কাশ্মীরের পুলওয়ামায় জঙ্গি হানায় জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিযোগ করলেন, এই ঘটনা নিয়ে রাজনীতি শুরু হয়েছে। তাঁর দাবি, এত বড় ঘটনায় ৭২ ঘণ্টা রাষ্ট্রীয় শোক পালন করা হোক। এত বড় ঘটনার পরেও প্রধানমন্ত্রী ট্রেনের যাত্রার সূচনা করায় তাঁর সমালোচনা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
শুক্রবার দিল্লি সফর সেরে বিকেলে নবান্নে পৌঁছন মমতা। নবান্ন থেকে বেরোনোর মুখে তিনি বলেন, ‘‘কাশ্মীরে রাষ্ট্রপতির শাসন চলছে। অনেকে বলছেন, এটা ইন্টেলিজেন্সের ব্যর্থতা। জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা কী করছিলেন? এত জওয়ান মারা গিয়েছেন। মানুষের এটা জানার অধিকার রয়েছে। এত কিছুর পরে জানা গেল, এই ভাবে এই ভাবে সব ঘটেছে। আগে জানা গেল না কেন?’’
ওই ঘটনা নিয়ে রাজনীতি না-করার আবেদন জানান মমতা। প্রধানমন্ত্রীর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী নিজের বাসভবন থেকে রেল প্রকল্পের উদ্বোধন করেছেন। এত গুরুতর সময়ে রাজনৈতিক বা সরকারি কর্মসূচি পিছিয়ে দেওয়া উচিত ছিল। যখন রাজনৈতিক কোনও নেতার মৃত্যু হয়, তখন তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করা হয়। এত জন জওয়ানের মৃত্যুতে মনে হল না, এটা করা উচিত? আমি শহিদ জওয়ানদের জন্য ৭২ ঘণ্টার শোক ঘোষণার দাবি জানাচ্ছি।’’
সাম্প্রতিক জঙ্গি হামলা সম্পর্কে এগুলি জানেন?
আরও পড়ুন: ‘বহুত বড়ি গলতি’, পাকিস্তানকে উচিত শিক্ষার হুঁশিয়ারি মোদীর, সেনাবাহিনীকে ‘স্বাধীনতা’
আজ, শনিবার সংসদীয় দলগুলির বৈঠক ডেকেছে কেন্দ্র। যদিও তাকে সর্বদলীয় বৈঠক বলতে রাজি নন মুখ্যমন্ত্রী। রাজনৈতিক দলগুলির পরিবর্তে সংসদীয় দলগুলিকে বৈঠকে আমন্ত্রণ জানানোর সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘পঠানকোটের পরে এত বড় ঘটনা কী করে ঘটল? এটা সব রাজনৈতিক দলের বৈঠক নয়। সংসদীয় দলের বৈঠক। লোকসভা শেষ হয়ে গিয়েছে। ভোট অব থ্যাঙ্কস হয়ে গিয়েছে। কিন্তু এত বড় ঘটনার পরে সর্বদলীয় বৈঠক ডাকা জরুরি ছিল। খারাপ সিদ্ধান্ত দেশের ক্ষতি করতে পারে। আমার সন্দেহ, কিছু পরিকল্পনা থাকতে পারে। খামতি কোথায় ছিল, তা খুঁজে বার করা দরকার। এটা আমাদের দেশের সুরক্ষার বিষয়। সকলে মিলে এটা নিয়ে ভাবতে হবে। এটা নিয়ে রাজনীতি করা উচিত নয়। কিন্তু রাজনীতি করা শুরু হয়ে গিয়েছে।’’
আরও পড়ুন: উরি-পঠানকোট-ডোকলাম-মায়ানমারের পরে পুলওয়ামা, ফের প্রশ্নের মুখে ডোভাল নীতি
মুখ্যমন্ত্রী জানান, তৃণমূলের সংসদীয় দলের নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় ওই বৈঠকে যাবেন। বিদেশনীতি নিয়ে মন্তব্য না-করলেও দেশের অবস্থানকে সমর্থনের বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, প্রকৃত তথ্য বার করতে গোটা ঘটনা নিয়ে নিবিড় অনুসন্ধান হওয়া উচিত। তাতে দেশের সুরক্ষার জন্য যাঁরা কাজ করেন, তাঁদের মনোবল বাড়বে।
অন্য দিকে, কাশ্মীরের ঘটনা সংক্রান্ত বিষয় ছাড়া আগামী দু’দিন অন্য সব কর্মসূচি বাতিল করার জন্য দেশের সব প্রান্তে দলীয় কার্যালয়কে নির্দেশ দিয়েছে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের দফতর।