Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

প্রধানমন্ত্রীর মুখে মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সাফল্য!

‘‘মাফ করবেন, আমার কথা খারাপ ভাবে নেবেন না। কী ভাবে চলছে দুনিয়া?’’ ‘দুনিয়া’ বলে যা বলতে চাইলেন, সেটি আসলে মোদী সরকারের একটি মন্ত্রক। সমালোচনার সুরে কথাগুলি যিনি বললেন, তিনি সেই সরকারেরই অধুনা প্রধান! প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী! সমালোচনা করলেন গুজরাতের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে, চার বছরের বেশি সময় প্রধানমন্ত্রীর কুর্সিতে থাকার নিরিখে নয়।

নরেন্দ্র মোদী। ফাইল চিত্র।

নরেন্দ্র মোদী। ফাইল চিত্র।

দিগন্ত বন্দ্যোপাধ্যায়
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৩ জুলাই ২০১৮ ০৪:০০
Share: Save:

নরেন্দ্র মোদী সরকারের মন্ত্রীর দিকে মুখ ঘুরিয়ে একটু ধমকই দিয়ে বসলেন গুজরাতের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী।

‘‘মাফ করবেন, আমার কথা খারাপ ভাবে নেবেন না। কী ভাবে চলছে দুনিয়া?’’ ‘দুনিয়া’ বলে যা বলতে চাইলেন, সেটি আসলে মোদী সরকারের একটি মন্ত্রক। সমালোচনার সুরে কথাগুলি যিনি বললেন, তিনি সেই সরকারেরই অধুনা প্রধান! প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী! সমালোচনা করলেন গুজরাতের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে, চার বছরের বেশি সময় প্রধানমন্ত্রীর কুর্সিতে থাকার নিরিখে নয়।

বৃহস্পতিবার দিল্লিতে ভারতীয় পুরাতত্ব সর্বেক্ষণ বা আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়ার (এএসআই) নতুন ভবন উদ্বোধন করেন মোদী। মঞ্চে সে সময় ছিলেন তাঁর সংস্কৃতি বিষয়ক স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী মহেশ শর্মা, এএসআই-এর মহানির্দেশক উষা শর্মা এবং সচিব রাঘবেন্দ্র সিংহ। কথা বলতে বলতে হঠাৎই মোদী বলেন, ‘‘দুনিয়া কী ভাবে চলছে? আজ মহাকাশ প্রযুক্তির মাধ্যমে হাজার মাইল উপর থেকে দিল্লির কোন গলিতে কোন স্কুটার আছে, তার নম্বর কত, তার ছবি নেওয়া যায়। কিন্তু ভারতের সৌধগুলিতে লেখা থাকে, ‘এখানে ছবি তোলা মানা’। সময় বদলে গিয়েছে, প্রযুক্তির বদল হয়েছে।’’ এর পরেই সোজা চলে গেলেন গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন তাঁর ‘সাফল্য’ বর্ণনায়।

মোদী বলেন, ‘‘আমি যখন গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী ছিলাম, তখন সর্দার সরোবর বাঁধে ছবি তোলা নিষিদ্ধ ছিল। আমি পুরো ব্যবস্থা উল্টে দিই। মুখ্যমন্ত্রী ছিলাম, তাই করতে পারতাম। আমি বললাম, ছবি তুললেই পুরস্কার দেব। শর্ত, সেগুলি অনলাইনে পোস্ট করতে হবে। এর পরেই লোক আসতে শুরু করল।’’ বহু দিন পরে আজ না দেখেই মিনিট কুড়ি বক্তৃতা দেন মোদী। আর তার প্রায় পুরোটা জুড়ে রইল গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তাঁর সাফল্য-গাথা।

কী ভাবে ‘গাইড’দের মধ্যে প্রতিযোগিতার আয়োজন করে তাদের মানোন্নয়ন করেছিলেন, কী ভাবে কচ্ছের মরুভূমিকে পর্যটনক্ষেত্র হিসেবে গড়ে তুলেছিলেন, কী ভাবে সেখানকার আদিবাসী ‘বাচ্চা’দের প্রশিক্ষণ দিয়েছিলেন— এমনই নানা কথা শোনালেন। স্বাভাবিক ভাবেই বিরোধীরা বলছেন, চার বছরের বেশি সময় ধরে প্রধানমন্ত্রীর গদিতে আছেন মোদী। সরকারের সব মন্ত্রক তাঁর ইশারাতেই চলে। অথচ চার বছর পরেও সরকারিতন্ত্রে একটি ছোট্ট বিষয় চালু করতে প্রকাশ্যে মৃদু ধমক দিতে হচ্ছে মন্ত্রীকে! সাফল্যের কথা বলতে গেলে গুজরাতের প্রসঙ্গ টানতে হচ্ছে! এ থেকেই স্পষ্ট যে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তাঁর কোনও সাফল্য নেই। কংগ্রেস নেতা মণীশ তিওয়ারির কথায়, ‘‘মোদী কি ভুলে যান সরকারটা তাঁর? তিনিই প্রধানমন্ত্রীও!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE