প্রতীকী ছবি
দেশে এক দিনে এ বার করোনা সংক্রমিত প্রায় ১০ হাজার মানুষ। রেকর্ড সংক্রমণ পরপর পাঁচ দিন। কোনও কোনও পরিসংখ্যান বলছে, বিশ্বে করোনা রোগীর সংখ্যার নিরিখে গত কাল ইটালিকে পেরোনোর পরে এ বার স্পেনকেও ছাড়িয়ে পাঁচ নম্বরে উঠে এসেছে ভারত।
গত ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমিত ৯,৯৭১ জন। মৃত ২৮৭ জন। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক ঘোষণা না-করলেও এমসের ডিরেক্টর রণদীপ গুলেরিয়ার মতে, দিল্লিতে গোষ্ঠী সংক্রমণ শুরু হয়ে গিয়েছে (সেখানে প্রতি চারটি পরীক্ষায় একটি রিপোর্ট পজ়িটিভ আসছে)। আগামিকাল থেকে কন্টেনমেন্ট জ়োনের বাইরে হোটেল-রেস্তরাঁ, শপিং মল, ধর্মস্থান, অফিস, খুলছে। ‘আনলক’-এর এই সময়টা যথাযথ কি না, সেই প্রশ্নের উত্তরে গুলেরিয়া সাফ বলেছেন, লকডাউন সফল হলেও তাতে করোনার সংক্রমণ চোখে পড়ার মতো কমেনি। তিনি বলেন, ‘‘মানুষের উচিত ছিল, গুরুত্ব দিয়ে লকডাউন মানা। সেটা তাঁরা করেননি। কাজেই এখন দায়িত্বশীল আচরণ করা উচিত, কারণ অর্থনীতির পাশাপাশি গরিবদেরও খেয়াল রাখতে হবে।’’ সরকারের যদিও বক্তব্য, ঠিক সময়েই লকডাউন হয়েছে। করোনার বিরুদ্ধে লড়ার কৌশলে খুঁটিনাটি স্তরে পরিবর্তন আনা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়া হয়নি, এই অভিযোগও মানতে চায়নি কেন্দ্র।
এমসের ডিরেক্টর আরও জানিয়েছেন, দেশে সংক্রমণ এখনও শীর্ষ ছোঁয়নি। বিভিন্ন রাজ্যে বিভিন্ন সময়ে শীর্ষ ছুঁতে পারে সংক্রমণ। তাঁর মতে, দেশে করোনা রোগীর সংখ্যা বেড়ে চলাটা প্রত্যাশিত। কারণ ভারতের জনসংখ্যা ইউরোপের দু’তিনটি দেশের মিলিত জনসংখ্যার চেয়ে বেশি। কিন্তু ওই দেশগুলির থেকে ভারতে মৃত্যু-হার কম। স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, দেশে প্রতি লক্ষে মৃত্যুর হার ০.৪৯। বিশ্বে ওই হার ৫.১৭। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার রিপোর্টও বলছে, যে সমস্ত দেশ লকডাউন তুলেছে, তাদের মধ্যে ভারতেই মৃত্যু-হার সর্বনিম্ন। বরং জার্মানি (১০.৩৫), ইটালি (৫৫.৭৮), ব্রিটেন (৫৯.৬২) ও স্পেন (৫৮.০৬)-এ মৃত্যু-হার অনেক বেশি। প্রতি লক্ষে সংক্রমিতের হারেও ভারতের (১৭.৩২) চেয়ে এই দেশগুলি অনেক এগিয়ে। বিশ্বে ওই হার ৮৭.৭৪। কেন্দ্রের বক্তব্য, দেশে অ্যাক্টিভ করোনা রোগীর সংখ্যা (১,২০,৪০৬) এবং সুস্থ রোগীর সংখ্যা (১,১৯,২৯২) প্রায় সমান হয়ে এসেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ৫,২২০ জন সুস্থ হয়েছেন। দেশে সুস্থতার হার ৪৮.৩৭ শতাংশ। এখনও পর্যন্ত ৪৬.৬৬ লক্ষেরও বেশি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। দেশে ৭৫৯টি ল্যাব সক্রিয়।
এত দিন করোনা নিয়ে সরকারের সাংবাদিক বৈঠকগুলি পরিচালনা করছিলেন পিআইবি-র প্রিন্সিপাল ডিজি কে এস ধাতওয়ালিয়া। করোনার উপসর্গ দেখা দেওয়ায় আজ এমসে ভর্তি করা হয় তাঁকে। পরীক্ষায় করোনা পজ়িটিভ এসেছে। গত বুধবারই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর ও নরেন্দ্র সিংহ তোমরের সঙ্গে সাংবাদিক বৈঠকে ছিলেন তিনি। ফলে চিন্তা বেড়েছে দিল্লিতে। এ দিকে, আজই করোনা ধরা পড়েছে দিল্লির রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা কর্তৃপক্ষের সিইও পদে কর্মরত এক আইএএসের।
ট্রেনে চেন্নাই থেকে আগরতলায় আসা ৫৩ জনের শরীরে আজ করোনা পাওয়া গিয়েছে। অসমে আক্রান্ত ২৫৬৫ জন। সেই রাজ্যে গৃহ-নিভৃতবাসীদের উপরে নজরদারি চালাতে অ্যাপ এনেছে রাজ্য সরকার। তাতে অ্যালার্ট এলেই নিজস্বী পাঠাতে হবে রোগীদের। অসমে এ বছর একাদশ শ্রেণি থেকে শুরু করে স্নাতকোত্তর পর্যন্ত সব স্তরে, সব শাখায় এমনকি ইঞ্জিনিয়ারিং ও মেডিক্যাল কলেজেও দারিদ্রসীমা নির্বিশেষে সবাই বিনামূল্যে ভর্তি হতে পারবে।
আরও পড়ুন: কাশ্মীরে সংঘর্ষে নিহত পাঁচ জঙ্গি
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy