রায়বরেলী কেন্দ্র থেকে প্রার্থী হতে পারেন প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢ়ড়া। —ফাইল চিত্র
রায়বরেলী আসনে প্রার্থী হচ্ছেন প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢড়া? এআইসিসি-র সাধারণ সম্পাদক পদে নিয়োগ তথা রাজনীতিতে অভিষেকের পর রাজনৈতিক মহলে এই জল্পনা চরমে। সনিয়া গাঁধীর আসনেই তাঁকে প্রার্থী করা হচ্ছে বলে দলের একটি সূত্রে ইঙ্গিত মিলেছে। রাজনৈতিক পরিস্থিতিও সেদিকেই মোড় নিচ্ছে বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা।
এমন জল্পনার পিছনে যথেষ্ট রসদও রয়েছে। উত্তরপ্রদেশের কংগ্রেসের দুই শক্ত ঘাঁটি রায়বরেলী এবং অমেঠী। রায়বরেলী তাঁর মা সনিয়া গাঁধীর কেন্দ্র, আর অমেঠীতে দাঁড়ান দাদা রাহুল। এত দিন পর্যন্ত প্রিয়ঙ্কার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডও আবর্তিত হত মূলত এই দুই কেন্দ্র ঘিরেই। এখানকার ভোটার তথা আম জনতার সঙ্গে প্রিয়ঙ্কার যোগাযোগ খুব ভাল। এই দুই লোকসভা কেন্দ্র যেমন হাতের তালুর মতো চেনেন প্রিয়ঙ্কা, তেমনই এখানকার মানুষের ‘পাল্স’ বোঝেন তিনি। তার প্রমাণও হাতেনাতে রয়েছে।
২০১৪ সালের লোকসভা ভোটে বিপুল মোদী হাওয়ার মধ্যেও এই দুই কেন্দ্রে বিপুল ভোটে জয় পান সনিয়া এবং রাহুল গাঁধী। এমনকী, রাহুলের বিপরীতে হেভিওয়েট স্মৃতি ইরানিকে প্রার্থী করেও অমেঠীতে পদ্ম ফোটেনি। আবার সনিয়া-রাহুল যখন সারা দেশে ভোট প্রচারে এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে ছুটে বেড়িয়েছেন, তখন প্রিয়ঙ্কা আগলে রেখেছিলেন রায়বরেলী এবং অমেঠীর দুর্গ। নিরন্তর ভোটারদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা, নেতা-কর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করে স্ট্র্যাটেজি ঠিক করা থেকে শুরু করে নির্বাচনের যাবতীয় দায়িত্ব ছিল কার্যত তাঁর উপরেই। মা এবং দাদাও প্রিয়ঙ্কার উপরে দায়িত্ব ছেড়ে দিয়ে কার্যত নিশ্চিন্ত ছিলেন।
আরও পড়ুন: প্রিয়ঙ্কাকে রাজনীতিতে আসতে রাজি করিয়েছেন রাহুল, চূড়ান্ত হয়েছিল নিউইয়র্কে
কিন্তু এবার পরিস্থিতি পাল্টেছে। রাহুল গাঁধীকে সভাপতি করার পর থেকে সনিয়া গাঁধী সক্রিয় রাজনীতি থেকে ধীরে ধীরে সরছেন। এই পরিস্থিতিতে তাঁর আসনেই প্রিয়ঙ্কাকে প্রার্থী করার সম্ভাবনা যথেষ্ট বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। আবার উত্তরপ্রদেশে তাঁর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে পূর্বাঞ্চল এলাকায়। রায়বরেলী-অমেঠীও এই পূর্বাঞ্চলের মধ্যেই পড়ে। ফলে তাঁকে রায়বরেলীতে প্রার্থী করার জল্পনা যে অমূলক নয়, তা মানছেন অনেকেই। কংগ্রেস সূত্রেও এই দাবি উড়িয়ে দেওয়া হয়নি।
আরও একটি কারণে সম্ভাবনা জোরদার হয়েছে। লোকসভা ভোটে উত্তরপ্রদেশের পশ্চিমাঞ্চলের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়াকে। কংগ্রেসের তরুণ ব্রিগেডের অন্যতম মুখ জ্যোতিরাদিত্য। মধ্যপ্রদেশে বিধানসভা ভোটে তাঁর সাংগঠনিক ক্ষমতাও পরীক্ষীত এবং প্রশ্নাতীত। রাহুল আগেই জানিয়েছেন, মায়াবতী-অখিলেশের প্রতি শ্রদ্ধা থাকলেও উত্তরপ্রদেশে সব আসনে প্রার্থী দেবে কংগ্রেস। সূত্রের খবর, এখনও পর্যন্ত সেই পথেই এগোচ্ছে দল।
আরও পড়ুন: চিনের অস্বস্তি বাড়িয়ে ভারতের সঙ্গে যৌথ মহড়ায় আসছে আফ্রিকার ১২ দেশ
তবে এবারের লোকসভা ভোটে উত্তরপ্রদেশে এক ঝাঁক তরুণ তুর্কি প্রার্থী হতে চলেছে বলে দলীয় সূত্রে ইঙ্গিত। ৯০ শতাংশ প্রার্থীর বয়স ৫০ এর নীচে হতে চলেছে। তাঁদের মধ্যে আবার অর্ধেক প্রার্থীই হতে পারেন ৪০-এর নীচে। আর এই তরুণ ব্রিগেডের নেতৃত্ব দেবেন প্রিয়ঙ্কা-জ্যোতিরাদিত্য। দলের এক বর্ষীয়ান নেতা বলেছেন, ‘‘উত্তরপ্রদেশে কংগ্রেসের এই দল হতে যাচ্ছে সম্পূর্ণ নতুন এক উজ্জীবিত দল। যাঁরা জান-প্রাণ দিয়ে লড়াই করবেন। উত্তরপ্রদেশে দলকে শক্তিশালী করাই হবে এই তরুণ ব্রিগেডের লক্ষ্য।
(ভারতের রাজনীতি, ভারতের অর্থনীতি- সব গুরুত্বপূর্ণ খবর জানতে আমাদের দেশ বিভাগে ক্লিক করুন।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy