Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪
National News

ফোনে কথা বাবা-ছেলের, তড়িঘড়ি চার্টার্ড বিমান ধরে লখনউ ফিরলেন মুলায়ম

বিরাট ভাঙনের মুখে দাঁড়িয়ে থাকা সমাজবাদী পার্টিতে ফের সেতুবন্ধনের চেষ্টা। দলের প্রবীণ নেতা আজম খানের চেষ্টায় সাত সকালে ফোনে কথা বললেন অখিলেশ-মুলায়ম। কয়েক ঘণ্টা পর বাবা-ছেলের বৈঠকও হল। তবে সে সবের মাঝেই নির্বাচন কমিশনে গিয়ে ‘সাইকেল’ প্রতীকের উপর নিজেদের দাবি পেশ করে এল অখিলেশ শিবির।

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

সংবাদ সংস্থা
শেষ আপডেট: ০৩ জানুয়ারি ২০১৭ ১৫:২১
Share: Save:

বিরাট ভাঙনের মুখে দাঁড়িয়ে থাকা সমাজবাদী পার্টিতে ফের সেতুবন্ধনের চেষ্টা। দলের প্রবীণ নেতা আজম খানের চেষ্টায় সাত সকালে ফোনে কথা বললেন অখিলেশ-মুলায়ম। কয়েক ঘণ্টা পর বাবা-ছেলের বৈঠকও হল। তবে সে সবের মাঝেই নির্বাচন কমিশনে গিয়ে ‘সাইকেল’ প্রতীকের উপর নিজেদের দাবি পেশ করে এল অখিলেশ শিবির। রামগোপাল যাদব নির্বাচন কমিশনকে জানালেন, দলের ৯০ শতাংশ জনপ্রতিনিধি এবং কর্মী অখিলেশ যাদবের সঙ্গে রয়েছেন। অতএব, ‘সাইকেল’ প্রতীকের দাবিদার অখিলেশই।

সপা সূত্রের খবর, মঙ্গলবার সকালে আজম খানের উদ্যোগে অখিলেশ এবং মুলায়মের মধ্যে ফোনে কথা হয়। মুলায়ম তখন দিল্লিতে ছিলেন। অখিলেশ ছিলেন লখনউতেই। ফোনে বাবা-ছেলের কথা হওয়ার পরই মুলায়ম চার্টার্ড বিমান ধরে লখনউ রওনা হন। সেই বিমানে মুলায়মের সঙ্গে ছিলেন অখিলেশ মন্ত্রিসভার এক সদস্য। নেতাজি লখনউ পৌঁছনোর পর অখিলেশ যান তাঁর বাসভবনে। দু’জনের মধ্যে বেশ কিছু ক্ষণ কথা হয়।

লখনউয়ের বৈঠকে বাবা-ছেলেতে এ দিন কী কথা হয়েছে, তা নিয়ে কোনও পক্ষই মুখ খোলেনি। অখিলেশের সঙ্গে ফোনে মুলায়মের কী এমন কথা হয়েছিল যে মুলায়ন তড়িঘড়ি চার্টার্ড বিমান ধরে দিল্লি থেকে লখনউ পাড়ি দিলেন, তাও স্পষ্ট নয়। কিন্তু উত্তরপ্রদেশের যাদব পরিবার তথা সপা যে অভূতপূর্ব সঙ্কটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে, সেই সঙ্কট কাটানোর লক্ষ্যেই যে বাবা-ছেলের মধ্যে এ দিন প্রথমে ফোনে কথা এবং পরে মুখোমুখি বৈঠক হয়েছে, তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলের সংশয় নেই।

নেতাজির সঙ্গে টিপুর ফের কথা শুরু হয়েছে বলে অখিলেশ শিবির অবশ্য চুপচাপ বসে থাকছে না। দলের কর্তৃত্ব অখিলেশ যাদবের হাতে তুলে দেওয়ার যে তোড়জোড় শুরু হয়েছিল, তা জোরকদমেই চলছে। রামগোপাল যাদব এ দিন অখিলেশ শিবিরের তরফ থেকে নির্বাচন কমিশনে গিয়েছিলেন। কমিশন থেকে বেরিয়ে রামগোপাল বলেন, ‘‘আমরা নির্বাচন কমিশনকে জানিয়েছি, ৯০ শতাংশ বিধায়ক অখিলেশ যাদবের পক্ষে রয়েছেন। তাই তাঁর নেতৃত্বাধীন দলকেই সমাজবাদী পার্টি হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া উচিত।’’ সপার বাঙালি নেতা তথা রাজ্যসভা সাংসদ কিরণময় নন্দও অখিলেশের হয়ে সক্রিয় হয়েছেন। রামগোপাল-অখিলেশদের ডাকা জাতীয় কর্মসমিতির অধিবেশনে কিরণময় সভাপতিত্ব করায়, তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করেছেন মুলায়ম। কিরণময় আজ দিল্লিতে জানিয়েছেন, তাঁকে বহিষ্কারের যে চিঠি দেওয়া হয়েছে, তাতে মুলায়ম সিংহ যাদবের স্বাক্ষর নিয়ে সংশয়ের যথেষ্ট অবকাশ রয়েছে। ওই স্বাক্ষর আসলে মুলায়মের নয়, এমনটাই ইঙ্গিত কিরণময় নন্দের।

আরও পড়ুন: সাইকেল গেলে খাব কী? কমিশনে দরবার, চলছে রফার খোঁজও

মুলায়ম সিংহ যাদব গতকাল নিজেই নির্বাচন কমিশনে গিয়েছিলেন। ‘সাইকেল’ প্রতীক যেন তাঁর নেতৃত্বাধীন দলের হাতেই থাকে, মুলায়ম কমিশনে তেমনই দাবি পেশ করে এসেছেন। তাঁর সঙ্গে কমিশনে গিয়েছিলেন, শিবপাল সিংহ যাদব, অমর সিংহ এবং জয়া প্রদা। তাঁদের দাবি, অখিলেশ ও রামগোপালকে ৩০ ডিসেম্বর দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। ৩১ তারিখ মৌখিক ভাবে সে সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা হয়। কিন্তু লিখিত ভাবে তা করা হয়নি। অতএব তাঁদের বহিষ্কার বলবৎ ছিল এবং ১ জানুয়ারি সেই বহিষ্কৃত নেতাদের ডাকেই জাতীয় কর্মসমিতির অধিবেশন হয়। বহিষ্কৃত নেতাদের ডাকা অধিবেশনের কোনও বৈধতা নেই বলে মুলায়ম শিবিরের দাবি। পাল্টা যুক্তি দিয়ে অখিলেশ শিবির বলছে, রামগোপাল এবং অখিলেশকে শো-কজ নোটিস পাঠানোর আধ ঘণ্টার মধ্যে তাঁদের বহিষ্কার করা হয়েছিল। শো-কজের জবাব দেওয়ার সুযোগ না দিয়ে বহিষ্কার করা যায় না। তাই বহিষ্কারটাই অবৈধ।

এই পরিস্থিতিতে নির্বাচন কমিশনকেই কোনও সিদ্ধান্ত নিতে হবে, নাকি মুলায়ম-অখিলেশ কোনও রফাসূত্রে পৌঁছতে পারবেন, সে দিকেই তাকিয়ে রয়েছে গোটা দেশের রাজনৈতিক মহল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE