Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪
India

কাশ্মীরে উদ্ধার চিনা অস্ত্র-ড্রোন, পাকিস্তানকে মদত দিচ্ছে চিন, বলছে সরকারি সূত্র

কাশ্মীরি যুবকদের জঙ্গি-দলে টেনে আনার চেষ্টাও বেড়েছে। সেই সঙ্গে অস্ত্র পাঠানো হচ্ছে ড্রোন বা কোয়াড কপ্টারের মাধ্যমে।

নিয়ন্ত্রণ রেখায় প্রহরারত ভারতীয় সেনা।

নিয়ন্ত্রণ রেখায় প্রহরারত ভারতীয় সেনা।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১২:১০
Share: Save:

লাদাখে সীমান্ত সঙ্ঘাতের আবহেই জম্মু-কাশ্মীর নিয়েও ভারতকে ব্যতিব্যস্ত রাখতে চাইছে চিন। গোয়েন্দা রিপোর্ট উল্লেখ করে একটি সরকারি সূত্রে এমনটাই দাবি করা হয়েছে। সূত্রের মতে, গোয়েন্দারা বলছেন, বেজিংয়ের মদতেই ভূস্বর্গে প্রচুর পরিমাণে অস্ত্রশস্ত্র এবং গোলাবারুদ ঢোকানোর চেষ্টা করছে পাকিস্তান। আরও জানা যাচ্ছে, উদ্দেশ্য সিদ্ধির জন্য ইসলামাবাদকে অস্ত্রশস্ত্র এবং অন্যান্য সরঞ্জাম দিয়েও সাহায্য করছে চিন। কিন্তু ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর কড়া নজরদারির ছাঁকনিতে বারেবারেই ধরা পড়ে গিয়েছে অনুপ্রবেশের চেষ্টা। বার বার ধাক্কা খেয়ে এ বার কৌশল বদলাচ্ছে পাকিস্তান।

কাশ্মীরে অশান্তি জিইয়ে রাখতে পাকিস্তানকে সরাসরি মদত দিচ্ছে চিন— এ সন্দেহ দানা বাঁধছিল বহুদিন ধরেই। সম্প্রতি উপত্যকা থেকে একাধিক বার প্রচুর পরিমাণ অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধারের ঘটনা ঘটেছে। আর সেই অস্ত্রসম্ভারের মধ্যে পাওয়া গিয়েছে চিনা আগ্নেয়াস্ত্র এবং যুদ্ধের সরঞ্জাম। আর তাতে নয়াদিল্লির সন্দেহ আরও জোরদার হয়েছে। গোয়েন্দা দফতর সূত্রে যে খবর পাওয়া যাচ্ছে, তা-ও পাক ও চিনের যোগসাজশের ইঙ্গিতই দিচ্ছে। সরকারি সূত্র বলছে, উপত্যকায় আক্ষরিক অর্থেই বারুদের স্তূপ গড়তে চায় পাক গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই। সূত্র মারফত এটাও জানা গিয়েছে, এই উদ্দেশ্যপূরণে পাকিস্তানকে ক্রমাগত মদত দিয়ে চলেছে চিন।

ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর অভিজ্ঞতা বলছে, উপত্যকায় অনুপ্রবেশ ঘটানোর জন্য সাধারণত গরমের সময়টাই বেছে নেওয়া হয়ে থাকে। কারণ শীত পড়তে শুরু করলে সীমান্তে থাকা বিস্তৃত ঝোপঝাড় শিশির বা বরফে চাপা পড়ে যেতে থাকবে। ফলে ওই রাস্তা ব্যবহার করে লুকিয়ে সীমান্ত পেরনো সম্ভব হবে না। কাশ্মীরে অনুপ্রবেশ এবং অস্ত্র পাচার বন্ধ করতে নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর কড়া নজরদারি চালাচ্ছে ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী। তার জেরে ‘কার্যসিদ্ধি’তে বারেবারেই ধাক্কা খাচ্ছে পাকিস্তান।

আরও পড়ুন: মাদক মামলায় জেরা দীপিকাকে, এনসিবি-র দফতরে অভিনেত্রী

প্ল্যান এ ধাক্কা খাওয়ায়, এ বার দ্বিতীয় পরিকল্পনা নিয়ে আসরে নেমেছে পাকিস্তান। ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী সূত্রে জানা যাচ্ছে, সম্প্রতি নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর ‘নিরস্ত্র’ জঙ্গিদের অনুপ্রবেশ ঘটাচ্ছে পাকিস্তান। আর তাদের অস্ত্র পাঠানো হচ্ছে ড্রোন মারফত বা অন্য কোনও ভাবে। অনুপ্রবেশ ঘটানোর জন্য নজর রাখা হচ্ছে ভারতীয় বাহিনীর উপর। বাহিনীর কর্তারাই বলছেন, গত কয়েক মাসে ফিরোজপুর থেকে আখনূর এবং রাজৌরি থেকে টাংধরের মধ্যে প্রতিটি জায়গায় নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর অস্ত্রবোঝাই ড্রোন উদ্ধারের ঘটনা বহুলাংশে বেড়ে গিয়েছে।

একই সঙ্গে কাশ্মীরি যুবকদের জঙ্গি-দলে টেনে আনার চেষ্টাও গত দু’মাসে বেশ কয়েক গুণ বেড়ে গিয়েছে বলে ওই সরকারি সূত্রে খবর। সেই সঙ্গে কোনও রকম ‘ঝুঁকি’ ছাড়াই অস্ত্র পাঠানো হচ্ছে ড্রোন বা কোয়াড কপ্টারের মাধ্যমে। সূত্রের ইঙ্গিত, ‘নিরাপদ’ পথে কাশ্মীরে অস্ত্র পাঠাতে চিনা ড্রোন এবং কোয়াড কপ্টার ব্যবহার করছে পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই। সেই সঙ্গে রয়েছে চিনা অস্ত্রশস্ত্রও।

উদ্ধার হওয়া চিনা অস্ত্রশস্ত্র।

আরও পড়ুন: ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ ৯৩ হাজার, মহারাষ্ট্রে মোট আক্রান্ত ১৩ লক্ষ ছাড়াল

সরকারি তথ্য জানাচ্ছে, কাশ্মীর থেকে একাধিক বার ইএমইআই টাইপ ৯৭ এনএসআর রাইফেল উদ্ধার করেছে সেনাবাহিনী। ওই রাইফেল তৈরি করে চিনা সংস্থা নরিনকো এবং তা চিনের সেনা ব্যবহারও করে। গোয়েন্দাদের ধারণা, ওই রাইফেলই ‘উপহার’ হিসাবে ইসলামাবাদের হাতে তুলে দিচ্ছে বেজিং। এ ছাড়াও চিনা ছাপ থাকা বিপুল আগ্নেয়াস্ত্র কাশ্মীর থেকে উদ্ধার করেছে সেনাবাহিনী। ভারতীয় গোয়েন্দা সূত্রে বলা হচ্ছে, গত ১৪ সেপ্টেম্বর গুরেজ সেক্টর দিয়ে অনুপ্রবেশের চেষ্টা চালায় কয়েক জন জঙ্গি। তাদের পাল্টা চ্যালেঞ্জ জানায়, ভারতীয় বাহিনী। প্রবল বাধার মুখে পড়ে কিষাণগঙ্গা নদীতে ঝাঁপ দেয় জঙ্গিদের ওই দলটি। কিন্তু তারা অস্ত্রশস্ত্র বোঝাই একটি রুকস্যাক ফেলে যায়। তার মধ্যে মিলেছে চিনা সংস্থা নরিনকো-র তৈরি একটি কিউবিজেড ৯৫ রাইফেল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE