—ফাইল চিত্র।
ভারতীয় দূতাবাসকে না জানিয়ে সৌদি আরবে মুণ্ডচ্ছেদ করে শাস্তি দেওয়া হয়েছে দুই পঞ্জাবিকে। ইতিমধ্যে আর এক ভারতীয় টুইটারে আর্তি জানিয়েছেন, সৌদি থেকে তাঁকে অবিলম্বে দেশে ফেরানো হোক। না হলে আত্মহত্যা করা ছাড়া উপায় থাকবে না।
গত ২৮ ফেব্রুয়ারি মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয় হোশিয়ারপুরের বাসিন্দা সত্যেন্দ্র কুমার এবং লুধিয়ানার হরজিৎ সিংহকে। অভিযোগ, তাঁদের মৃত্যুদণ্ড সম্পর্কে কোনও রকম তথ্য ভারতীয় দূতাবাসকে দেয়নি রিয়াধ। গত ১০ এপ্রিল, বিদেশ মন্ত্রকের ডিরেক্টর প্রকাশ চাঁদ এ বিষয়ে লিখিত জানিয়েছেন। তবে বিষয়টি জানাজানি হয় সত্যেন্দ্রর স্ত্রী সীমা রানি আদালতে গেলে। তিনি কোর্টের কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন, স্বামী কিংবা দ্বিতীয় ব্যক্তির দেহাবশেষ সম্পর্কে কোনও তথ্য ভারতীয় দূতাবাস দিতে পারছে না। সৌদি আরব থেকেও জবাব মেলেনি। এর পরে আদালতের কাছে বিদেশ মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়, সত্যেন্দ্র ও হরজিতের মৃত্যুদণ্ড সম্পর্কে তাদের আগে থেকে কিছু জানায়নি সৌদি প্রশাসন।
একটি খুনের ঘটনায় ওই দুই ভারতীয়কে গ্রেফতার করা হয়েছিল ২০১৫ সালের ৯ ডিসেম্বর। আরিফ ইমামুদ্দিন নামে তৃতীয় এক ভারতীয়কে খুনের অভিযোগ ছিল তাদের বিরুদ্ধে। তিন জনেই (সত্যেন্দ্র, হরজিৎ ও আরিফ) একটি ডাকাতির ঘটনা জড়িত ছিল। অভিযোগ, ডাকাতি করা অর্থ ভাগ করা নিয়ে বাদানুবাদ হয়। তখনই আরিফকে খুন করে বাকি দু’জন। অন্য একটি মাদক মামলায় তাদের ভারতে ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছিল। কিন্তু সেই সময়ে আরিফকে হত্যার ঘটনা সামনে আসে। রিয়াধের জেলে বন্দি করা হয় তাদের। সৌদি আরবের দাবি, জেরার মুখে তারা নিজেদের অপরাধ স্বীকার করে নিয়েছিল। পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী অমরেন্দ্র সিংহ বলেন, ‘‘একটি সভ্য দেশে দিনের পর দিন এ ধরনের ঘটনা ঘটে চলেছে।’’ অমরেন্দ্রের আরও অভিযোগ, মৃত্যুদণ্ড আটকানো তো দূরস্থান, সত্যেন্দ্রের স্ত্রী সীমা রানি আদালতে যাওয়ার আগে পর্যন্ত খবরটি চেপে রেখে দিয়েছিল বিদেশ মন্ত্রক। তিনি জানিয়েছেন, ব্যক্তিগত ভাবে বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলবেন।
ও দিকে আজই একটি টুইট প্রকাশ্যে এসেছে। —‘‘স্যার, একটা কথা বলুন, আপনারা কি আমায় সাহায্য করতে পারবেন, না আত্মহত্যা করতে হবে? গত ১২ মাস ধরে আমি একই আর্জি জানিয়ে আসছি। দূতাবাসের সাহায্য চাইছি। আপনারা যদি আমায় সৌদি থেকে ভারতে নিয়ে যেতে পারেন, খুব উপকার হয়। আমার চার সন্তান।’’ নিজেকে শুধু ‘আলি’ বলে পরিচয় দিয়েছেন ওই ব্যক্তি।
বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ জবাবে বলেন, ‘‘আত্মহত্যার কথা ভাববেন না। আমরা আছি আপনার জন্য। দূতাবাস আপনাকে সাহায্য করবে।’’ রিয়াধের ভারতীয় দূতাবাসের কাছে এ বিষয়ে রিপোর্ট চান তিনি।
দূতাবাসের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই আলির কাছে ভিসা পেজের একটি প্রতিলিপি ও ফোন নম্বর চাওয়া হয়েছিল। তিনি জবাবে জানান, তাঁর কাছে ভিসার কোনও কপি নেই। সৌদি আরবে বসবাসের বিশেষ অনুমতিপত্র ‘ইকামা’ আছে। আলি টুইটারে লিখেছেন, ‘‘২১ মাস ধরে এখানে কাজ করছি। আসা থেকে কোনও ছুটি পাইনি। বাড়িতে খুব সমস্যা চলছে। আমাকে ভারতে নিয়ে যান।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy