Advertisement
E-Paper

কাটমানি, সন্ত্রাসে তোলপাড় লোকসভা, আক্রমণে রাজ্যের বিজেপি সাংসদেরা

লকেট আজ বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী স্বীকার করে নিয়েছেন যে, কাটমানি নেওয়া হয়। তাঁর দলের লোকেদের তা ফিরিয়ে দিতে নির্দেশ দিয়েছেন। কাটমানি কাণ্ডে জড়িত মন্ত্রীরাও।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ জুলাই ২০১৯ ০২:৫৪
জিরো আওয়ারে কাটমানি নিয়ে লকেট চট্টোপাধ্যায়।

জিরো আওয়ারে কাটমানি নিয়ে লকেট চট্টোপাধ্যায়।

কাটমানি ও রাজনৈতিক হিংসার ঘটনা নিয়ে আজও লোকসভায় তেড়েফুঁড়ে আক্রমণে নামলেন রাজ্যের বিজেপি সাংসদেরা। জিরো আওয়ারে কাটমানি নিয়ে লকেট চট্টোপাধ্যায় এবং রাজনৈতিক হিংসার প্রশ্নে সরব হন দিলীপ ঘোষ। জোড়া হামলার মুখে পড়ে দৃশ্যতই অস্বস্তিতে পড়ে যান তৃণমূল নেতৃত্ব।

লকেট আজ বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী স্বীকার করে নিয়েছেন যে, কাটমানি নেওয়া হয়। তাঁর দলের লোকেদের তা ফিরিয়ে দিতে নির্দেশ দিয়েছেন। কাটমানি কাণ্ডে জড়িত মন্ত্রীরাও। ৮-১০ বছরের মাথায় মুখ্যমন্ত্রীর হঠাৎ মনে হল টাকা ফেরাতে হবে!’’ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একটি পুরনো মন্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে লকেট বলেন, ‘‘দলীয় কর্মীদের ২৫ শতাংশ অর্থ রেখে, বাকি ৭৫ শতাংশ তাঁকে দিতে বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। যার মানে হল মুখ্যমন্ত্রীর কাছে ৭৫ শতাংশ অর্থ রয়েছে।’’ এর পরে কারও নাম না করে লকেট বলেন, ‘‘কালীঘাটে ১৩টি ফ্ল্যাট, পুরী ও গোয়ার একাধিক হোটেল ওই কাটমানির টাকায় হয়েছে। তাইল্যান্ড থেকে অবৈধ ভাবে সোনা আনা হয়েছে। কোথায় রয়েছে সেই টাকা?’’ লকেট মুখ খুলতেই প্রবল হইচই শুরু করেন তৃণমূলের সাংসদেরা। লকেট কটাক্ষ করে বলেন, ‘‘শুধু চিৎকার করে লাভ নেই, তৃণমূল নেত্রীকে এর জবাব দিতে হবে।’’

মধ্যাহ্নভোজনের বিরতির ঠিক আগে রাজনৈতিক হিংসা নিয়ে দিলীপ ঘোষ সরব হতেই ফের উত্তপ্ত হয় লোকসভা। পাশে বসা সাংসদ অর্জুন সিংহকে দেখিয়ে দিলীপ বলেন, ‘‘ব্যারাকপুরের সাংসদ অর্জুন হামলার শিকার। নির্বাচনের সময়ে বাবুল-সহ বিজেপির দশ প্রার্থীর উপরে হামলা হয়েছিল। নিগ্রহের শিকার হন রূপা গঙ্গোপাধ্যায়ও। রাজ্যে বিজেপির ১৫৮ জন সমর্থক হিংসায় আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি। প্রকাশ্যে গুলি চলছে, যাতে দু’জন মারাও গিয়েছেন।’’ এর মধ্যেই প্রবল চিৎকার শুরু করে দেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে প্রায় গোটা তৃণমূল বেঞ্চ।

রাজ্যের বিজেপি সাংসদেরা যে ভাবে প্রতিদিন সংসদে পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতি নিয়ে সরব হচ্ছেন তাতে বেশ অস্বস্তিতে তৃণমূল সাংসদেরা। যে ভাবে রোজ পশ্চিমবঙ্গের নেতিবাচক ছবি সংসদে তুলে ধরা হচ্ছে, তাতে রাজ্যের ভাবমূর্তিই খারাপ হচ্ছে বলে ঘরোয়া মহলে স্বীকার করে নিয়েছে দল। তাই আজ লোকসভায় প্রথমে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় ও পরে মহুয়া মৈত্র সরব হন। সুদীপবাবু বলেন, ‘‘আইনশৃঙ্খলা রাজ্যের বিষয় হওয়ায় তা লোকসভায় তোলা যায় না।’’ আর মহুয়ার কথায়, ‘‘উত্তরপ্রদেশ-সহ অন্যান্য রাজ্যেও লাগামহীন হিংসা হচ্ছে। কিন্তু আলোচনায় থাকছে কেবল পশ্চিমবঙ্গ।’’ এর পর স্পিকার ওম বিড়লা বলেন, ‘‘সংসদে সকলের উদ্দেশ্য হওয়া উচিত নিজের কেন্দ্র বা দেশের সমস্যা তুলে ধরা।’’

স্পিকারের ওই মন্তব্যে কিছুটা ব্যাকফুটে চলে যান বাংলার বিজেপি নেতারা। এর পর সংসদে বিজেপির কার্যালয়ে পশ্চিমবঙ্গের ভারপ্রাপ্ত নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়ের সঙ্গে বৈঠকে বসেন দিলীপ-লকেটেরা। ঠিক হয় কেন বাংলার বিষয়টি তোলা প্রয়োজন, তা স্পিকারকে জানানো হবে। বেলা তিনটে নাগাদ বাংলার প্রতিনিধিরা দেখা করেন স্পিকারের সঙ্গে। তাঁকে বলা হয়, তৃণমূল সমর্থক ও পুলিশেরা বিজেপি কর্মীদের চিহ্নিত করে অত্যাচার চালাচ্ছে। হামলার শিকার বিজেপি সাংসদেরাও। তাই সংসদে সরব হওয়া জরুরি।

বৈঠক শেষে বাংলার এক বিজেপি সাংসদ বলেন, ‘‘স্পিকারের সামনে রাজ্যের পরিস্থিতি তুলে ধরা হয়েছে। সাংসদরা নোটিস দিলে আলোচনার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।’’ এ সপ্তাহ থেকেই বাংলা-সহ বিভিন্ন রাজ্যের সাংসদদের সঙ্গে বৈঠক করবেন নরেন্দ্র মোদী। তাঁর কাছেও বাংলার পরিস্থিতি তুলে ধরার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন রাজ্যের বিজেপি সাংসদেরা।

Perliament Bribe
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy