্রী মোদী ভারত ও ১৯৭২ সালের শিমলা চুক্তির সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন। দুর্বল বিদেশ মন্ত্রক (ট্রাম্পের বক্তব্য) খারিজ করলে কিছু হবে না। প্রধানমন্ত্রীকেই গোটা দেশকে জানাতে হবে, বৈঠকে কী কথা হয়েছিল।’’ রাহুল টুইটে মোদীকে ট্যাগ না করলেও ট্রাম্পকে করেছেন।

কংগ্রেসের আজাদ, অধীর চৌধুরী, মণীশ তিওয়ারি, তৃণমূলের সৌগত রায়দের বক্তব্য: ‘‘নেহরুর জমানা থেকে মনমোহন সিংহ পর্যন্ত কোনও প্রধানমন্ত্রী বিদেশে গেলে ফিরে এসে সংসদকে সবিস্তার জানাতেন। কিন্তু মোদী সে প্রথা তুলে দিয়েছেন। অথচ সব থেকে বেশি বিদেশ ভ্রমণ তিনিই করেন।’’ রাফাল নিয়ে বিবাদের সময় নরেন্দ্র মোদী সম্পর্কে ফ্রান্সের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলাঁদ কী বলেছিলেন তা-ও মনে করাচ্ছেন কংগ্রেসের অনেকে।

বিজেপি নেতারা অবশ্য দিনভর বুঝিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী কাশ্মীর নিয়ে এমন কথা বলতেই পারেন না। গোটা আমেরিকা জানে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প কত ‘মিথ্যা’ বলেন। তাঁর দেশেই এর সমীক্ষা হয়েছে, যাতে এখনও পর্যন্ত ১০ হাজারের বেশি ‘মিথ্যা’ ধরা পড়েছে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী সংসদে এসে সে কথা বলেন কী করে!

কিন্তু এই দ্বিধার সুযোগ নিয়েই বিরোধীরা একজোট হওয়ার সুযোগ পেল। বিজেডি, জেডিএস ছাড়া বাকি বিরোধী জোট বেঁধেছে। তাদের বক্তব্য, কাশ্মীরের মতো স্পর্শকাতর বিষয় যেমন এতে জড়িত, তেমনই প্রধানমন্ত্রীর সংসদকে উপেক্ষা করারও এটি জ্বলন্ত দৃষ্টান্ত। মোদী অবশ্য আজ সংসদ ভবনে নিজের কক্ষেই ছিলেন। সকালে বিজেপির সংসদীয় দলের বৈঠক করেছেন, কিন্তু কোনও কথা বলেননি।

Narendra Modi Donald Trump BJP Kashmir Congress
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy